আবার ঘরওয়াপসি করে উত্তরবঙ্গে বিজেপিকে বড়সড় ধাক্কা দিল তৃণমূল – জানুন বিস্তারিত উত্তরবঙ্গ রাজ্য December 3, 2019 লোকসভা নির্বাচনের পরবর্তী সময়ে রাজ্যজুড়ে গেরুয়া শিবিরের ব্যাপক উত্থান লক্ষ্য করা গিয়েছিল। কোচবিহার একসময় তৃণমূল কংগ্রেসকে ব্যাপক সমর্থন করলেও লোকসভা নির্বাচনে এবার কোচবিহারে ফুটে গিয়েছিল পদ্মফুল। যার ফলে সেখানে রাজনৈতিক অবস্থার ব্যাপক পরিবর্তন ঘটতে শুরু করে। অনেক পঞ্চায়েত তৃণমূল কংগ্রেসের দখলে থাকলেও, গেরুয়া শিবির জয়লাভ করায় সেই পঞ্চায়েতের সদস্যরা যোগদান করে ভারতীয় জনতা পার্টিতে। তবে লোকসভা নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশের 6 মাস পেরোতে না পেরোতেই কোচবিহারের রাজনৈতিক অবস্থার ফের পরিবর্তন ঘটতে শুরু করল। এবার মাথাভাঙ্গা 2 ব্লকের দুটি গ্রাম পঞ্চায়েত পুনর্দখল করল তৃণমূল কংগ্রেস। বস্তুত, মাথাভাঙ্গা 2 ব্লকের বড় শৌলমারী গ্রাম পঞ্চায়েতে বিগত পঞ্চায়েত নির্বাচনে 19 টি আসনের মধ্যে তৃণমূল দশটি এবং বিজেপি কয়টি আসন পায় যার ফলে সেখানে বোর্ড গঠন করে তৃণমূল কংগ্রেস। অন্যদিকে ফুলবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের 19 টি আসনের মধ্যে 19 টি আসনই দখল করে শাসক দল। যার ফলে সেখানেও অনায়াসে বোর্ড যায় তৃণমূলের হাতে। তবে লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি কোচবিহারের জয়লাভ করায় এই দুই পঞ্চায়েতের অনেক সদস্যই বিজেপিতে নাম লেখান। তবে অবশেষে বিজেপিতে যাওয়া সেই পঞ্চায়েতের সদস্যরা এবার ফের তাদের পুরনো দল তৃণমূল কংগ্রেসে নাম লেখালেন। যা রীতিমতো বিজেপির কাছে চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে বলেই মত রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের। সূত্রের খবর, এদিন ফুলবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের এবং বড় শৌলমারী গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্যরা তৃণমূলে নাম লেখান। দুটি গ্রাম পঞ্চায়েতের দলীয় কার্যালয়ে সেই সদস্যদের নিয়ে এসে তাদের তৃণমূলে যোগদান করান জেলা তৃণমূলের সভাপতি তথা মন্ত্রী বিনয়কৃষ্ণ বর্মন। এদিকে ঘরের লোকেরা ফের ঘরে ফিরে আসায় এবং বোর্ড নিজেদের দখলে আশায় রীতিমতো উজ্জীবিত হতে দেখা গেছে তৃণমূলের কর্মী সমর্থকদের। আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - এদিন এই প্রসঙ্গে জেলা তৃণমূলের সভাপতি তথা মন্ত্রী বিনয়কৃষ্ণ বর্মন বলেন, “বিজেপি খুনের হুমকি দিয়ে ভয় দেখিয়ে লোকসভা নির্বাচনের পর আমাদের সদস্যদের তাদের দলে নিয়ে গিয়েছিল। বিজেপি যে উন্নয়নের বিরোধী সেটা এখন পঞ্চায়েত সদস্যরা বুঝতে পারছেন। এদিন বড় শৌলমারী গ্রাম পঞ্চায়েতের 10 জন সদস্য আমাদের দলে এসেছেন। তাদের সঙ্গে নিয়ে আমরা গ্রাম পঞ্চায়েতের অফিসে গিয়েছি।” তিনি আরও বলেন, “এলাকার মানুষের উন্নয়নের কাজ করাই আমাদের প্রধান লক্ষ্য। অপরদিকে ফুলবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান সহ 11 জন আমাদের সঙ্গে এসেছেন। বাকিরাও আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন। রাজ্যের তিনটি উপনির্বাচনে বিজেপির ঔদ্ধত্যের জবাব মানুষ দিয়েছে। আগামীতেও বিজেপিকে মানুষ এভাবেই জবাব দেবে।” তবে এই দুই পঞ্চায়েতের ক্ষমতা তৃণমূলের দখলে চলে যাওয়ায় তারা কি ব্যাকফুটে পড়ল না? এদিন এই প্রসঙ্গে বিজেপির মাথাভাঙ্গা বিধানসভার পর্যবেক্ষক সুশীল বর্মন বলেন, “আমরা তৃণমূলের ছাপ্পা ভোটে জয়ী সদস্যদের দলে নিতে আগ্রহী ছিলাম না। ওরা জনরোষের হাত থেকে বাঁচতে আমাদের শরণাপন্ন হয়েছিল। ওরা বারবার যোগাযোগ করায় ওদের দলে নিয়েছিলাম। আমরা জানতে পেরেছি তিনটি উপ-নির্বাচনের ফল প্রকাশের পরেরদিন প্রধানকে তুলে নিয়ে গিয়েছিল তৃণমূলের লোকজন। ফুলবাড়িতে এখনও আমাদের আটজন পঞ্চায়েত সদস্য রয়েছে। মানুষ সমস্ত কিছু দেখছে। তারাই এর জবাব দেবে।” তবে দুই দল মানুষের উপর ভরসা রাখলেও, লোকসভা নির্বাচনে যেভাবে বিজেপির উত্থান ঘটেছিল, দিনকে দিন সেই বিজেপির উত্থান ক্রমশ কমে আসায় রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা অন্য সমীকরণের ইঙ্গিত পাচ্ছেন। তাহলে কি এবার কোচবিহারের মত জেলাতেও ব্যাকফুটে চলে যাচ্ছে বিজেপি! আর তার ফলেই কি উপনির্বাচনের ফল প্রকাশের পরে পরেই বিজেপির দখলে যাওয়া পঞ্চায়েত ফের তৃণমূলের দখলে চলে এল! প্রশ্নটা থেকেই যাচ্ছে। আপনার মতামত জানান -