এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > তৃণমূলের ব্রিগেডের ফলে রাস্তায় আটকে পড়াদের খাওয়ানোর দায়িত্বও এবার পুলিশের

তৃণমূলের ব্রিগেডের ফলে রাস্তায় আটকে পড়াদের খাওয়ানোর দায়িত্বও এবার পুলিশের

তৃণমূলের ব্রিগেড সমাবেশের যানজট ঠেকানো সহ নিরাপত্তার বিশেষ দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল কোলকাতা পুলিশকে। শনিবার সকাল থেকে যানজটে মহানগর স্তব্ধ হয়ে যাবে বলে আশঙ্কা করা হয়েছিল। সেইমতোই ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল,এজেসি বোস রোড, কুইন্সওয়ে, ক্যাথিড্রাল রোড, লাভার্স লেন সহ একাধিক জাতীয় সড়ক ‘নো এন্ট্রি’ ঘোষণা করা হয়েছিল গতকাল। এরমধ্যে আটকে পড়ে নাস্তানাবুদ হতে হয়েছে বহু ট্রাকচালক এবং খালাসিদের।

শহরের বহু এলাকায় বাস বন্ধ থাকায় গতকাল রাস্তায় রমরমা ছিল অটোচালকদের। সাধারণ মানুষও পথে বেরিয়ে ভালোই ভোগান্তির শিকার হয়েছে। অভিজ্ঞতা হয়েছে দুর্গাপুরবাসীর এক বড় অংশ। সবথেকে নজর দেওয়ার মতো বিষয় হল,এসব রাস্তায় আটকে পড়া মানুষদের খাওয়াদাওয়ার বন্দোবস্ত করেছে পুলিশ।

সকাল ১০ টা নাগাদ দুর্গাপুর স্টেশন চত্বরের বাসস্ট্যান্ডে ছেলে সপ্তম শ্রেণীর ছাত্র বিশ্বনাথকে নিয়ে সোনামুখী যাওয়ার বাসের জন্যে অপেক্ষা করছিলেন মাধবী মণ্ডল। অথচ দুর্গাপুর থেকে সোনামুখীগামী একটি বাসও নজরে আসেনি তাঁর। অবশেষে উপায় না পেয়ে দুর্গাপুরে মসজিদমহল্লায় বাপের বাড়ি যাওয়ার জন্য বেনাচিতির মিনিবাস ধরতে হয়েছিল তাকে।

ব্রিগেড যাওয়ার জন্য প্রশাসন মিনিবাস ভাড়া না নেওয়ায় পথে মিনিবাসের দেখা মিললেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন রুটে মিনিবাসের সংখ্যাও কমতে থাকে। পথে বেরোনো যাত্রীরা অনেকেই অভিযোগে জানিয়েছেন,দ্বিগুন মূল্যের ভাড়া দিয়ে অটোয় বাড়ি ফিরতে হয়েছে তাঁদের। বিধাননগরের কেতকী বসু বলেন,‘‘মুচিপাড়া থেকে অটো ‘রিজার্ভ’ করে বাড়ি ফিরতে হল। অনেক বেশি ভাড়া লাগল।’’

যাত্রীদের পাশাপাশি পন্যবাহী শত শত ট্রাকও আটকে পড়ে শহরের ‘নো এন্ট্রি’র বিভিন্ন জায়গায়। পথে বেরিয়ে চূড়ান্ত বিপাকে পড়েন চালক এবং খালাসিরা। অগত্যা উপায় না পেয়ে রাস্তার ধারে হোটেল,ধাবায় খাবার কিনে খেতে হয় তাদের। এমনকি জলটাও তাঁদের কিনে খেতে হয়েছে। এতে স্বাভাবিকভাবেই মেজাজ বিগড়ে যায় ট্রাকচালকদের। রাম অবতার সিংহ নামের এক চালক অভিযোগের সুর চড়িয়ে বলেন,‘‘একে তো খাবার, পানীয় জলের সমস্যায় ভুগছি। তার উপরে সময়ে পণ্য পৌঁছে দিতে পারব না। কৈফিয়তে কর্তৃপক্ষ সন্তুষ্ট না হলে শাস্তির মুখে পড়তে হবে।’’

 

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

তবে গতকাল পথের শত দুর্ভোগের মধ্যেও পানাগড়ে দাঁড়িয়ে থাকা ট্রাকচালকদের ভোগান্তি ছিল বেশ কম। নো এন্ট্রির বোর্ড দেখে গতকাল জাতীয় সড়কে কাঁকসার বিরুডিহার সার্ভিস রোডে দাঁড়িয়ে পড়ে বহু ট্রাক। এমনই একটা জায়গা যেখানে হোটেল বা ধাবার কোনো ব্যবস্থাই ছিল না। এই অবস্থায় ভরদুপুরে কীভাবে খাবার এবং পানীয় জল পাবেন তা নিয়ে ঘোর দুশ্চিন্তায় পড়ে গিয়েছিলেন কয়েকশো চালক এবং খালাসি। কিন্তু তাঁদের চিন্তার ইতি ঘটালেন কাঁকসা ট্র্যাফিক পুলিশ।

গ্যাস সিলিন্ডার, আভেন, ডেকরেটরের কাছে অন্য সামগ্রী নিয়ে প্রায় পাঁচশো জনের জন্য খিচুড়ি ও চাটনি রান্নার ব্যবস্থা করে ফেললেন ট্রাফিক পুলিশরা। পাশাপাশি লাগিয়ে দেওয়া হল ‘সেফ ড্রাইভ সেভ লাইফ’ ব্যানার। সার্ভিস রোডের উপরেই খাওয়ানোর ব্যবস্থা করা হল তাঁদের। গোটা খাওয়াদাওয়ার পর্বে সামনে দাঁড়িয়ে থেকে তদারকি করলেন পুলিশকর্মীরা। প্রশাসনের এমন আয়োজনে বেজায় সন্তুষ্ট হয়ে গেলেন ট্রাক চালক এবং খালাসিরা। বসিরহাটগামী ট্রাকচালক মান্নান খান বলেন,‘খাবার, জল কিছুই ছিল না। চরম দুশ্চিন্তায় পড়ে গিয়েছিলাম। শেষ পর্যন্ত এমন আয়োজন হবে ভাবিনি!’’

উল্লেখ্য,ব্রিগেডের সমাবেশে যাওয়ার জন্যে শহরের বিভিন্ন রুটের বাস কোলকাতায় চলে আসায় আসানসোলের ট্রাকচালক থেকে শুরু করে নিত্যযাত্রীরা ভারী সমস্যায় পড়েছিল গতকাল। পরিবহনকর্মী সহ সাধারণ মানুষের একটাই অভিযোগ,শহরে বড়সড় বাস একেবারেই চলেনি। সকালের দিকে মিনিবাস দেখা গেলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সেটাও উধাও হয়ে যায়। তবে পথেঘাটে লোক অন্যদিনের থেকে কম ছিল বলেই জানিয়েছেন তাঁরা। ব্রিগেডের দিন রাস্তায় কী সমস্যা হতে পারে তার আঁচ পাওয়া গিয়েছিল আগের দিনই। যারা ১৯ জানুয়ারি শহরের রাস্তায় বেরিয়েছিলেন তাঁদের সকলকেই মোটামুটি ডবল ভাড়া দিয়ে অটো-টটোতে করে বাড়ি ফিরতে হয়েছে।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!