এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > দল ছেড়ে প্রাক্তন বিধায়ক তৃণমূলে, তবুও আঁকড়ে রয়েছেন পদ! বড় পদক্ষেপ নিতে চলেছে বামফ্রন্ট

দল ছেড়ে প্রাক্তন বিধায়ক তৃণমূলে, তবুও আঁকড়ে রয়েছেন পদ! বড় পদক্ষেপ নিতে চলেছে বামফ্রন্ট

বঙ্গ রাজনীতির আঙিনায় দলবদল খোলামকুচি ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। মুড়ি-মুড়কির মত হামেশাই কখনও বিজেপি নেতা তৃণমূল হয়ে যাচ্ছে, কখনও তৃণমূল নেতা বিজেপি, আবার কখনও বা বামফ্রন্ট তৃণমূল হয়ে যাচ্ছে। কখনও আবার কংগ্রেস বিজেপিতে চলে যাচ্ছে। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই চোখে পড়ছে এক দল থেকে অন্য দলে গেলেও পদ ছাড়তে চাইছেন না কিছু কিছু নেতা। আর সেরকমই একটা নিদর্শন দেখা গেল শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদে। দলত্যাগ করলেও বামফ্রন্ট পরিচালিত এই মহাকুমা পরিষদে নিজের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ পদ দখল করে বসে রয়েছে ছোটন কিস্কু।

জানা যায়, প্রায় বছর খানেক আগে তিনি বামফ্রন্ট ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। কিন্তু চেয়ারের মায়া ত্যাগ করতে না পেরে পূর্ত কর্মাধ্যক্ষের পদে বসে রয়েছেন। কিন্তু আশ্চর্যজনকভাবে এতদিন পর্যন্ত তাকে পদ থেকে সরাতে কোনরকম পদক্ষেপ গ্রহণ করেননি সংখ্যাগরিষ্ঠ বামফ্রন্ট। সমগ্র পরিস্থিতি নিয়ে বর্তমানে মহাকুমায় রাজনীতি উত্তপ্ত হতে শুরু করেছে। তবে এই ব্যাপারে অবশ্য শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদের বিরোধী দল তৃণমূল বলছে, জনগণের দ্বারা নির্বাচিত হয়ে আসা প্রতিনিধিরাই মহকুমা পরিষদ পরিচালনা করছে।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, কৃষিনির্ভর এবং চা বাগানে ঘেরা ফাঁসিদেওয়া ব্লকে অত্যন্ত পরিচিত মুখ ছোটন বাবু। স্থানীয়দের মতে, সিপিএমের ঝান্ডা ধরেই তার রাজনৈতিক জীবনের শুরু। 1999 থেকে 2004 সাল পর্যন্ত তিনি গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য ছিলেন। মহকুমা পরিষদের সহকারী সভাধিপতিও ছিলেন। 2006 থেকে শুরু করে 2011 সাল পর্যন্ত ছিলেন বিধায়ক। আবার 2015 সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনে ফের মহকুমা পরিষদের 7 নম্বর আসন থেকে সিপিএমের দলীয় টিকিটে জয়ী হয়ে আসেন তিনি।

আর এরপরই মহকুমা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ মনোনীত করা হয় তাকে। কিন্তু এই বোর্ড গঠনের আড়াই বছরের মাথায় তিনি সিপিএমের সংসর্গ ত্যাগ করে তৃণমূলের ঝান্ডা কাঁধে তুলে নেন। বর্তমানে আদিবাসী এই নেতা তৃণমূলের কিষান ক্ষেতমজুর সেলের জেলা সভাপতির মত গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করছেন। কিন্তু আশ্চর্যজনকভাবে বামফ্রন্ট পরিচালিত শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ পদে তিনি এখনও রয়েছেন।

এদিন এই বিষয়ে মন্তব্য করতে ছোটনবাবু বলেন, “মহুকুমা পর্ষদের শাসকগোষ্ঠী আমাকে পদ থেকে সরিয়ে দিতে পারে। কিন্তু যতদিন তারা তা না করছে, ততদিন জনগণের উন্নয়নের স্বার্থে ওই পদের দায়িত্ব আমি পালন করব। গোটা বিষয়টি আমাদের দলের জেলা এবং রাজ্য নেতৃত্ব জানে। তারা যদি নির্দেশ দেন তাহলে আমি পদ থেকে ইস্তফা দেব।” উল্লেখ্য, এই শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদের মোট আসন নয়টি।

গত পঞ্চায়েত ভোটে সিপিএম পাঁচটি, ফরওয়ার্ড ব্লক একটি এবং তৃণমূল তিনটি আসন দখল করে। পরবর্তীকালে সিপিএমের সঙ্গ ত্যাগ করে পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ তৃণমূলে যোগদান করে। তারপরই তৃণমূলের সদস্য সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে চারজন এবং বামফ্রন্টের সদস্য সংখ্যা 5 জন। তবে এর বাইরে মহকুমা পরিষদের এক্স অফিস ও মেম্বার সংখ্যা 7 জন। দুই জন বিধায়ক, চারজন পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি এবং একজন সাংসদ সদস্য। তাই নির্বাচিত এক্স অফিস ও মেম্বার মিলিয়ে বামফ্রন্টের সদস্য সংখ্যা 6 জন এবং তৃণমূলের সদস্য সংখ্যা 7 জন এবং বিজেপির একজন সাংসদ পদাধিকারবলে সদস্য। কংগ্রেসের দুইজন বিধায়ক সদস্য রয়েছে।

তাই রাজনৈতিক মহলের মতে, বামফ্রন্ট কংগ্রেসের সহযোগিতা নিয়ে পূর্ত কর্মাধ্যক্ষকে যখন-তখন পদ থেকে অবসান করতে পারে। আবার মহুকুমা পর্ষদের সমস্ত স্থায়ী সমিতি দখল করার চেষ্টাও চালাতে পারে তৃণমূল। কারন নির্বাচিত এক্স অফিসার ও মেম্বার মিলিয়ে তৃণমূল এই পরিষদে সংখ্যাগরিষ্ঠ। কাজেই দুই পক্ষই কার্যত বোঝাপড়ার মধ্যে দিয়ে পরিষদ চালাচ্ছেন।

এদিন এই বিষয়ে মহুকুমা পর্ষদের সভাধিপতি সিপিএমের তাপস সরকার জানান, সকলেই জনতার ভোটে নির্বাচিত। তাই সকলকে মর্যাদা দিয়েই মহকুমা পরিষদ পরিচালনা করছি। এর পিছনে অন্য কোনো বিষয় নেই। অন্যদিকে এই ব্যাপারে মহকুমা পরিষদের বিরোধী দলনেতা তৃণমূলের কাজল ঘোষের গলাতেও একই সুর। তিনি বলেন, আলোচনার মাধ্যমে গ্রামের উন্নয়নমূলক কাজ করা হচ্ছে। এই নিয়ে বিতর্কের কিছু নেই। তাই সব কিছু মিলিয়ে তৃণমূলের একটি অঘোষিত আঁতাত যে শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদের পরিলক্ষিত হচ্ছে, তা নিয়ে প্রায় একমত সব রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!