এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > বর্ধমান > উলটপুরাণ রাজ্যে, এলাকাবাসীর ক্ষোভে ঘরছাড়া তৃণমূল কাউন্সিলর, শর্তসাপেক্ষে ঘরে ফেরার নির্দেশ

উলটপুরাণ রাজ্যে, এলাকাবাসীর ক্ষোভে ঘরছাড়া তৃণমূল কাউন্সিলর, শর্তসাপেক্ষে ঘরে ফেরার নির্দেশ

অনেকে বলেন, জনতার যখন সহ্যের বাঁধ ভেঙে যায়, তখন তারা শাসকের বিরুদ্ধেও সোচ্চার হতে পিছপা হয় না। বিশেষজ্ঞদের এই কথা কতটা সত্য তা জানা নেই, তবে দুর্গাপুরে খোদ শাসকদলের কাউন্সিলর এবং তার পরিবারের সদস্যরা যেভাবে সাধারণ মানুষের রোষানলে পড়ে কার্যত এলাকাছাড়া হয়েছেন, তা দেখে অনেকেই বিশেষজ্ঞদের এই বুলি আওড়াতে শুরু করেছেন।

কিন্তু যেখানে সারা রাজ্যে তৃণমূলের এহেন বাড়বাড়ন্ত, সেখানে দুর্গাপুরে কি এমন হল, যার কারণে শাসকদলের কাউন্সিলর এবং তার পরিবারের সদস্যদের এলাকায় ঢুকতে দিচ্ছে না সাধারন মানুষ! জানা গেছে, গত 29 শে এপ্রিল বর্ধমান দুর্গাপুর লোকসভা কেন্দ্রের নির্বাচন চলাকালীন দুর্গাপুর পুরনিগমের 39 নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর শশাঙ্কশেখর মন্ডল তার গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগ করেন।

আর এই নির্বাচন চলাকালীন সেই 39 নম্বর ওয়ার্ডের আশিসনগরে সিপিএমের এক পোলিং এজেন্টকে মারধর ও বাড়ি ভাঙচুরের ঘটনায় এলাকায় তীব্র উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। আর এরপরই সাধারণ মানুষের রোষের শিকার হন স্থানীয় কাউন্সিলর শশাঙ্কশেখর মন্ডল এবং তার পরিবারের লোকেরা। অভিযোগ, কাউন্সিলরের বাড়ি এবং স্থানীয় শাসক দলের পার্টি অফিসেও ব্যাপক ভাঙচুর চালানো হয়। আর এরপর থেকেই কার্যত এলাকাছাড়া সেই শশাঙ্কশেখর মন্ডল এবং তার পরিবার।

দলের তরফে বহুবার সেই কাউন্সিলর এবং তার পরিবারকে এলাকায় ফেরানোর চেষ্টা করলেও এলাকাবাসীদের পক্ষ থেকে সেই ব্যাপারে রাজি না হওয়ায় তা সম্ভব হয়নি। কোনভাবেই কি তারা কাউন্সিলর এবং তার পরিবারকে এলাকায় ঢুকতে দেবেন না? এদিন এই প্রসঙ্গে আশিসনগরের বাসিন্দারা দাবি করেন, “কাউন্সিলার এবং তার দাদা গ্রামবাসীদের উপর যে অত্যাচার করেছে তা বলার নয়। আমরা পুলিশ প্রশাসনের অনুরোধে কাউন্সিলর এবং তার বৃদ্ধা মাকে গ্রামে ঢোকার অনুমতি দিয়েছি। কিন্তু কাউন্সিলারের দাদাদের ঢুকতে দেওয়া হবে না।”

এদিকে গ্রামবাসীর তরফে শাসকদলের কাউন্সিলার এবং তার পরিবারের সদস্যরা জনরোষের শিকার হওয়ায় এই ব্যাপারে তৃণমূলের বিরুদ্ধে মুখ খুলেছে বিজেপি। গেরুয়া শিবিরের দাবি, সাধারণ মানুষের ওপর অত্যাচার, গণতন্ত্রের কণ্ঠরোধ করার ফল পেতে শুরু করেছে শাসক দল। আর তাইতো এবার কাউন্সিলার আর তার পরিবার জনরোষের শিকার হল। তবে বিজেপির এহেন দাবি মানতে নারাজ ঘাসফুল শিবির।

তবে শুধু দুর্গাপুরের আশিসনগরেই নয়, এদিন দুর্গাপুরের কাঁকসার মলানদিঘীতেও তৃণমূল কংগ্রেসের পঞ্চায়েত প্রধান পীযূষ মুখোপাধ্যায় জনরোষের শিকার হয়েছেন। গ্রামবাসীদের অভিযোগ, কিছুদিন আগেই শাসকদলের এক পঞ্চায়েত সদস্য এলাকায় তাণ্ডব চালিয়েছে। যার পেছনে প্রধান মদতদাতা হিসেবে ছিলেন খোদ পঞ্চায়েত প্রধান।

এদিকে সাধারণ মানুষের রোষের শিকার হয়ে ইতিমধ্যেই এলাকাছাড়া হয়েছেন স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য এবং গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান। আর একের পর এক শাসকদলের কখনও কাউন্সিলার, আবার কখনওবা গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান এইভাবে জনরোষের শিকার হওয়ায় তীব্র অস্বস্তিতে পড়েছে তৃণমূল।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

বিরোধীদের দাবি যখন মানুষের দেওয়ালে পিঠ ঠেকে যায় তখন তারা ঘুরে দাঁড়াতে বাধ্য হয়। আর ভয় পায় না। আর শাসকদলের অত্যাচারে সাধারণ মানুষের ঠিক এমনই অবস্থা হয়েছে। ফলে তৃণমূলের পতনের আর দেরি নেই।

এদিন এই প্রসঙ্গে পশ্চিম বর্ধমান জেলা তৃণমূল সভাপতি বলেন, “বিজেপি ও সিপিএমের উস্কানির ফলেই এই ধরনের ঘটনা ঘটছে। আমরা পুলিশকে দলের নেতাদের ঘরে ফিরিয়ে আনার দাবি করেছি।”

তবে সমালোচক মহলের একাংশ অবশ্য বলছেন, সব ব্যাপারে বিজেপি এবং সিপিএমের ঘাড়ে দোষ না দিয়ে এবার অন্তত নিজেদের নিচুতলার পদাধিকারীদের উপর নজর দেওয়া উচিত শাসকদলের।মানুষই সব, তারা যদি মুখ ফিরিয়ে নেয় তবে অঘটন ঘটে পারে। কেন, ঠিক কোন কারণ থেকে সাধারণ মানুষ শাসকদলের জনপ্রতিনিধিদের ওপর নিজেদের ক্ষোভ উগরে দিচ্ছেন, এলাকাছাড়া করছেন, তার দিকে যদি এখনই নজর না দেয় তৃনমূল, তাহলে অদূর ভবিষ্যতে তা যে ঘাসফুল শিবিরের পক্ষে খুব একটা সুখকর হবে না, সেই ব্যাপারে আশঙ্কা করতে শুরু করে দিয়েছে বিশেষজ্ঞ মহলের একাংশ।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!