এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > তৃণমূলের প্রতিবাদ মিছিলে পা মেলাচ্ছেন বিজেপি নেতারা! তীব্র চাঞ্চল্য রাজ্য-রাজনীতিতে

তৃণমূলের প্রতিবাদ মিছিলে পা মেলাচ্ছেন বিজেপি নেতারা! তীব্র চাঞ্চল্য রাজ্য-রাজনীতিতে

আনুষ্ঠানিকভাবে এখনও তিনি দলে যোগদান করেননি। কিন্তু সোমবার সন্ধ্যায় খানাকুলে শাসক দলের প্রতিবাদ মিছিলে স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশ নিতে দেখা গেল তৃণমূল থেকে বিজেপিতে যোগ দেওয়া বেশ কয়েকজন নেতাকে। যা নিয়ে খানাকুলে এখন তীব্র চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।

জানা গেছে, যে সমস্ত নেতারা এদিন মিছিলে হেঁটেছেন, তারা তৃণমূলে ফিরতে চাইছেন। আর তাঁদের দলে ফেরানোর জন্য রাজ্য ও জেলাস্তরে সবুজ সংকেতও পাওয়া গেছে। তবে এদিন যোগদানের অনুষ্ঠান না হলেও তৃণমূলের মিছিলে অংশ নিয়ে ওই নেতারা বুঝিয়ে দিলেন, তাঁরা আর বিজেপিতে নেই বলে মনে করছে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।

এদিকে এদিনই গোঘাটে জেলা তৃণমূল নেতৃত্বের উপস্থিতিতে তৃণমূলত্যাগী বেশ কয়েকজন নেতার ফের দলে ফেরার কথা থাকলেও রাজনৈতিক কারণে গোঘাটের ওই যোগদানের অনুষ্ঠান এদিন স্থগিত রাখা হয়।সূত্রের খবর, এদিন বিকেলে খানাকুল বিধানসভার তৃণমূলের সাংগঠনিক চেয়ারম্যান নজিবুল করিমের নেতৃত্বে একটি প্রতিবাদ মিছিলের আয়োজন করা হয়। আর সেই মিছিলে যোগ দেওয়ার জন্য এদিন বিকেলে খানাকুলের রাজহাটিতে শাসক দলের পার্টি অফিসে হঠাৎই উপস্থিত হন কিশোরপুর-1 গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান সন্দীপ বর, রামমোহন-1 গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান সঞ্জয় দলুই ও তাঁদের অনুগামীরা।

কিন্তু জেলা এবং রাজ্য স্তরের নেতারা এদিন উপস্থিত না থাকায় তাঁদের দলে যোগদান করানো না হলেও এদিন তাঁরা তৃণমূলের ওই প্রতিবাদ মিছিলে পা মেলান। এদিন এই বিষয় নিয়ে সন্দীপবাবু বলেন, “লোকসভা নির্বাচনের পর শাসক দল ছেড়ে বিজেপিতে যোগদান দিয়েছিলাম ঠিকই। কিন্তু, ওই দলে গিয়ে দেখলাম, বিজেপি সিপিএমের হার্মাদদের সঙ্গে নিয়ে সন্ত্রাসের রাজনীতি চালাচ্ছে। তাই বিজেপিতে যোগ দেওয়ার কিছুদিনের মধ্যে সিদ্ধান্ত বদল করি। আবারও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে তৃণমূল করার মনস্থির করি। এনিয়ে তৃণমূলের জেলা ও রাজ্য নেতৃত্বে সঙ্গেও আলোচনা করেছি। তাঁরাও আমাকে সবুজ সংকেত দিয়েছেন। যে কারণে এদিন ব্যক্তিগতভাবে খানাকুলের সাংগঠনিক দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা নজিবুল সাহেবের সঙ্গে দেখা করতে এসেছিলাম। কিন্তু, এখানে এসে দেখি, তৃণমূলের মিছিল হচ্ছে। তাই পুরনো দলের কর্মী-সমর্থকদের অনুরোধেই স্বতঃস্ফূর্ত এবং সক্রিয়ভাবে ওই মিছিলে অংশ নিয়েছিলাম। আগামীদিনে আমি বিজেপির কোনও মিটিং মিছিল বা অনুষ্ঠানে আর অংশ নেব না।”

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশ বলছেন, সন্দীপ বর সহ তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যাওয়া নেতাদের দলে ফেরানো নিয়ে অনেক আগেই ইতিবাচক বার্তা দিয়েছিলেন জেলা তৃণমূলের সভাপতি দিলীপ যাদব। কিন্তু এদিন অভ্যন্তরীণ টানাপোড়েনের কারণে গোঘাটে বিজেপি থেকে তৃণমূলে যোগদানের অনুষ্ঠান বাতিল হয়। তবে রাজনৈতিক কৌশলগত ভাবে খানাকুলের তৃণমূল নেতা নজিবুলসাহেব, সন্দীপ বর সহ অন্যান্যদের দলে যোগদান না করিয়েও বিরোধী শিবিরকে স্পষ্ট ভাবেই বুঝিয়ে দিলেন, সন্দীপবাবুর মতো নেতাকে আবারও তৃণমূলে ফেরানো হল।

এদিন তৃণমূলের ওই মিছিলের আগে আনুষ্ঠানিক ভাবে বিজেপি ছেড়ে শাসক দলে যোগদান করেন ধান্যঘোরীর ৪৯ জেডপির বিজেপির যুব মোর্চার সম্পাদক অভিজিৎ দোলুই। নজিবুল সাহেব বলেন, “রাজ্য ও জেলা স্তরের নেতাদের উপস্থিতি ছাড়া আমি কখনই নিজে থেকে দলত্যাগী নেতাদের ফের তৃণমূলে যোগদানের অনুষ্ঠান সম্পন্ন করতে পারি না। সন্দীপবাবু সহ কয়েকজন এদিন দলীয় কার্যালয়ে এসে হাজির হন। দলের শীর্ষ নেতৃত্ব তাঁদের দলে যোগদানের বিষয়ে সবুজ সংকেত দিয়েছেন। যে কারণে তাঁদের আমি প্রত্যাখ্যান করতে পারিনি।”

অর্থ্যাৎ, নাজিমুল সাহেবের কথা থেকেই স্পষ্ট, আনুষ্ঠানিকভাবে তাঁরা দলে যোগদান না করলেও তৃণমূলের প্রতি আস্থা ও মনের বিশ্বাস নিয়েই এদিন মিছিলে অংশ নিয়েছিলেন এবং আগামীদিনে জেলা নেতৃত্বের উপস্থিতিতে যে আনুষ্ঠানিক ভাবে তাঁরা দলে যোগ দেবেন এটাতেও নিশ্চিত সকলে।

যদিওবা এই ব্যাপারে বিজেপির আরামবাগ সাংগঠনিক জেলা সভাপতি বিমান ঘোষ বলেন, “বিজেপি দলে থাকতে হলে দলের সুশাসন মেনে চলতে হয়। তৃণমূল থেকে যাঁরা বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন, তাঁদের অনেকেরই দলের শাসন মেনে চলার অভ্যাস ছিল না। তাই কেউ কেউ আবারও পুরনো দলে ফিরে যাচ্ছেন। পাশাপাশি যাঁকে ৪৯ জেডপির যুব মোর্চার সাধারণ সম্পাদক বলা হচ্ছে, তিনি আমাদের দলের একজন কর্মী ছিলেন মাত্র।” সব মিলিয়ে তৃনমূলে যোগদান না করলেও বিজেপিত্যাগী নেতাদের তৃনমূলের মিছিলে হাঁটার ঘটনা নিয়ে তীব্র বিতর্ক শুরু হয়েছে।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!