প্রবল গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব তৃণমূলের উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে, জোর চাঞ্চল্য কলকাতা পুরুলিয়া-ঝাড়গ্রাম-বাঁকুড়া রাজ্য August 5, 2019 একেই লোকসভা ভোটে দল খুব একটা ভালো ফল করতে পারেনি। তার ওপর এবার গোদের ওপর বিষফোঁড়া হিসেবে সেই পুরুলিয়া জেলা তৃণমূলের প্রথম কোর কমিটির বৈঠকে দলীয় নেতাদের সঙ্গে বিধায়কদের বিবাদ প্রকাশ্যে চলে এল। সূত্রের খবর, রবিবার পুরুলিয়া জেলা তৃণমূলের কার্যালয় সীতারাম মাহাতো ভবনে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। যেখানে উপস্থিত ছিলেন, পুরুলিয়া জেলা তৃণমূলের পর্যবেক্ষক তথা রাজ্যের মন্ত্রী মলয় ঘটক। আর এই কোর কমিটির বৈঠকে আট আমন্ত্রিত সদস্যদের মধ্যে সাত জন সদস্য যেমন গরহাজির ছিলেন, ঠিক তেমনই বৈঠকে উপস্থিত হওয়া নেতারা শুধু যে আর বিধায়ক এবং জেলা সভাপতি নির্ভর দল মানবেন না, তাও দলীয় পর্যবেক্ষককে বুঝিয়ে দেন। বস্তুত, গত 16 জুলাই পুরুলিয়া জেলা তৃণমূলের পক্ষ থেকে একটি কোর কমিটি ঘোষণা করা হয়। আর সেখানেই পুরুলিয়া জেলার চার গুরুত্বপূর্ণ নেতাকে সেই কোর কমিটির আমন্ত্রিত সদস্য হিসেবে রাখা হলে, পরবর্তীতে যারা এই কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত হননি তাদেরকে নিয়ে আসা হবে বলে জানিয়ে দেন জেলা তৃণমূলের পর্যবেক্ষক মলয় ঘটক। তবে এরপর বহু সময় চলে গেলেও বাকি নেতাদের সেই কমিটিতে নিয়ে আসা হয়নি বলে অভিযোগ ওঠে। আর এরপরই সেই কোর কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হলে সেই কমিটির চার আমন্ত্রিত সদস্য বৈঠক বয়কট করেন। যাদের মধ্যে ছিলেন রথীন্দ্রনাথ মাহাতো, জয় বন্দ্যোপাধ্যায়, নবেন্দু মাহালি এবং গৌতম রায়। এছাড়াও আরও তিনজন আমন্ত্রিত সদস্য, যার মধ্যে রঘুনাথপুরের পুরপ্রধান ভবেশ চট্টোপাধ্যায়, ঝালদার পুরপ্রধান প্রদীপ কর্মকার এবং প্রাক্তন জেলা সম্পাদক দেবজ্যোতি প্রসাদ সিং দেও এদিনের বৈঠকে অনুপস্থিত ছিলেন। তবে অসুস্থতার জন্য রঘুনাথপুর এবং ঝালদার পৌরপ্রধান উপস্থিত হতে পারিনি বলে জানা গেছে। কিন্তু কেন তারা বৈঠকে অনুপস্থিত হলেন! আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - তিনি প্রসঙ্গে দলের প্রাক্তন জেলা সম্পাদক গৌতম রায় বলেন, “আমি এই জেলায় তৃণমূলের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য। অথচ আমাকে কোর কমিটিতে আমন্ত্রিত সদস্য হিসেবে রাখা হয়েছে। এতদিন যারা দলের পরিচালনায় প্রথম সারিতে ছিলেন, ভোটে তাদের ভরাডুবি হওয়ার পরও তারা কমিটিতে রয়েছেন। তাই আমন্ত্রিত সদস্য হিসেবে আমি আমন্ত্রণ পত্র গ্রহণ করতে পারিনি। চরম অপমানিত হয়েই বৈঠক বয়কট করেছি।” একই কথা শোনা গেছে দলের প্রাক্তন জেলা সহ সভাপতি তথা পুরুলিয়া জেলা পরিষদের কো মেন্টর জয় বন্দ্যোপাধ্যায়ের গলাতেও। এদিন তিনি বলেন, “যে বিধায়করা হেরে গেলেন, তারাই কোর কমিটিতে ঠাঁই পেলেন। দলের এই সিদ্ধান্ত মেনে নিতে পারিনি। তাই বৈঠক বয়কট করেছি।” অন্যদিকে তারা জেলা সভাপতিকে যা নিয়েই এই বৈঠকে যাননি। তবে দলের সাথে সব সময় তারা আছেন বলে চালিয়ে যান রথীন্দ্রনাথ মাহাতো এবং নবেন্দু মাহালি।এদিকে জেলা পর্যবেক্ষকের উপস্থিতিতে কোর কমিটির এই বৈঠকে দলের নেতাদের অনুপস্থিতি নিয়ে এদিন সেই মলয় ঘটককে ফোন করলেও তার কাছ থেকে কোনো উত্তর পাওয়া যায়নি। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, লোকসভা নির্বাচনে দলের ভরাডুবির পর একতা তো দূর অস্ত, এখন তৃণমূলের এক নেতা অপর নেতার ভূমিকা নিয়েই প্রশ্ন তুলতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। আর তারই পুনরাবৃত্তি দেখা গেল পুরুলিয়া জেলায় শাসকদলের বৈঠকে। আপনার মতামত জানান -