এখন পড়ছেন
হোম > রাজনীতি > তৃণমূল > দুর্নীতিতে তৃণমূলের “একবেলার অন্তর্তদন্ত’! ক্লিনচিট দলীয় নেতাদের, সব দোষ পঞ্চায়েত কর্মীদের!

দুর্নীতিতে তৃণমূলের “একবেলার অন্তর্তদন্ত’! ক্লিনচিট দলীয় নেতাদের, সব দোষ পঞ্চায়েত কর্মীদের!


প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – সম্প্রতি তৃণমূলের হেভিওয়েট মন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় দলের শুদ্ধিকরণ প্রক্রিয়া নিয়ে মুখ খুলেছিলেন‌। যেখানে তিনি বলেছিলেন, শুধুমাত্র নীচুতলার নেতাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া নয়, একদম ওপরতলার রাঘব-বোয়ালদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নিতে হবে। অর্থাৎ দুর্নীতিতে যাতে কেউ ছাড় না পান, তার জন্য সওয়াল করেছিলেন তিনি‌।

আর এই বক্তব্যের পর কিছুটা হলেও অস্বস্তিতে পড়েছে রাজ্যের শাসক দল। তাদের শুদ্ধিকরণ প্রক্রিয়ায় দেখা দিয়েছে বড়সড় প্রশ্ন। সত্যিই কি তাহলে হেভিওয়েট নেতারা দুর্নীতি করেও পার পেয়ে যাচ্ছেন! শুধুমাত্র বিপাকে পড়ছেন নিচুতলার নেতাকর্মীরা! প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছিল রাজনৈতিক মহলে। আর এই পরিস্থিতিতে এবার এক বেলার তদন্ত সেরে বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুরের বেলশুলিয়া পঞ্চায়েতের জনপ্রতিনিধিদের রীতিমত ক্লিনচিট দিল বাঁকুড়া জেলা তৃণমূলের তদন্তকারী দল। যেখানে পঞ্চায়েতের কর্মীদেরই দুর্নীতির জন্য দায়ী করলেন তারা।

আর এই ঘটনায় রীতিমতো চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে বাঁকুড়া জেলাজুড়ে। জানা যায়, গত মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে তৃণমূল পরিচালিত এই পঞ্চায়েতের প্রধান সহ বেশ কয়েকজন সদস্যদের বিরুদ্ধে সরকারি প্রকল্পের সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার বিনিময়ে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে কাটমানি নেওয়ার অভিযোগ ওঠে। যেখানে বিডিও সাহেবের কাছে বেশ কিছু অভিযোগ পত্র জমা পড়ে। কিন্তু এবার তৃণমূল কংগ্রেস যখন শুদ্ধিকরণ প্রক্রিয়ায় হাঁটছে, তখন আশা করা হয়েছিল, এই পঞ্চায়েতের হেভিওয়েট নেতাদের বিরুদ্ধে শাসকদল পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।

কিন্তু তদন্ত করে দলের নেতাদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ গ্রহন করা তো দূর অস্ত, উল্টে পঞ্চায়েত কর্মীদেরকেই দোষারোপ করল তৃণমূল কংগ্রেস। জানা গেছে, এদিন তৃণমূলের তরফে বেলশুলিয়ায় তদন্ত করতে গিয়ে ছিলেন জেলা তৃণমূল সভাপতি শুভাশিস বটব্যাল, জেলা তৃণমূলের সংখ্যালঘু সেলের সভাপতি হবিবুর রহমান এবং জেলা তৃণমূলের নেতা জয়দীপ চট্টোপাধ্যায়। এদিন এই প্রসঙ্গে বাঁকুড়া জেলা তৃণমূলের সভাপতি শুভাশিস বটব্যাল বলেন, “বেলশুলিয়া অঞ্চল তৃণমূল সভাপতির সঙ্গে প্রধানের ভুল-বোঝাবুঝি নিয়ে সমস্যা হয়েছিল। তবে পঞ্চায়েতের 100 দিনের কাজের প্রকল্পে কিছু অনিয়ম আমাদের নজরে এসেছে। সেজন্য দায়ী পঞ্চায়েতের সরকারি কর্মীরা। বিষয়টি আমি জেলা প্রশাসনকে জানাব।”

পাশাপাশি দলীয় তদন্ত শেষে এই রিপোর্ট সরাসরি শুভেন্দু অধিকারীর কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হবে এবং তারপরেই রাজ্য নেতৃত্বের কাছে পৌঁছে যাবে বলে জানিয়েছেন জেলা তৃণমূল সভাপতি। তবে সরকারি কর্মীদের দিকে তৃণমূলের এই তদন্তকারী দল অভিযোগ তুললেও, সরকারি কর্মীরা অবশ্য তা সম্পূর্ণরূপে অস্বীকার করেছেন। তাদের বক্তব্য, তৃণমূল নেতৃত্ব তাদের সঙ্গে কোনো কথা বলেনি। পঞ্চায়েত যেভাবে তাদের কাজ করতে বলে, তারা সেভাবেই সমস্ত কাজ করেন। আর এখানেই একাংশের প্রশ্ন, সত্যিই তো তাই! যেখানে পঞ্চায়েত তৃণমূলের, সেখানে সরকারি কর্মীরা কি করে নিজেদের ইচ্ছে মত কাজ করতে সাহস দেখাবেন? যদি প্রধান, উপপ্রধান না থাকে, তাহলে কিভাবে তারা কাজ করবেন? এক্ষেত্রে শুধুমাত্র সরকারি কর্মীদের দিকে অভিযোগ তুলে তৃণমূল কি তাদের নেতা এবং দলীয় জনপ্রতিনিধিদের বাঁচানোর চেষ্টা করছে না?

ইতিমধ্যেই এই ব্যাপারে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছে বিরোধীরা। এদিন এই প্রসঙ্গে বিষ্ণুপুরের বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁ বলেন, “আগেই বুঝেছিলাম তদন্তের নামে মানুষকে মিথ্যা আশ্বাস দেওয়া হচ্ছে। তৃণমূল আমলে এর থেকে বেশি বিচার মানুষ পাবেন না।” সব মিলিয়ে এক বেলা তদন্ত করে দুর্নীতি এবং অনিয়মের ঘটনায় সরকারি কর্মীদের দিকেই তৃণমূলের তদন্তকারী দল অভিযোগ তোলায় এখন রীতিমত তোলপাড় সৃষ্টি হল রাজ্যে।

আপনার মতামত জানান -

ট্যাগড
Top
error: Content is protected !!