এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > এবার কি বিজেপিগামী এই হেভিওয়েট তৃণমূল মন্ত্রী, অতীত অভিজ্ঞতা ঘিরে বাড়ছে জল্পনা!

এবার কি বিজেপিগামী এই হেভিওয়েট তৃণমূল মন্ত্রী, অতীত অভিজ্ঞতা ঘিরে বাড়ছে জল্পনা!


তৃণমূলের অন্দরে গোষ্ঠীকোন্দল নতুন নয়, কিন্তু সম্প্রতি তা বেড়েছে বই কমেনি, বার বার শীর্ষ নেতৃর্ত্বের কড়া হুঁশিয়ারি স্বত্তেও কাজ হয়নি। আর এবার অস্বতি বাড়িয়ে তৃণমূলের নেতা মন্ত্রী মেয়র বিধায়ক একে অপরের বিরুদ্ধে মাঠে নেমে কাদা ছোড়াছুড়ি করছেন। কিন্তু এর ফলে তৃণমূলের ভাবমূর্তি যে ধাক্কা খাচ্ছে তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। ২০২১ লক্ষ্য তাই দলের অন্দরের এই টালমাটাল পরিস্থিতি সামাল দিতে এবার মাঠে নেমেছেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্বয়ং। দিয়েছেন কড়া বার্তা আর তা ঘিরেই সিঁদুরে মেঘ দেখেছে শাসকদলের একাংশ।কড়া শাসনে অতীতে ঘরভাঙার চিত্রও ফুটে উঠছে তৃণমূলের অন্দরে।

প্রসঙ্গত,গত লোকসভা নির্বাচনের পর বালুরঘাট লোকসভা কেন্দ্রে পরাজিত হন তৃণমূল প্রার্থী অর্পিতা ঘোষ। যাতে ভীষণ ভেঙে পড়েন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ফলাফল পর্যালোচনা বৈঠকে নাম না করে হলেও তৎকালীন জেলা সভাপতি বিপ্লব মিত্রের বিরুদ্ধে তাকে হারিয়ে দেওয়ার অভিযোগ তোলেন অর্পিতা দেবী। আর এর পরেই কালীঘাটের বাসভবন থেকে বিপ্লব মিত্রের উদ্দেশ্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রশ্ন করেন, “আপনি কি তৃণমূলে থেকে রাজনীতি করতে চান, নাকি বিজেপিতে যেতে চান! এবার আপনি সেটা স্থির করুন।”

আর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দীর্ঘদিনের সহকর্মী বিপ্লব মিত্রকে একথা বলার কিছুদিনের মধ্যেই বিপ্লব মিত্র সদলবলে যোগদান ভারতীয় জনতা পার্টিতে। তারপর গঙ্গা-যমুনা দিয়ে অনেক জল বয়ে গেছে। বর্তমানে এখনও বিজেপির হেভিওয়েট নেতা হিসেবে পরিচিত বিপ্লব মিত্র। কিন্তু তেমন ভাবে বিজেপিতে গিয়েও তিনি কোনো লাভ করতে পারেননি। তবে এক সময় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিপ্লব মিত্রের উদ্দেশ্যে এই কথা বলে তার সাথে সম্পর্ক চুকিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। আর এবার রাজ্যের আরেক হেভিওয়েট মন্ত্রী সাধন পান্ডেকেও কি সেই একই বার্তা দিতে চাইলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়?রাজনৈতিক মহলে এবার এই জল্পনা চরমে উঠতে শুরু করেছে।

কিন্তু হঠাৎ এই জল্পনার সূত্রপাত কেন? জানা গেছে, সম্প্রতি ভয়াবহ দুর্যোগের পর কলকাতার নানা ওয়ার্ডে পরিষেবা বিপর্যস্ত হয়ে গিয়েছিল। আর এই পরেই কলকাতা পৌরসভার প্রাক্তন মেয়র তথা বর্তমান প্রশাসক রাজ্যের পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে দেখা যায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্ত্রিসভার সদস্য সাধন পান্ডেকে। আর দলে থেকে নিজের দলের সহকর্মীর বিরুদ্ধে সাধন পান্ডে এই ধরনের মন্তব্য করায় তাকে শো – কজ করে তৃণমূল কংগ্রেস।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

শুধু তাই নয়, সম্প্রতি দলীয় বৈঠকে এই ব্যাপারে নাম না করে সেই সাধন পান্ডেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বার্তা দেন বলে দাবি করেন একাংশ। জানা যায়, সম্প্রতি জেলা নেতাদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে বৈঠকের সময় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কলকাতার বেশ কিছু নেতার উদ্দেশ্যে বলেন, “কলকাতার নেতাদের বলছি, তারা এদিক ওদিক মুখ খুলছেন। তারা যদি চান, তাহলে দল থেকে বেরিয়ে যেতে পারেন।” আর এটাতেই কার্যত স্পষ্ট হয়ে যায় যে, লোকসভা ভোটের পর অর্পিতা ঘোষের পরাজয়ের পর বিপ্লব মিত্রকে তার অবস্থান ঠিক করার পরামর্শ দিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বিপ্লব মিত্রকে বার্তা দিয়ে বুঝিয়ে দিয়েছিলেন যে, বিপ্লববাবু চলে গেলেও তার কিছু যায় আসে না।

ঠিক একইভাবে বর্তমান পরিস্থিতিতে যখন দুর্যোগের পরবর্তীতে সাধন পান্ডে পরিষেবা বিপর্যস্ত হওয়া নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ ফিরহাদ হাকিমকে কটাক্ষ করলেন, তখন সেই সাধন পান্ডেকেও নাম না করে বার্তা দিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বুঝিয়ে দিলেন যে, যে যেখানে খুশি যেতে পারেন। তবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একথা বললেও, যদি সত্যিই সাধন পান্ডে এবার তার রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়ে কোনোরকম সিদ্ধান্ত নেন, তাহলে তৃণমূলের ক্ষেত্রে তা অত্যন্ত চাপের হতে পারে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

কেননা বর্তমান সময়ে বিজেপি তৃণমূলের হেভিওয়েট নেতা, মন্ত্রীদের নিজের দিকে টানতে চাইছে। তৃণমূলকে ভাঙতে একধাপ এগিয়ে তৃণমূল থেকে আগতদের বড়সড় পদ দিয়েছে বিজেপি।সেদিক থেকে সাধন পান্ডের মত রাজ্যের মন্ত্রী যদি আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের আগে বিজেপিতে যোগদান করেন, তাহলে গেরুয়া শিবির অনেকটাই উজ্জীবিত হবে। বা তাঁকে দলে নিতে বড়সড় পদ দেওয়ার কথাও বলতে পারে বিজেপি।

পাশাপাশি দীর্ঘদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে একসাথে রাজনীতি করা সাধন পাণ্ডে অত্যন্ত প্রভাবশালী বলেই পরিচিত। ফলে তিনি আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের আগে তৃণমূল কংগ্রেস ছেড়ে যদি বিজেপিতে নাম লেখান, তাহলে তৃণমূলের অস্বস্তি অনেকটা বাড়িয়ে দিতে সক্ষম হবেন রাজ্যের বর্তমান ক্রেতা সুরক্ষা মন্ত্রী বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। তবে রাজনীতির জল সব সময় সোজা পথে গড়ায় না। তাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সাধন পান্ডেকে নাম না করে বার্তা দিলেও, এখন সাধনবাবু তার রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়ে কি সিদ্ধান্ত নেন, কোন দিকে এগোয় পরিস্থিতি, সেদিকেই তাকিয়ে রাজনৈতিক মহল।যদিও এই নিয়ে এখনো মুখ খোলেননি সাধনবাবু।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!