এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > শাসকদলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বেই কি সাত বছরের শিশুকে নৃশংসভাবে খুন? প্রশ্ন তুলেছেন মৃতের বাবা

শাসকদলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বেই কি সাত বছরের শিশুকে নৃশংসভাবে খুন? প্রশ্ন তুলেছেন মৃতের বাবা

মুখে কাপড় গোঁজা ও হাত পা পিছমোড়া করে বাঁধা অবস্থায় জঙ্গলে পড়ে রয়েছে সাত বছরের এক নাবালকের নিথর দেহ। হ্যাঁ গা হিম করা দৃশ্যের দেখা মিলল বাঁকুড়া জেলার তালড্যাংরায়। জানা গেছে, রবিবার রাত থেকেই নিখোঁজ ছিল ঢ্যামনামারা গ্রামের রাহুল কুদ্দুস নামে মৃত ওই বালকটি। কিন্তু কেন এভাবে হত্যা করা হল এই নাবালককে? আর কারাই বা করল? ঘটনাটির কারণ জানতে চোখ রাখুন নীচের খবরে।

আরো খবর পেতে চোখ রাখুন প্রিয়বন্ধু মিডিয়া-তে

রাজনৈতিক সূত্রের খবর থেকে জানা গেছে, মৃত ছেলেটির বাবা দিল ইসলাম খান নির্বাচনের আগেই দলের লোকের দ্বারা পীড়িত হয়েছেন। অভিযোগ সরবও হয়েছেন। এদিন হাসপাতাল থেকে ফিরে ছেলের মৃত্যু খবর শুনে ভেঙ্গে পড়েন তিনি। এবং জানান,” ওরা আমাকে খুন করতে পারেনি। তাই ছেলেকে তুলে নিয়ে খুন করেছে। ওদের ফাঁসি চাই।”  তালড্যাংরার ওই গ্রামএলাকাটি বিষ্ণুপুর বিধানসভা কেন্দ্রের আওতাধীন। দু বছর ধরে এলাকার বিধায়ক তুষারকান্তি ভট্টাচার্য এবং বিদায়ী বিধায়ক শ্যাম মুখোপাধ্যায়েরের দলের লোকজনদের ভিতর ঠান্ডালড়াই চলছে। তবে এ বিবাদ প্রত্যক্ষেও এসেছে বহুবার। তুষার বাবু বক্তব্যে জানান যে এলাকার দ্বন্দ্ব মেটাতে কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি সভাপতির তরফ থেকে। কিন্তু এবার হিংসা রক্তপাত বন্ধ হওয়া দরকার। তবে শ্যামবাবু তার অনুগামীদের বিরুদ্ধে ওঠা খুনের অভিযোগ নাকচ করে বলেন যে পুলিশ তদন্ত করলেই নাকি প্রকৃত অভিযুক্তদের নাম জানা যাবে। এছাড়া দলকোন্দলের ব্যাপারে মুখ খুলতে নারাজ জেলা সভাপতি অরূপ খানও। তিনিও একই দিকে তাল দিয়ে বলেন যে তদন্ত শুরু হয়ে গেছে এবং দোষীদের শাস্তিবিধান শুনতে তৎপর তিনি।

আরো জানা যাচ্ছে যে, আগেরবছর এই এলাকাতেই নাকি গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরেই খুন হন শ্যামবাবুর এক অনুগামী। দিল ইসলাম খান আবার তুষারবাবুর অনুগামী ছিলেন। তিনিও শিকার হয়েছেন রাজনৈতিক হিংসার। নির্বাচনের আগে শ্যামবাবুর দলের লোক তাজিউদ্দিন খান সহ ৬ জন লোক নাকি তাঁর বাড়িতে চড়াও হয়ে হুমকি দিতে থাকে এবং চালায় মারধোরও। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে ভর্তি হতে হয়েছিলো বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। সুস্থ হয়েও তিনি সন্ত্রাসের ভয়ে ফিরতে পারেননি এলাকায়। তাকে না পেয়েই তাঁর স্ত্রীকে হুমকি দেওয়া হচ্ছিল। ছেলেকে একা ছাড়া হচ্ছিলো না ভয়ে। পুলিশকে গোটা ঘটনাই জানানো হয়েছিলো মৌখিকভাবে। এমনটাই অভি্যোগে জানান এদিন দিল ইসলাম খান।

জানা গেছে, রবিবার বিকালে নাকি এলাকার একজনের বাড়ি ছাদঢালাই উপলক্ষে মিষ্টি খাওয়ানো হচ্ছিল। সেখানেই গেছিল রাহুল।  কিন্তু তারপর আর ফেরেনি বাড়িতে। পরেরদিন নিখোঁজ ছেলের নাম এফআইআর দায়ের করেন বাবা। আর এদিন এলাকার এক জঙ্গলে দুর্গন্ধ পেয়ে স্থানীয়রা দেখতে গিয়েই খোঁজ পায় ওই নাবালকের।  মৃত দেহ পড়ে ছিল বাঁধা অবস্থায়। তবে শরীরে আঘাতের কোনো চিহ্ন পাওয়া যায়নি,এমনটাই জানিয়েছেন পুলিশ দফতর। মৃত ছেলেটির বাবা এদিন বাঁকুড়া মেডিকেলের মর্গে দাঁড়িয়ে বললেন ”পাড়া থেকেই ছেলেটাকে তুলে নিয়ে গিয়ে খুন করল শ্যামবাবুর লোকেরা। ওরা এতটা বেপরোয়া হবে, ভাবতে পারিনি!” বাঁকুড়া পুলিশ সুপার সুখেন্দু হীরা জানিয়েছেন যে তাজিউদ্দিন খান সহ জনা ৬ জনের নামে আগেই দিল ইসলাম অভিযোগ জানিয়েছিলেন তাকে মারধোর করার। তাঁদের বিরুদ্ধেই আবার ছেলের খুনের অভিযোগে সবর হয়েছেন  দিল ইসলাম। তবে অভিযুক্তরা পলাতক। পুলিশি তদন্তে অবিলম্বে ধরা পড়বে তারা এমনটাই আশা করা যায়।

 

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!