এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরে হেভিওয়েটদের গ্রেফতারের পরে থমথমে ক্যানিং,গেরুয়া-জুজু দেখছে তৃণমূল

গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরে হেভিওয়েটদের গ্রেফতারের পরে থমথমে ক্যানিং,গেরুয়া-জুজু দেখছে তৃণমূল

তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরে গুলিবিদ্ধ হয়ে এক তৃণমূল কর্মী খুন হওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে থমথমে অবস্থায় এখনো দক্ষিণ ২৪ পরগনার ক্যানিং। এই ঘটনার অভিযোগে ব্লক যুব সভাপতির পদ থেকে পরেশরাম দাসকেও অপসারণ করেছে যুব তৃণমূল নেতা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। জেলা সূত্রের খবর থেকে জানা গিয়েছে, এখনো অব্দি পুলিশ অভিযুক্ত হিসাবে ৪ জনকে গ্রেফতার করেছে। লক আপে রয়েছ ২ জন। আরো বেশ কয়েকজনের তল্লাশি জারি রয়েছে। তৃণমূল এবং যুব শিবিরের অনুগামীরাই এই ঘটনায় যুক্ত বলে পুলিশ জানিয়েছে। এলাকায় উত্তপ্ত পরিস্থিতি দেখে এখনো পুলিশ টহল দিচ্ছে এলাকায়। তবে দলের আভ্যন্তরীণ কোন্দলের জন্যেই এই ঘটনা ঘটেছে কিনা তার জন্য সাংগঠনিক তদন্ত করে দেখা হচ্ছে বলেই জানিয়েছেন তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তবে আগের থেকে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের অভিযোগে কান দিতে বারণ করেছেন তিনি। এই ঘটনার পিছনে বিজেপি ও আরএসএসের হাত থাকার সম্ভাবনার কথাও জানালেন তিনি।

দলীয় সূত্রের খবর থেকে জানা গিয়েছে,পঞ্চায়েত নির্বাচন পর্ব থেকেই নানান সময়ে তৃণমূলের আদি-দের সঙ্গে যুব তৃণমূলের গোষ্ঠীকোন্দল শুরু হয়। মাঝখানে কিছুদিন পরিস্থিতি স্বাভাবিক দেখে স্থানীয়রা ভেবেছিল অন্তর্দ্বন্দ্বে বোধহয় ভাঁটা পড়েছে। কিন্তু স্থানীয়দের সেই অনুমানকে মিথ্যে প্রমাণ করে ফের ক্যানিং ১ ব্লকের যুব তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি পরেশরাম দাসের সঙ্গে ব্লক তৃনমূল সভাপতি শৈবাল লাহিড়ীর কোন্দল প্রকাশ্যে আসে পঞ্চায়েত ও পঞ্চায়েত সমিতি গঠনের প্রক্ষিতে। দুই পক্ষ থেকে গোলাগুলি,আক্রমণের জেরে উত্তক্ত থাকতো গোটা এলাকা। দলের একাংশের অভিযোগ, মাতলা নদীর সংলগ্ন এলাকার বিঘের পর বিঘে জমি মাছের ভেড়ির দখলে,খাস জমি বিক্রি থেকে শুরু করে পঞ্চায়েতের কোটি কোটি টাকা ভাগ ;বাটোয়ারার জেরে গরমিলের জন্য কোন্দল আরো মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে। উভয় শিবির নিজেদের ক্ষমতার প্রদর্শন করতেই বোমা-গুলি ছুড়তে থাকে। তাছাড়া ক্যানিং-এ তৃণমূলের সংগঠনের গোড়ায়তেই রয়েছে গলদ। একসময় ইটখোলায় গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল সংগঠনের নেতৃত্ব দিতেন আবদুল্লা সর্দার। আর সেসময় পঞ্চায়েত প্রধাণ ছিলেন বামজোটের আরএসপির হেভিওয়েট নেতা বারীণ রায়। তাঁর ডান হাত ছিলেন খতিব সর্দার। খতিবের দাপটে সেসময় আবদুল্লা কোনঠাসা হয়ে পড়েছিলেন। ২০০৮ সালে তৃনমূল জেলা পরিষদ দখলে নিতে পারলেও ইটখোলায় ক্ষমতা দেখাতে পারেনি বারীন রায় এবং খতিব সর্দারের দাপটে। সেসময় দলের পদাধিকারীরাই পঞ্চায়েত দখলে আনার জন্য আবদুল্লাকে সংগঠন থেকে সরিয়ে খতিবকে ক্ষমতায় আনে। আর তারপর থেকেই শুরু হয় তৃনমূলেট আদিদের সঙ্গে যুবদের লড়াই। যুবদের দাপটে কোনঠাসা হয়ে পড়ে আদিরা।

সংগঠনের পাশাপাশি ক্ষোভ তৈরি হয় প্রধান পদ নিয়েও। ২০১৩ সালে ক্যানিং পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি হিসাবে পরেশ দাস ক্ষমতায় আসার পর থেকেই ব্লক নেতা শৈবাল লাহিড়ীর সঙ্গে সম্পর্ক খারাপ হতে থাকে তাঁর। আদি তৃণমূলের স্থলে যুবরা ক্ষমতায় এলে তা মেনে নিতে পারেনি তৃণমূলের মূল দল। ফলত সভাপতি বিরোধকে কেন্দ্র করে দলে বিভেদ তৈরি হয়। ক্ষমতা ধরে রাখার জন্য ইটখোলার খতিন সর্দার শৈবাল লাহিড়ীর শিবির ছেড়ে পরেশ বাবুর দলে যোগ দেন।

ফেসবুকের কিছু টেকনিকাল প্রবলেমের জন্য সব খবর আপনাদের কাছে পৌঁছেছে না। তাই আরো খবর পেতে চোখ রাখুন প্রিয়বন্ধু মিডিয়া-তে

এবার থেকে প্রিয় বন্ধুর খবর পড়া আরো সহজ, আমাদের সব খবর সারাদিন হাতের মুঠোয় পেতে যোগ দিন আমাদের হোয়াটস্যাপ গ্রূপে – ক্লিক করুন এই লিঙ্কে

অন্যদিকে,আদিরা অনেকেই বিজেপিতে গিয়ে যোগ দিয়েছিল। পরে খতিবকে যোগ্য জবাব দিতে পরেশবাবু দলে ফিরে আসে। এরমধ্যে পঞ্চায়েত ভোটে লড়াই করার টিকিট না পাওয়ার ক্ষোভের পারদ আরো চড়া হয়। তারপর এদিন সভাধিপতিকে সংবর্ধনা দেওয়াকে কেন্দ্র করে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। শৈবাল লাহিড়ীর শিবিরকে খতিব সর্দারকে চ্যালেঞ্জ জানাতে একটি বিশাল মিছিল বার করে সংর্বধনা অনুষ্ঠানের দিকে আসে তাঁরা। তাকেই পাল্টা দিতে খতিব সর্দারের অনুগামীরাও ময়দানে নামে। এর জেরেই সংঘর্ষ হয়। অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতির জেরে এক তৃণমূল কর্মীর মৃত্যু হয়।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!