এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > তৃণমূলের বিরুদ্ধে “কাটমানি” না পেয়ে আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে কারখানায় ঢুকে ভাঙচুর চালানোর অভিযোগ তুললেন দলীয় নেতা

তৃণমূলের বিরুদ্ধে “কাটমানি” না পেয়ে আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে কারখানায় ঢুকে ভাঙচুর চালানোর অভিযোগ তুললেন দলীয় নেতা


প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – রন্ধ্রে রন্ধ্রে তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দল। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে শুরু করে পঞ্চায়েত, জেলাপরিষদ থেকে শুরু করে পৌরসভা, শাসকদলের দুই গোষ্ঠীর লড়াই এখন স্বাভাবিক ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে কারখানাতেও যে তৃণমূলের তাণ্ডব এবং তাকে কেন্দ্র করে গোষ্ঠী কোন্দল তৈরি হবে তা অনেকেই আঁচ করতে পারেননি। কিন্তু এবার এই অসমাপ্ত কাজটিও সম্ভব করে ফেলল ঘাসফুল শিবির। জানা গেছে, বৃহস্পতিবার সকালে দক্ষিণ 24 পরগনা রামনগরের নুরপুরে অ্যালকোহল তৈরীর কারখানায় তৃণমূলের একশ্রেণীর নেতা ব্যাপক তাণ্ডব চালান।

বস্তুত, প্রায় 40 বছরের পুরনো এই কারখানায় সাড়ে 300 জন শ্রমিক কাজ করেন। এখানে কার্বন-ডাই-অক্সাইড, পশুর খাবার ছাড়াও অ্যালকোহল তৈরি হয়। বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে আটটার সময় প্রায় একশোর বেশি দুষ্কৃতী লাঠি এবং আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে সেই কারখানার গেট ভেঙে ভেতরে ঢোকে বলে অভিযোগ। আর তারপরেই কারখানার কম্পিউটার, ল্যাপটপ, সিসিটিভি ভাঙচুর করে দেওয়া হয়। চাঞ্চল্য আরও বেশি করে তৈরি হয় যখন কারখানার তৃণমূলের শ্রমিক ইউনিয়নের নেতারা অভিযোগ করেন যে, কাটমানি না পেয়ে তাদের দলেরই এক নেতার নেতৃত্বে এই হামলা চালানো হয়েছে।

এদিন এই প্রসঙ্গে কারখানার তৃণমূলের শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি আমরেজ আলী শেখ বলেন, “আমাদের দলের কিছু নেতা কারখানা থেকে কাটমানি পাচ্ছেন না বলেই দুষ্কৃতী পাঠিয়ে হামলা চালিয়েছেন যুব তৃণমূল নেতা। মেহেবুবা গায়েনের নেতৃত্বে এই হামলা ঘটেছে। হামলার সময় পুলিশ চুপ করে দাঁড়িয়ে ছিল।” তবে এই ঘটনায় অবশ্য তার বিরুদ্ধে ওঠা সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন মেহবুবা গায়েন। তিনি বলেন, “এই ঘটনায় আমি কোনোভাবেই যুক্ত নই। এটা শ্রমিকদের ব্যাপার। তারাই অবস্থান-বিক্ষোভ করেছেন।”

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

এদিকে পরিস্থিতি যে ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে এবং যেভাবে তৃণমূলের শ্রমিক ইউনিয়নের এক নেতা দলের আরেক নেতার বিরুদ্ধে কাটমানি না পেয়ে তান্ডব চালানোর অভিযোগ করলেন, তাতে নিঃসন্দেহে অস্বস্তিতে পড়েছে শাসক দল। এদিন এই প্রসঙ্গে তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠনের নেত্রী দোলা সেন বলেন, “আমার সঙ্গে শ্রমিক সংগঠন ও কারখানা কর্তৃপক্ষের কথা হয়েছে। ওদের কোনো সমস্যা নয়। কথা বলে মনে হয়েছে, আইন-শৃঙ্খলা জনিত সমস্যা। জেলা প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলতে বলেছি।” তবে দোলাদেবী পরিস্থিতিকে বিতর্কে ধারেপাশে যেতে না দেওয়ার জন্য একথা বললেও, সকলে এক প্রকার নিশ্চিত যে, এই ঘটনা তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ফসল।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিরোধীরা এমনিতেই তৃণমূলের বিরুদ্ধে দুর্নীতি এবং কাটমানির অভিযোগ তুলছে। আর এই পরিস্থিতিতে কারখানায় হামলা চালিয়ে যেভাবে তৃণমূলের এক নেতার বিরুদ্ধে কাটমানি না পেয়ে হামলা চালানো হল বলে অভিযোগ করলেন আর একজন নেতা, তাতে বিরোধীরা তাদের হাতে তৃণমূল বিরোধীতার নতুন অস্ত্র পেয়ে গেল বলে দাবি একাংশের। যা দেখে অনেকেই বলছেন, তৃণমূলকে ডুবানোর জন্য বিরোধী দল নয় বরঞ্চ তৃণমূল কংগ্রেসই যথেষ্ট।

কেননা যেভাবে দুর্নীতির ঘটনায় তাদের নেতারাই অন্য নেতার বিরুদ্ধে সরব হচ্ছে, তাতে মানুষের চোখে তৃণমূলের ভাবমূর্তি ক্রমশ নিচের দিকে নামতে শুরু করেছে। নেতাদের মুখে লাগাম না লাগিয়ে যদি এভাবে দ্বন্দ্ব চলতে থাকে এবং তা যদি প্রতিনিয়ত প্রকাশ্যে আসে, তাহলে আগামী দিন যে তৃণমূলের পক্ষে খুব একটা সুখকর হবে না, সেই ব্যাপারে নিশ্চিত রাজনৈতিক মহল। এখন কারখানার ভেতরেও তৃণমূলের এই গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব শাসক দলকে কতটা চাপে রাখে, তার দিকে নজর থাকবে সকলের।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!