এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > তৃণমূল নেতাদের দুর্নীতি আটকাতে এবার সাধারণের হাতে এফআইআর অস্ত্র তুলে দিলেন অনুব্রত মণ্ডল

তৃণমূল নেতাদের দুর্নীতি আটকাতে এবার সাধারণের হাতে এফআইআর অস্ত্র তুলে দিলেন অনুব্রত মণ্ডল

 

লোকসভা নির্বাচনে সারা রাজ্যে বিজেপি দাপট বাড়ালেও বীরভূম জেলার দুটি লোকসভা কেন্দ্রে তারা পদ্ম ফোটাতে পারেনি। তবে তৃণমূল বীরভূম বোলপুর লোকসভা কেন্দ্র দখল করলেও আশ্চর্যজনকভাবে তাদের ভোট অনেকটাই কমেছে। আর এই পরিস্থিতিতে লোকসভা নির্বাচনের ফলাফল মেটার সাথে সাথেই বিধানসভাভিত্তিক সম্মেলন করতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল।

সংগঠন শক্তিশালী করার পাশাপাশি দলীয় নেতাকর্মীদের ভাবমূর্তি যাতে স্বচ্ছ থাকে, তার জন্য ইতিমধ্যেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশাসনিক বৈঠকের কায়দায় বিভিন্ন নেতৃত্বের প্রশ্নের উত্তর নিচ্ছেন তিনি। সূত্রের খবর, রবিবার দুবরাজপুর বিধানসভার বুথভিত্তিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। যেখানে উপস্থিত ছিলেন, জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল, জেলা সহ-সভাপতি অভিজিৎ সিংহ, মলয় মুখোপাধ্যায়, জেলা পরিষদের সভাধিপতি বিকাশ রায় চৌধুরী সহ অন্যান্যরা।

আর সেখানেই এই বিধানসভার বিভিন্ন অঞ্চলের নেতৃত্বদের ডেকে কেন এরকম ফল হল, তার ব্যাপারে প্রশ্ন করেন অনুব্রত মণ্ডল এবং অভিজিৎ সিংহ। পরিস্থিতি এমন জায়গায় চলে যায় যে কিছু কিছু কিছু ক্ষেত্রে তৃণমূল নেতাদের দুর্নীতির জন্যই এই ফল হয়েছে বলে জানান একাংশ। আর এরপরই কোনো নেতা টাকা চাইলে থানায় এফআইআর করুন বলে সকলকে জানিয়ে দেন বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতি।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

এদিনের বৈঠকে প্রথমেই খয়রাশোল ব্লকের অঞ্চল নেতাদের ডাকা হয়। পরবর্তীতে বাবুইজোর অঞ্চলে নেতৃত্বদের ডেকে প্রশ্ন করার সময় তাদের বিরুদ্ধে কিছুটা সরব হন অনুব্রত মণ্ডল। তিনি বলেন, “খয়রাশোলে মানুষের দোষ নেই। যত দোষ আমাদের। আমরা শুধু সেখানে নিজেদের মধ্যে খেয়োখেয়ি করেছি। অনেকেই মারা গিয়েছেন। সেখানে কি আরও মানুষ মরবে!”

এদিকে বাবুইজোরকে নিয়ে অনুব্রত মণ্ডল এই প্রশ্ন করার সময় সেখানকার এক তৃণমূল নেতা বলেন, “গত পঞ্চায়েত ভোটের সময় যাদের প্রার্থী করা হয়েছিল, তাদের বেশিরভাগেরই জনভিত্তি নেই। গোটা গ্রাম ওই প্রার্থীর বিরুদ্ধে গিয়েছে। তাই তার প্রভাব লোকসভা ভোটে পড়েছে।” এদিকে এদিনের এই সভা থেকে 100 দিনের কাজ করে অনেক শ্রমিক টাকা পাননি বলেও সরব হন অনেক অঞ্চলের তৃণমূল নেতা। আর যার পরিপ্রেক্ষিতেই রীতিমতো ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন অনুব্রত মণ্ডল। তিনি বলেন, “আপনারা টাকা তুলছেন না দল করছেন! কেউ টাকা চাইলে থানায় এফআইআর করুন।”

জানা গেছে, এদিন যে সমস্ত অঞ্চলে জটিলতা এবং গোষ্ঠী কোন্দল রয়েছে, সেই সমস্ত অঞ্চলে ফাইভম্যান কমিটি করার নির্দেশ দিয়েছেন বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতি। আর দলীয় নেতাদের দুর্নীতি কমাতে জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের দলীয় নেতাদের বিরুদ্ধে এফআইআরের নির্দেশ জল্পনা বাড়িয়ে দিয়েছে রাজনৈতিক মহলে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূলের স্থানীয় নেতাদের দুর্নীতির কারণেই অনেক জায়গায় শাসকদলের ফলাফল খারাপ হয়েছে। যা ভোট-পরবর্তী ফলাফল পর্যালোচনায় উঠে এসেছে। আর দুর্নীতির জন্যই যে বীরভূমে তৃণমূলের ভোট অনেকটা কমেছে, তা বুঝতে পেরেছেন অনুব্রত মণ্ডল। আর তাইতো লোকসভা ভোটের পর বিধানসভা নির্বাচনকে পাখির চোখ করে এখন থেকেই দলকে শুধরে দিতে চাইছেন তিনি।

আর তাই এদিনের সভা থেকে যে বা যারা টাকা চাইবে, তাদের বিরুদ্ধে এফআইআর করার নির্দেশ দিলেন বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতি। যার ফলে অভিযুক্ত তৃণমূল নেতাদের মনে যেমন ভয়ের সৃষ্টি হল, ঠিক তেমনই দুর্নীতি রোধ করতেও অনেকটা সচেষ্ট হলেন অনুব্রত মণ্ডল বলে মনে করছেন একাংশ। কিন্তু শেষ পর্যন্ত জেলা সভাপতি এই হুঁশিয়ারি দিলেও নিচুতলার তৃণমূল নেতাদের এই দুর্নীতি কমে কিনা, এখন সেদিকেই তাকিয়ে সকলে।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!