এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > মালদা-মুর্শিদাবাদ-বীরভূম > নেতৃত্বে আসতে চলেছে বড়সড় বদল! বিশেষ মাপকাঠিতে কাটা যাচ্ছে বহু তৃণমূল নেতার নাম?

নেতৃত্বে আসতে চলেছে বড়সড় বদল! বিশেষ মাপকাঠিতে কাটা যাচ্ছে বহু তৃণমূল নেতার নাম?

মুর্শিদাবাদ জেলার সংগঠন আরও মজবুত করতে আসরে নেমে পড়েছে শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস। শুধু সাংগঠনিক বৃদ্ধি নয়, স্বচ্ছ ভাবমূর্তি ফেরাতে গ্রহণযোগ্য নেতাদের মূল সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত করতে তৎপর ঘাসফুল শিবির। যাদের রাজনৈতিক ছবিতে দাগ নেই, সেই সমস্ত নেতৃত্বকে জেলা কমিটিতে আনার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে মুর্শিদাবাদ তৃণমূল কংগ্রেস।

গত রোববার মুর্শিদাবাদ জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি আবু তাহের, বিধায়ক, সাংসদ মহকুমা সভাপতি এবং জেলায় দলের গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। এই আলোচনায় ছিলেন দলের শাখা সংগঠনের নেতৃত্বরাও। তৃণমূল সূত্রের খবর, ওই মিটিংয়ে প্রতিটি মহাকুমা সভাপতি, বিধায়ক এবং সাংসদদেরকে মহাকুমা প্রতি দুইজন সাধারণ সম্পাদকের নাম সুপারিশ করতে বলা হয়েছে। এছাড়াও একজন সম্পাদকের নাম জমা দিতে বলা হচ্ছে। এই তালিকা দুই দিনের মধ্যে জেলা সভাপতির কাছে পৌঁছে দেওয়ার নির্দেশ রয়েছে।

পরবর্তীতে সেই তালিকা জেলার পর্যবেক্ষক শুভেন্দু অধিকারীর কাছে পাঠানো হবে। তিনি সবুজ সংকেত দেওয়ার পরই পদাধিকারীদের নাম ঘোষণা করা হবে। এই বিষয়ে তৃণমূলের মুখপাত্র অশোক দাস বলেন, “সাংগঠনিক বিষয় নিয়ে এদিনের বৈঠকে আলোচনা হয়েছে।” গতবারের থেকে এবার ছোট জেলা কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তৃণমূল সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, স্বচ্ছ ভাবমূর্তি ও লড়াকু নেতাদের নাম জমা দিতে হবে। এছাড়াও বিতর্কিত কাউকে জায়গা দেওয়া হবে না বলে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে মুর্শিদাবাদ জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের তরফ থেকে।

বস্তুত, আগামী বছরের শুরুতেই কান্দি, বহরমপুর, জঙ্গিপুর সহ জেলার অন্যান্য পৌরসভাগুলিতে নির্বাচন হওয়ার কথা। বহরমপুর এবং কান্দি পৌরসভা নিজের দখলে রাখা শাসক দলের কাছে সব থেকে বড় চ্যালেঞ্জ। কারণ এই দুই পৌরসভাতেই লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূল পিছিয়ে ছিল।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

লোকসভা নির্বাচনের আগে দলের অনেকেই ধারণা করেছিল, বহরমপুর শহরের শাসকদল অল্প ভোটে পিছিয়ে থাকবে। কান্দি থেকে লিড পাওয়ার প্রত্যাশা করেছিল তৃণমূল। কিন্তু কান্দিতেও শাসকদল পিছিয়ে পড়ে। এবারে তাই পৌরসভা নির্বাচনে এই দুটি পৌরসভা ধরে রাখা বেশ কঠিন কাজ বলে মনে করছে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। হয়তো সেটাই আন্দাজ করে জেলার নেতারা এখন থেকেই সংগঠন সাজাতে শুরু করেছে। কে কোন পৌরসভার সাংগঠনিক কাজ দেখভাল করবে, তা রাজ্য নেতৃত্ব ইতিমধ্যেই ঠিক করে দিয়েছে। আর এবার জেলা কমিটি মজবুত করে এই দুই শহরকে টার্গেট করছে তৃণমূল কংগ্রেস।

বিশেষজ্ঞদের মতে, জঙ্গিপুর, মুর্শিদাবাদ পুরসভায় শাসকদলের নিজেদের মধ্যে কোন্দল রয়েছে ঠিক, কিন্তু এই সমস্ত এলাকায় তৃণমূল কংগ্রেস কর্মী সমর্থক অনেক পরিমাণে রয়েছে। যদিও বহরমপুরে কংগ্রেস এখনও তাদের সংগঠন ধরে রেখেছে। তারা লাগাতার কর্মসূচি নিয়ে নিজের সাংগঠনিক শক্তিকে অব্যাহত রাখার চেষ্টা করছে।

তৃণমূল সূত্রের খবর, সামনে পৌরসভা এবং বিধানসভা নির্বাচন থাকায় জেলা কমিটিতে বিতর্কিত নেতাদের কোনভাবেই রাখতে চাইছে না তৃণমূল। এই জেলার বেশ কিছু পুরনো নেতা এবং কর্মী নিষ্ক্রিয় হয়েছে। তাদেরকেও সক্রিয় করে ময়দানে নামানোর কৌশল নেওয়া হচ্ছে। চলতি মাসেই নতুন জেলা কমিটি ঘোষণা করা হবে। কয়েকটি ব্লকের সভাপতিকে বদল করা হতে পারে বলে খবর। লালবাগ এবং ফারাক্কা দুই নেতার বিরুদ্ধে রাজ্য নেতৃত্বের কাছে বিস্তারিত অভিযোগ জমা পড়েছে। তাদেরকে পদ থেকে দ্রুত সরানো হবে বলে দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে।

এছাড়াও দলের শাখা সংগঠনগুলোকে আরও সক্রিয় হওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কিষান থেকে শুরু করে ক্ষেতমজুর, ছাত্রসংগঠন যুব সংগঠন জেলার প্রতিটি প্রান্তে জোরালোভাবে সংগঠনের কাজকে ত্বরান্বিত করবে। প্রসঙ্গত, কয়েকদিন আগেই মুর্শিদাবাদ জেলা তৃণমূলের পর্যবেক্ষক মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী জেলার জনপ্রতিনিধিদেরকে ডেকে পাঠিয়েছিলেন। তাদের আরও বেশি করে সংগঠনের কাজ করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয় শুভেন্দুবাবুর তরফে।

এছাড়াও জেলা সভাপতিকে বেশি করে জেলায় সময় দেওয়ার নির্দেশ দেন শুভেন্দু অধিকারী। পাশাপাশি তাকে দ্রুত কমিটি গঠনের জন্য তিনি নির্দেশ দিয়েছিলেন। সেইমত এদিন বৈঠক ডাকা হয়। জেলা সভাপতি জনপ্রতিনিধিদের কাছে খোঁজ-খবর নেয়। তাদের এলাকায় সাংগঠনিক হালহকিকত এছাড়াও জেলা সভাপতির তরফে সাধারণ সম্পাদক ও সম্পাদক পদের জন্য নাম জমা দেওয়ার নির্দেশ জনপ্রতিনিধিদেরকে দেওয়া হয়।

এলাকার তৃণমূল কর্মীদের মধ্যে গুঞ্জন, যেহেতু জেলার পর্যবেক্ষক শুভেন্দু অধিকারী প্রায় প্রত্যেকটি নেতাকেই ভালোমতো চেনেন, তাই সংগঠনের পরিবর্তনে তার নির্দেশের যথেষ্ট ভূমিকা থাকবে। তবে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, কংগ্রেসের অন্যতম শক্ত ঘাঁটি মুর্শিদাবাদ জেলায় যেখানে শাসকদল শত চেষ্টা করেও রবিনহুড অর্থাৎ অধীর রঞ্জন চৌধুরীকে হারাতে পারেনি, সেখানে অধীর বাবু লোকসভায় কংগ্রেসের দলনেতা হওয়ার পরে তার খাসতালুকে ঘাস ফুল ফোটানো কি সহজ কাজ হবে! সেই নিয়েই সরগরম মুর্শিদাবাদের রাজনীতি।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!