এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > তৃণমূল থেকে ‘বাঁচতে’ প্রবলভাবে বামভোট যাচ্ছে রামে, ‘বাঁচাতে’ ছুটে আসছেন মানিক-বৃন্দারা

তৃণমূল থেকে ‘বাঁচতে’ প্রবলভাবে বামভোট যাচ্ছে রামে, ‘বাঁচাতে’ ছুটে আসছেন মানিক-বৃন্দারা

এবারের লোকসভা নির্বাচনের জন্য ‘ওপিনিয়ন পোল’ করার জন্য বিভিন্ন বিধানসভার তথ্য নিয়ে নাড়াঘাটা করতে গিয়ে যে তথ্যটি চমকে দিয়েছিল – তা হল, বামেদের ভোট রামেদের বাক্সে যাওয়ার প্রবণতা! এই প্রবণতা গত পঞ্চায়েত নির্বাচন থেকেই প্রবল ভাবে দেখা যাচ্ছিল, আর এবারের লোকসভা নির্বাচনের আগের সমীক্ষায় উঠে আসছিল – বামেদের হিন্দু ভোটের একটা বিশাল অংশ চলে যেতে পারে বিজেপির দিকে। কারণ হিসাবে বামেদের নিচুতলার কর্মীদের কাছ থেকে উঠে আসছিল নিজেদের ‘এক্সিস্টেন্স’ সংক্রান্ত এক বড় সমস্যার কথা।

বামেদের নীচুতলার বক্তব্য ছিল খুব স্পষ্ট, লোকসভা নির্বাচন কেন্দ্রের সরকার গঠনের জন্য। সেখানে বামেদের সরকার গড়ার কোনো সম্ভবনা নেই, আর থাকলেও ‘জ্যোতিবাবুর মত ঐতিহাসিক ভুল’ করার মত সম্ভাবনাই বেশি। উল্টোদিকে, রাজ্যে তৃণমূলের ‘সর্বগ্রাসী আগ্রাসনের’ জন্য আগামী দিনে হয় দল ছাড়তে হবে, না হলে রাজনীতি থেকে সন্যাস নিতে হবে! এদিকে বিগত বিধানসভা নির্বাচনের পর থেকেই প্রমাণিত, বাম বা কংগ্রেসের টিকিটে জেতা জনপ্রতিনিধিদের পরবর্তী গন্তব্য যেন ঘাসফুল শিবির বলে ঠিকই হয়ে আছে। তা বলে মতবাদের দিক থেকে চূড়ান্ত বিপরীতধর্মী বিজেপিকে ভোট কি করে দেবেন বামপন্থীরা?

বাম-কর্মী বা সমর্থকদের বক্তব্য ছিল, ভোটটা শুধু দেব, দল পরিবর্তন করে বিজেপিতে নাম তো লেখাবো না! আরও স্পষ্ট করে বললে, বামেদের হিসেবে ছিল, লোকসভা নির্বাচনে নিজেদের ভোট যদি গেরুয়া শিবিরে ‘শিফট’ করে, তাহলে তৃণমূলের হার নিশ্চিত। আর তৃণমূলের আসন সংখ্যা যদি রাজ্যে ব্যাপকভাবে কমে যায় – তাহলে দলে ভাঙন নিশ্চিত, যে দক্ষিণপন্থী নেতাদের পরবর্তী গন্তব্য বিজেপি হওয়াটাই স্বাভাবিক। সেক্ষেত্রে, বিধানসভা নির্বাচনে, শক্তির দিক থেকে তৃণমূল একেবারে তৃতীয় স্থানে নেমে যেতে পারে – আর লড়াইটা হবে সরাসরি দুই বিপরীত ভাবধারার দল বামফ্রন্ট ও বিজেপির মধ্যে।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

এই আশঙ্কাটা করেছিলেন স্বয়ং তৃণমূল নেত্রীও – আর তাই, প্রায় প্রতিটা জনসভাতেই তিনি বামেদের লাল জামা ছেড়ে গেরুয়া জামা পড়া নিয়ে তোপ দাগছেন! কিন্তু এত কিছুর পরেও আশঙ্কা ছিল – বামপন্থীরা যেরকম গোঁড়া, সেক্ষেত্রে এই ‘ভোট শিফট’ কতটা দিনের আলো দেখবে? কিন্তু সম্প্রতি বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত বর্ধমান-দুর্গাপুর নিয়ে বামেদের করা নিজস্ব সমীক্ষা। সেখানে দেখা যাচ্ছে আভাস রায়চৌধুরীর মত দাপুটে ও স্বচ্ছ ভাবমূর্তির প্রার্থী দেওয়া সত্ত্বেও বিপুল পরিমানে বাম ভোট রামদের দিকে গেছে। ইতিমধ্যেই এই প্রবণতা সামাল দিতে আসরে নেমে পড়েছেন আলিমুদ্দিন স্ট্রিটের কর্তারা।

কিন্তু, তারপরেও বাম শিবিরের মনের মধ্যে শঙ্কা, আভাস রায়চৌধুরীর মত প্রার্থীকেও যেখানে দলীয় মত অগ্রাহ্য করে কর্মী-সমর্থকরা ভোট না দিয়ে পদ্মফুলে ভোট দিচ্ছে নির্দ্বিধায়, তাহলে রাজ্যের বাকি আসনে কি হবে? বিশেষ করে চিন্তা বাড়ছে পরের দুই দফা নিয়ে যেখানে ভোট হবে – জঙ্গলমহল, রাঢ়বঙ্গ ও দক্ষিণ ২৪ পরগনার মত একদা বামেদের শক্তঘাঁটিতে। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনেই দেখা গেছে এইসব জায়গায় প্রবলভাবে উত্থান হচ্ছে পদ্মশিবিরের। সেই প্রবণতাকে আরও এগিয়ে নিয়ে গিয়ে যদি লোকসভায় তা আরও গতিপ্রাপ্ত হয় তাহলে অনেক হিসেবই কিন্তু উল্টে যাবে।

আর তাই ইতিমধ্যেই সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি প্রচারে এসে পাখি পড়া করে দলীয় কর্মীদের এই প্রবণতা থেকে দূরে থাকার অনুরোধ করে গেছেন। দলের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র সহ বিমান বসু বা মহম্মদ সেলিমের মতো বাংলার পলিটব্যুরো সদস্যরাও দলীয় কর্মী-সমর্থকদের রুখতে মরিয়া। আর এবার শেষ চেষ্টা হিসাবে মানিক সরকার, বৃন্দা কারাতদের মতো দলের শীর্ষস্থানীয় নেতানেত্রীরাও সেই বার্তা দিতে চলেছেন। যদিও তাঁদের এই আবেদন নিচুতলার কর্মী-সমর্থকরা কতটা শেষমেশ কানে তুলবে, সে ব্যাপারে যথেষ্ট সন্দিহান খোদ নেতৃত্বই। ফলে, সবমিলিয়ে হাসি ক্রমশ চওড়া হচ্ছে মুরলীধর সেন লেনের কর্তাদের মুখে।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!