এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > কলকাতায় তৃণমূলের গড় ভাঙতে নতুন উদ্যমে ঝাঁপাতে নতুন পরিকল্পনা রাজ্য-বিজেপির

কলকাতায় তৃণমূলের গড় ভাঙতে নতুন উদ্যমে ঝাঁপাতে নতুন পরিকল্পনা রাজ্য-বিজেপির

সদ্যসমাপ্ত লোকসভা নির্বাচনে পশ্চিমবঙ্গে ব্যাপকভাবে উত্থান ঘটেছে ভারতীয় জনতা পার্টির। এক সময় যে রাজ্যে পদ্মফুল শিবিরকে আতশকাচ দিয়েও খুজে পাওয়া যেত না, সেই রাজ্যে 2 টি আসন থেকে এক ধাক্কায় 18 টি লোকসভা আসনে জয়লাভ করেছে গেরুয়া শিবির। নিজেদের যুযুধান প্রতিপক্ষ তৃণমূল কংগ্রেসের 42 এ 42 স্বপ্নকে কার্যত চুরমার করে দিয়েছেন নরেন্দ্র মোদির দল। বিজেপির কাছে বাংলার ক্ষেত্রে এটা বড় বিজয় হলেও সার্বিকভাবে এখনও রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের কাছে চারটি আসন কম রয়েছে পদ্মফুল শিবির।

রাজনৈতিক মহলের একাংশের মতে, এই সংখ্যাটা নেহাত কম নয়, কার্যত আগামী 2021 সালের বিধানসভা নির্বাচনকে যদি ভারতীয় জনতা পার্টি মূল টার্গেট করে থাকে, তাহলে আরও অনেক বিধানসভা কেন্দ্রে নিজেদের জনভিত্তি বৃদ্ধি করতে হবে বঙ্গ বিজেপিকে বলে মত বিশেষজ্ঞদের। এক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য বাংলার উত্তর প্রান্তে ভারতীয় জনতা পার্টির পক্ষে ব্যাপক জনসমর্থন থাকলেও তুলনামূলকভাবে দক্ষিণবঙ্গে সেই জনসমর্থন অনেকটাই সীমিত বলে মনে করছে বিশেষজ্ঞদের একাংশ।

বস্তুত, কলকাতায় ভারতীয় জনতা পার্টি সপ্তদশ লোকসভা নির্বাচনে নিজেদের কোনরকম প্রভাবই দেখাতে পারেনি বলে মত অনেকেরই। উত্তর কলকাতা থেকে শুরু করে দক্ষিণ কলকাতা, যাদবপুর থেকে শুরু করে দমদম, কোথাও জয়যুক্ত হতে পারেনি রাজ্যের পদ্মফুল শিবির। কেন্দ্র তথা রাজ্য নেতৃত্বের কাছে এটা অত্যন্ত চিন্তার বিষয় বলে জানা যায়।

বিজেপি সূত্রের খবর, শুধু নির্বাচনের ক্ষেত্রে নয়, সম্প্রতি গোটা রাজ্যজুড়ে সদস্য সংগ্রহ অভিযানে মনোযোগী হয় ভারতীয় জনতা পার্টি। রাজ্যের অন্যান্য প্রান্তে বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল ভারতীয় জনতা পার্টি ব্যাপকভাবে সফল হলেও কলকাতার ক্ষেত্রে সফলতা কোনও রকম প্রভাব ফেলতে পারেনি।

তাই দলের তরফ থেকে এবার নতুন করে সদস্য সংগ্রহ অভিযানের প্রস্তুতি শুরু করল ভারতীয় জনতা পার্টি বলে খবর। বিগত সদস্য সংগ্রহ অভিযানে উত্তর কলকাতায় 70 হাজার এবং দক্ষিণ কলকাতায় মোট 30 হাজার নতুন সদস্য তৈরি করতে পেরেছে ভারতীয় জনতা পার্টি। স্বাভাবিকভাবেই সদস্য সংগ্রহের ক্ষেত্রে কলকাতার এই পারফরম্যান্স কোনভাবেই খুশি করতে পারেনি ভারতীয় জনতা পার্টির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহকে।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

পাশাপাশি কলকাতায় অল্প পরিমাণ সদস্য সংগ্রহ হতাশ করেছে। যা কোনভাবেই খুশি করতে করেনি ভারতীয় জনতা পার্টির কার্যকারী সভাপতি জগতপ্রকাশ নাড্ডাকে। কিন্তু কোনভাবেই হাল ছাড়তে নারাজ বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব। তাই কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের তরফ থেকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, গোটা রাজ্যের ক্ষেত্রে ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত সদস্য সংগ্রহ অভিযান চললেও কলকাতার ক্ষেত্রে পুনরায় নতুন করে সদস্য সংগ্রহ অভিযান জানুয়ারি মাস থেকে শুরু হবে।

তবে কলকাতায় সদস্য সংগ্রহ অভিযান বড় একটা প্রভাব ফেলতে পারলেও সমগ্র রাজ্যের সদস্য সংগ্রহ অভিযানে রীতিমত উচ্ছসিত কেন্দ্র-রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব। ভারতীয় জনতা পার্টির রোল মডেল জনসংঘের প্রতিষ্ঠাতা ভারতকেশরী ডঃ শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জির জন্মদিবস 6 জুলাই থেকে রাজ্যে সদস্য সংগ্রহ অভিযানে নামে ভারতীয় জনতা পার্টি। কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের তরফ থেকে বলা হয়েছিল, সমগ্র রাজ্যে ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত 1 কোটি সদস্য সংগ্রহ করতে হবে।

কিন্তু গোটা রাজ্যের সদস্য সংগ্রহ অভিযানে চলাকালীন ইতিমধ্যেই অক্টোবর মাস পর্যন্ত আনুমানিক 90 লক্ষ থেকেও বেশি সদস্য সংগ্রহ করে ফেলেছে ভারতীয় জনতা পার্টি বলে খবর বিজেপি সূত্রে। তাই এই কথা বলাই যায়, ডিসেম্বর মাস আসতে আসতে নিজেদের লক্ষ্যমাত্রা এক কোটি থেকে বেশি সদস্য সংগ্রহ করে ফেলবে ভারতীয় জনতা পার্টি।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, পশ্চিমবঙ্গের পাশাপাশি সারা ভারতবর্ষে সদস্য সংগ্রহ অভিযান শুরু করেছিল ভারতীয় জনতা পার্টি। এই অভিযানের দায়িত্ব সামলাচ্ছেন মধ্যপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা ভারতীয় জনতা পার্টির সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক শিবরাজ সিং চৌহান। যে অভিযান শেষ হওয়া পর্যন্ত সারাদেশের মধ্যে রেকর্ড তৈরি করে 77 লক্ষের বেশি সদস্য সংগ্রহ করে ফেলেছিল বঙ্গ বিজেপি। যার কারনে সমগ্র ভারতবর্ষে সদস্য সংগ্রহের নিরিখে শ্রেষ্ঠ শিরোপা পেয়েছিল পশ্চিমবঙ্গ বিজেপি।

আর এর পরেই কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের তরফ থেকে পশ্চিমবঙ্গে ভারতীয় জনতা পার্টির সদস্য হওয়ার জন্য মানুষের উৎসাহ দেখে অভিযানের মেয়াদ আগামী 31 ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়িয়ে দেওয়া হয় এবং লক্ষমাত্রা বাড়িয়ে দিয়ে এক কোটি সদস্য সংগ্রহ করার লক্ষ্য স্থির করে দেওয়া হয় কেন্দ্রীয় বিজেপি নেতৃত্বের তরফ থেকে। জানা যায়, কলকাতার চারটি সাংগঠনিক জেলা রয়েছে ভারতীয় জনতা পার্টির। সেগুলো হল, কলকাতা উত্তর, কলকাতা দক্ষিণ, উত্তর শহরতলি এবং দক্ষিণ শহরতলি।

আর এই কেন্দ্রগুলোর মধ্যে শমীক ভট্টাচার্যের দায়িত্বে থাকা উত্তর শহরতলির সাংগঠনিক জেলায় বুধবার পর্যন্ত সদস্য সংগ্রহ অভিযান চললেও দক্ষিণ কলকাতায় সেই অভিযান সেইভাবে ফলপ্রসু হতে পারেনি। তাই সেখানকার নেতৃত্ব ভারতীয় জনতা পার্টির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের ধমকের মুখে পড়েন। এইখানে ভারতীয় জনতা পার্টির দায়িত্বে থাকা নেতা রাকেশ সিংহ কলকাতা বন্দর এলাকায় কিছুটা সাফল্য অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে।

কিন্তু 6 টি ওয়ার্ডের মধ্যে তিনটি ওয়ার্ড সংখ্যালঘু অধ্যুষিত হওয়ায় সেখানে ভারতীয় জনতা পার্টির সদস্য সংগ্রহ অভিযান যেমনভাবে প্রভাব বিস্তার করতে পায়নি বলে মত দলের একাংশের। আবার টালিগঞ্জ, যাদবপুর ইত্যাদির অভিযান ভালোভাবে চলেছে বলে খবর।

তবে বেহালা পূর্ব এবং পশ্চিম এলাকায় আবার বিফলতার মুখ দেখতে হয়েছে বিজেপিকে। সবকিছু মিলিয়ে বিজেপির অন্দরের একাংশ নেতৃত্বের মতে, রাজ্যের রাজধানী কলকাতায় যে পরিমাণ সদস্য সংগ্রহ করতে সক্ষম হয়েছে ভারতীয় জনতা পার্টি, তাতে করে খুশি নন শীর্ষ নেতৃত্ব।

যে রাজ্যে সারা ভারতবর্ষে সবচাইতে বেশি সদস্য সংগ্রহ হয়েছে, তার রাজ্যের রাজধানীতেই যদি এত কম সংখ্যক সদস্য সংগ্রহ হয়, তাহলে সার্বিকভাবে সফলতার উপরে একটা প্রশ্ন উঠেছিল। তাই নিজেদের সাংগঠনিক ভিত্তিকে মজবুত করতে কলকাতার ক্ষেত্রে সদস্য সংগ্রহ অভিযানের মেয়াদ আরও বাড়িয়ে দিতে চলেছে ভারতীয় জনতা পার্টি বলে মত রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!