এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > পুরনো কর্মীদের দলে টানতে কালঘাম ছুটছে নেতাদের, অস্বস্তিতে জেলা নেতৃত্ব!

পুরনো কর্মীদের দলে টানতে কালঘাম ছুটছে নেতাদের, অস্বস্তিতে জেলা নেতৃত্ব!

তৃণমূলের সম্পদ লড়াই করা পুরনো কর্মীরা। যারা দুর্দিনে বাম সরকারের বিরুদ্ধে সরব হয়ে, আন্দোলন করে, প্রাণপাত করে দলকে ক্ষমতায় নিয়ে এসেছিলেন। আর তারপরই মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে তৃণমূল কংগ্রেস রাজ্যের ক্ষমতায় আসার পর থেকেই, সেভাবে পুরাতন কর্মীদের গুরুত্ব দেওয়া হয় না বলে বারবার অভিযোগ উঠেছে। এমনকি বিভিন্ন জায়গায় দল নতুন কর্মীদের নিয়ে মাতামাতি করার কারণে পুরনো বনাম নতুন কর্মীদের মধ্যে তৈরি হয়েছে সংঘর্ষ। যা দলকে চরম বিপাকে ফেলেছে।

তবে গত লোকসভা নির্বাচনের ফলাফলের পর পুরনো কর্মীরাই যে দলের সম্পদ, তা অনুধাবন করতে পেরেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বারবার দলীয় বৈঠকে জেলায় জেলায় থাকা পুরনো কর্মীদের গুরুত্ব দেওয়ার কথা শোনা গেছে তার গলায়। এমনকি প্রশান্ত কিশোরের টিমের পক্ষ থেকেও জেলা নেতৃত্বকে বার্তা দেওয়া হচ্ছে যে, দলের পুরোনো কর্মীদের এবার সামনের সারিতে নিয়ে আসতে হবে। তবে পুরনো কর্মীদের তৃণমূল এখন দলে সক্রিয় করার কথা বললেও, অনেকটাই সময় দেরি হয়ে গেছে। কেননা ইতিমধ্যেই তৃণমূলের অনেক পুরাতন কর্মীদল গুরুত্ব না পেয়ে চলে গেছেন বিজেপিতে।

আবার অনেকেই দাবি করতে শুরু করেছেন যে, এখন সামনে নির্বাচন। তাই দল তাদের গুরুত্ব দেওয়ার কথা ভাবছে। নির্বাচন ফুরিয়ে গেলে আবার গুরুত্বহীন হয়ে যাবেন এই পুরনো কর্মীরা। যার ফলে দলের প্রতি সেভাবে ভরসা রাখতে দেখা যাচ্ছে না তৃণমূলের দুর্দিনের কর্মীদের। আর দলের পুরাতন কর্মীদের সক্রিয় করানোর দায়িত্ব যে সমস্ত নেতার কাধে পড়েছে, সেই সমস্ত নেতারা এখন পড়েছেন চরম বিপাকে। কিভাবে পুরনো কর্মীদের সক্রিয় করা যাবে, তা নিয়ে প্রবল চিন্তা রয়েছে তাদের। জানা গেছে, কোচবিহার জেলায় তৃণমূলের দীর্ঘ দিনের পুরনো সৈনিক হিসেবে পরিচিত দিনহাটার প্রাক্তন বিধায়ক অশোক মন্ডল। বর্তমানে তিনি ভারতীয় জনতা পার্টিতে রয়েছেন।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

এদিন তিনি বলেন, “যারা লড়াই করে তৃণমূলকে ক্ষমতায় এনেছিলেন, গ্রামের সেই নেতাকর্মীরা এখন আর নেই। সেই সময়ের বাম নেতারা এখন তৃণমূলের পরিচালনায়। তাই ওই কর্মসূচির কোনো গুরুত্ব এখন আর নেই।” যদিও বা অশোকবাবুর এই মন্তব্যকে গুরুত্ব দিতে নারাজ দিনহাটার বর্তমান তৃণমূল বিধায়ক তথা প্রাক্তন বামনেতা উদয়ন গুহ। এদিন তিনি বলেন, “আমার কাছে পুরনো নেতাকর্মীদের তালিকা দেওয়া হয়েছে। তাদের সঙ্গে আমি যোগাযোগ করেছি। তারা সাড়া দিয়েছেন, এটুকু বলতে পারি।”

এদিকে কোচবিহার জেলার পুরনো তৃণমূল নেতাদের মধ্যে অন্যতম গিরীন্দ্রনাথ বর্মন। বর্তমানে তিনি দল থেকে অনেকটাই দূরে রয়েছেন। এদিন এই কর্মসূচি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “মমতা বাংলার গর্ব সঠিক কর্মসূচি। কিন্তু যাদের সামনে রেখে তা প্রচার করা হচ্ছে, তাদের অনেকেই দুর্নীতিতে যুক্ত। কমবেশি সবাই তা জানেন।” তবে পুরনো তৃণমূল কর্মীরা কেউ বিজেপিতে এবং কেউ বা দল থেকে দূরে সরে যাওয়ায়, এখন কিভাবে তাদের দলে সক্রিয় করা যাবে! সেই প্রশ্নই উঠতে শুরু করেছে কোচবিহার জেলা রাজনীতিতে।

যদিও বা এই প্রসঙ্গে জেলা তৃণমূলের সভাপতি তথা মন্ত্রী বিনয়কৃষ্ণ বর্মন বলেন, “সবাই আমাদের সঙ্গেই রয়েছেন। কোথাও একটু সমস্যা হয়েছিল। সেসব মিটে গিয়েছে। সবাই সাড়া দিচ্ছেন।” অন্যদিকে এই ব্যাপারে নাটাবাড়ি বিধানসভা কেন্দ্রের বিধায়ক তথা রাজ্যের উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, “আমি সকলের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। সকলেই আমাদের সঙ্গে আছেন।”

একইভাবে এই বিষয়ে জেলা তৃণমূলের কার্যকরী সভাপতি তথা প্রাক্তন সাংসদ পার্থপ্রতিম রায়ের মন্তব্য, “পুরনো কর্মীদের অনেকেই নানা কারণে দূরে সরে গিয়েছিলেন। অনেকের বয়স হয়েছে, কেউ অসুস্থ হয়েছেন। কেউ কেউ ব্যক্তিগত জীবনে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। এর বাইরে দলীয় কোন্দল বিষয় থাকলেও আমরা আলোচনা করছি। সবাইকে সম্মান জানানো হবে।” সব মিলিয়ে এখন গোটা বিষয়টি কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়, প্রশান্ত কিশোরের টিমের নির্দেশ মোতাবেক কোচবিহার জেলায় পুরনো তৃণমূল কর্মীদের সক্রিয় করতে তৃণমূল নেতারা কতটা সফল হন, সেদিকেই নজর থাকবে সকলের।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!