এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > পরিবর্তনের মাটিতে তৃণমূলের দ্বন্দ্ব চরমে, রবি বনাম বেচার দ্বন্দ্বে উত্তপ্ত সিঙ্গুর!

পরিবর্তনের মাটিতে তৃণমূলের দ্বন্দ্ব চরমে, রবি বনাম বেচার দ্বন্দ্বে উত্তপ্ত সিঙ্গুর!

 

বিগত বাম সরকারকে সরিয়ে রাজ্যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ক্ষমতায় আসার পেছনে সিঙ্গুর আন্দোলন অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা বহন করে। সিঙ্গুরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই আন্দোলনের সময় সেখানকার মাস্টারমশাই রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য এবং তারই ছাত্র বেচারাম মান্নার ভূমিকা ছিল অনস্বীকার্য। পরবর্তীতে 2011 সালে তৃণমূল সরকার ক্ষমতায় আসার পর এই দুজনেই দলের বিধায়ক হয়েছিলেন। কেউ কেউ মন্ত্রীও ছিলেন।

কিন্তু যতদিন গিয়েছে ততই মাস্টারমশাই এবং ছাত্রের মধ্যে দূরত্ব বাড়তে শুরু করেছে। বহুবার তৃণমূল নেতৃত্বের পক্ষ থেকে বেচারাম মান্না এবং রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্যের সেই দ্বন্দ্ব মেটানোর চেষ্টা করা হলেও, কোনো লাভ হয়নি। আর এবার নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের বিরুদ্ধে যখন দলকে ঐক্যবদ্ধ করার কথা বলেছে তৃণমূল নেতৃত্ব, ঠিক তখনই সিঙ্গুর দেখল পৃথক পৃথক মিছিল। বস্তুত, শুক্রবার বেচারাম মান্না কিসান ক্ষেতমজুর তৃণমূল কংগ্রেসের ব্যানারে সিঙ্গুরে একটি মিছিলের ডাক দেন।

মূলত, রতনপুর থেকে তারকেশ্বর পর্যন্ত এই মিছিল হওয়ার কথা ছিল। আর সেই মিছিলে উপস্থিত ছিলেন বেচারাম মান্না, দলের জেলা সভাপতি দিলীপ যাদব, প্রাক্তন সভাপতি তথা মন্ত্রী তপন দাশগুপ্ত, অসীমা পাত্র সহ অন্যান্যরা তবে বেচারাম মান্না যখন এই মিছিল করছেন, ঠিক তখনই সিঙ্গুরের বেড়াবেড়ি থেকে অন্য একটি মিছিল করতে দেখা যায় রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্যকে। আর মাস্টারমশাই এবং ছাত্র তৃণমূলের দুই নেতা হলেও, কেন তারা বিজেপির বিরুদ্ধে এই ইস্যুতে পৃথক পৃথক মিছিল করলেন! তা নিয়ে ইতিমধ্যেই উঠতে শুরু করে প্রশ্ন।

একাংশ বলছেন, বেচারাম মান্না এবং রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য দুজনে তৃণমূলের নেতা হলেও এবং বিজেপির বিরুদ্ধে তারা মিছিল করলেও, তাদের মূল লড়াই ছিল একে অপরের বিরুদ্ধে। আর তাইতো তারা কার মিছিলে বেশি জনসমাগম হবে! তা নিয়ে রীতিমতো একে অপরের বিরুদ্ধে নীরবে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছেন।

আর দলের এই দুই নেতার দ্বন্দ্ব যে তৃণমূলকে ভবিষ্যতে চরম পরিমাণে ভোগাতে পারে, সেই ব্যাপারে এখন আশঙ্কা করতে শুরু করেছে জেলা থেকে রাজ্য নেতৃত্ব। জানা গেছে, এদিন পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছে যায় যে, বেচারাম মান্না এবং রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্যকে এক করতে দুজনের কর্মসূচিতেই উপস্থিত হতে দেখা যায় বিশেষ আমন্ত্রিত নেতা তথা রাজ্যের মন্ত্রী পূর্ণেন্দু বসুকে।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

এদিন এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “আমি বেরাবেরির অনুষ্ঠানে গিয়েছিলাম সেখানকার নেতৃত্ব ও উপস্থিত মানুষদের ক্ষেতমজুরের অনুষ্ঠানে আসার কথা বলতে। ওরা আসবেন বলেছিলেন।” কিন্তু কেন এভাবে তারা পৃথক পৃথক কর্মসূচি করলেন! এদিন এই প্রসঙ্গে রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্যের ঘনিষ্ঠ তৃণমূল নেতা মহাদেব দাস বলেন, “বেরাবেরি সিঙ্গুর আন্দোলনের পটভূমি। সেখানে মিছিল করার জন্য জনতার দাবি ছিল। তাই ওখানে মিছিল করা হয়েছে। আমরা ক্ষেতমজুরের অনুষ্ঠানে যাওয়ার জন্য কাউকে বাধা দিইনি। উল্টে দলের কথা ভেবে ক্ষেতমজুরের মিছিলে যোগ দিয়েছিলাম।”

অন্যদিকে এই ব্যাপারে ক্ষেতমজুরের মিছিলের উদ্যোক্তা বেচারাম মান্না বলেন, “বেড়াবাড়িতে অনুষ্ঠান করার থাকলে অন্য দিনও করা যেত। যাইহোক, হাজার মানুষের সমাবেশ আমরা করেছি। সামান্য কয়েকজন লোক দলকে সমস্যায় ফেলছে।” এদিকে তৃণমূলের দুই হেভিওয়েট নেতা দলকে যে চরম অস্বস্তিতে ফেলেছে, তা শোনা গিয়েছে জেলা তৃণমূল সভাপতি দিলীপ যাদবের গলাতেও।

এদিন তিনি বলেন, “আমি এটুকুই বলব, দুর্ভাগ্যজনক।” তবে দলের রাজ্য থেকে জেলা নেতৃত্ব বারবার কড়া বার্তা দিলেও যেভাবে সিঙ্গুরের দুই তৃণমূল নেতা নিজেদের মধ্যে দ্বন্দ্ব জিইয়ে রাখছেন, তাতে সিঙ্গুর যে তৃণমূলকে এবার বেকায়দায় ফেলতে পারে, সেই ব্যাপারে নিশ্চিত বিশেষজ্ঞরা।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!