দুর্নীতির অভিযোগে ডাকা সালিশিসভায় না যাওয়ায় তৃণমূলের নেতা কর্মীদের মেরে হাত ভেঙে দিল বিজেপি! কলকাতা মেদিনীপুর রাজ্য November 14, 2019 সারা রাজ্যেই বিরোধী দল হিসেবে ভারতীয় জনতা পার্টি একাধিকবার তৃনমূলের বিরুদ্ধে হামলার অভিযোগ চালিয়েছে। বস্তুত, বিরোধী দল করায় তাদেরকে বারবার তৃণমূলী হামলার শিকার হতে হচ্ছে বলেও জানিয়েছে একাধিক বিজেপি নেতা। কিন্তু গত মঙ্গলবার রাত্রিবেলা গরবেতা এলাকার চন্দ্রকোনা রোডে দুর্গাপুর নামে একটি গ্রামে যে ঘটনা সামনে আসে, তাকে উলটপুরাণ বলে অভিহিত করছে একাধিক রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, সালিশি সভায় না যাওয়ার কারণে তৃণমূলের এক ওয়ার্ড সভাপতিকে বেধড়ক মার দিয়ে তার হাত ভেঙে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে বিজেপির বিরুদ্ধে। যদিও ভারতীয় জনতা পার্টির পক্ষ থেকে অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে। তবুও তৃণমূলের অভিযোগ দলীয় কর্মীদের মারধর করার পাশাপাশি একাধিক কর্মীদের বাড়ি এবং একটি পোলট্রি ফার্মেও ভাঙচুর চালানো হয়েছে। এমনকি একজনের মারুতি কারে ব্যাপক পরিমাণে ভাঙচুর চালিয়ে আগুন দিয়ে দেওয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ। কিন্তু অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ভারতীয় জনতা পার্টির বক্তব্য, আদতে তৃণমূলের কর্মীরা দল বেঁধে এসে গড়বেতায় ভাঙচুর করেছে। পুলিশ সূত্রে জানা যায়, তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে ইতিমধ্যেই 25 জনের নামে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। এলাকায় পুলিশ পিকেটিং বসানো হয়েছে বলেও খবর। পুলিশ সূত্রে আরও খবর, ইতিমধ্যেই দুইজন অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে পুলিশের তরফে। তবে তৃণমূল কংগ্রেসের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, আক্রান্ত তৃণমূল কংগ্রেসের বুথ সভাপতি, যার নাম সুকুমার ঘোষ। আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - বর্তমানে তিনি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছেন। তার কাছে সাংবাদিকদের তরফ থেকে ঘটনার বিবরণ জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, “সরকারের দেওয়া খাসজমিতে আমি নিজ গৃহ নিজ ভূমি প্রকল্পে বাড়ি তৈরি করেছি। প্রতিবেশী এক বিজেপি কর্মীর ওই জায়গা নিয়ে নানা আপত্তি। মঙ্গলবার বিকেলে এক বিজেপি কর্মীর ছেলে এসে সালিশিতে যেতে বলে যায়। এর আগেও আমাকে ওরা সালিশিতে ডেকে নিয়ে গিয়ে দুবার বেধড়ক মেরেছিল। তাই আমি সেখানে যাব না বলে জানিয়ে দিয়েছিলাম। কিন্তু সন্ধ্যার সময় আমি নিজের দোকানে যখন ব্যবসা করছিলাম, তখন বিজেপি কর্মীরা এসে চিৎকার শুরু করেন। আমি বেরিয়ে যেতেই ওরা আমাকে মারধর করতে শুরু করেন। স্ত্রী আমাকে বাঁচাতে গেলে ওরা তাকে মারধর করে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয় এবং মোটা লাঠি দিয়ে আমার কোমরে মারে আমি মাটিতে লুটিয়ে পড়ি। এই অবস্থায় নাটক করছে বলে ফের লাঠি দিয়ে মারতে থাকে। আমি ডান হাত দিয়ে আটকাতে যাই আমার হাত ভেঙে যায়। এরপর ওরা পালিয়ে যায়।” এদিকে দলীয় কর্মীকে মারধরের প্রতিবাদে বিজেপির বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন অঞ্চল তৃণমূল নেতা তপন কোলে। এদিন তিনি বলেন, “ওয়ার্ড সভাপতিকে মারধর করার খবর পেয়ে তৃণমূল কর্মীরা সেখানে যান। বিজেপির লোকজন বাড়ি থেকে পাথর ছুড়তে শুরু করেন। তাতে আমাদের কয়েকজন জখম হন।” এদিকে এই প্রসঙ্গে গড়বেতা 3 পঞ্চায়েত সমিতি তৃণমূলের সভাপতি আকাশদীপ সিনহা বলেন, “সালিশি সভা করে ওরা আমাদের কর্মীদের ডেকে নিয়ে গিয়ে এর আগে অনেক মারধর করেছে। আমি ওদের ডাকা সালিশি সভায় যেতে নিষেধ করেছি। আসলে তৃণমূল করার অপরাধে সিপিএমের হার্মাদদের সঙ্গে নিয়ে বিজেপি এসব করছে।” তবে তৃণমূলের তরফে এই ঘটনায় বিজেপির দিকে অভিযোগের আঙুল তুললেও তা সম্পূর্ণরূপে অস্বীকার করেছে গেরুয়া শিবির। এদিন এই প্রসঙ্গে মেদিনীপুর সাংগঠনিক জেলা বিজেপির সহ-সভাপতি রাজীব কুন্ডু বলেন, “খাসজমি নিয়ে গণ্ডগোল বলে জানি। দুই ভাইয়ের মধ্যে গন্ডগোল। সালিশি সভায় না যাওয়ায় কারও উপর হামলা চালানো হয়নি। বরং বাইরে থেকে বাইকে করে তৃণমূলের লোকজন এসে আমাদের কর্মীদের বাড়ি ভাঙচুর করেছে। দলীয় কর্মীদের মারধর করেছে। ওরা আমাদের নামে মিথ্যে অভিযোগ করছে।” তবে এই মারধরের ঘটনা নিয়ে যেভাবে তৃণমূল বনাম বিজেপির মধ্যে অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগের তরজা শুরু হয়েছে, তাতে এলাকার মানুষ অনেকটাই বিতশ্রদ্ধ। কিন্তু যেভাবে তৃণমূল নেতার হাত ভেঙ্গে দেওয়ার অভিযোগ উঠল বিজেপির বিরুদ্ধে, তাতে এখানে বিজেপি কিছুটা হলেও চাপে পড়তে পারে বলে দাবি বিশেষজ্ঞদের। আপনার মতামত জানান -