প্রয়াত হলেন রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী তথা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দীর্ঘদিনের সৈনিক কৃষ্ণনগর উত্তর কেন্দ্রের তৃণমূল বিধায়র অবনীমোহন জোয়ারদার। দুঁদে পুলিশকর্তা হিসাবে কর্মজীবন শেষ করার পর যোগ দেন রাজনীতিতে। হয়ে ওঠেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুগত সৈনিক। রাজ্যে ২০১১ সালে পরিবর্তনের সরকারে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সদস্য ছিলেন। তাঁকে কৃষ্ণনগর উত্তরের কঠিন আসনে লড়তে পাঠান দলনেত্রী। প্রথমেই বাজিমাত – সেখান থেকেই বিধায়ক নির্বাচিত হন তিনি।

এরপর ২০১৬-সালের নির্বাচনে জিতে তৃণমূল ক্ষমতায় এলে, তাঁকে মন্ত্রী করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দায়িত্ব পান কারা দপ্তরের মত গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রকের। কিন্তু তারপরেই তাঁর স্বাস্থ্যের অবনতি হতে থাকে। ফলে, একসময় তাঁকে দপ্তরবিহীন মন্ত্রী করে রাখেন মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু, দীর্ঘদিন ধরেই অসুস্থ ছিলেন তিনি, ফলে পরবর্তীকালে তাঁকে মন্ত্রিসভা থেকে সরিয়ে দিতে বাধ্য হন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

আর অবশেষে দীর্ঘ লড়াইয়ের শেষে মৃত্যুর কাছে হার মানতে হল ৭৯ বছর বয়সী কৃষ্ণনগর উত্তর বিধানসভা কেন্দ্রের বিধায়ককে। কলকাতাতেই থাকতেন অবনীমোহন জোয়ারদার। নিজের নির্বাচিত এলাকায় অর্থাৎ কৃষ্ণনগরের উকিলপাড়ায় একটি ভাড়া বাড়িতে থেকে রাজনীতির কাজকর্ম করতেন। কলকাতার বাড়িতেই গতকাল গভীর রাত্রে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তৃণমূল কংগ্রেসের এই প্রভাবশালী নেতা। তাঁর মৃত্যুর খবরে শোকের ছায়া নেমে এসেছে রাজনৈতিক মহলে।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যখন ৩৪ বছরের বাম শাসনের অবসান ঘটিয়ে রাজ্যে পরিবর্তনের ডাক দেন – তখন বহু অবসর নেওয়া আমলা তাঁর ডাকে সাড়া দিয়ে রাজনীতির ময়দানে পা রাখেন। অবনীমোহনবাবু ছিলেন তাঁদের মধ্যে অন্যতম। তাঁর রাজনীতিতে পা রাখা দেখেই অনেকেই উৎসাহিত হন ও ঘাসফুল শিবিরের সমর্থনে এগিয়ে আসেন। নদীয়ার বাম দুর্গকে ঘাসফুল শিবিরের দুর্ভেদ্য ঘাঁটি করে তুলতে তাঁর ভূমিকা অবিস্মরণীয় ছিল বলে মনে করেন অনেকেই। তাঁর মৃত্যুতে রাজনীতির একটা বড় অধ্যায়ের পরিসমাপ্তি হল বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।