এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > উত্তরবঙ্গ > হেভিওয়েট বিরোধী বিধায়কের বাড়িতে তৃণমূল নেতা, জোর জল্পনা রাজ্যে!

হেভিওয়েট বিরোধী বিধায়কের বাড়িতে তৃণমূল নেতা, জোর জল্পনা রাজ্যে!

 

সৌজন্যের রাজনীতি বঙ্গ রাজনীতিতে একসময় প্রাসঙ্গিক হলেও, বর্তমানে রাজনৈতিক দলের নেতাদের দলবদল করার হিড়িক দেখে রাজনৈতিক সৌজন্যে রাজনৈতিক শাসক-বিরোধী নেতাদের একে অপরের বাড়িতে যাতায়াত রীতিমতো জল্পনার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। যার জেরে বর্তমানে শাসক দলের কোনো নেতা বিরোধী দলের কোনো হেভিওয়েট জনপ্রতিনিধি অথবা দলীয় নেতৃত্বের সঙ্গে দেখা করলে বাড়িতে গেলেই এমনকি কথা বললে পর্যন্ত দলবদল করার সম্ভাবনা উঠতে শুরু করে সর্বত্র।

আর তাই সম্প্রতি জলপাইগুড়ি জেলার হেভিওয়েট কংগ্রেস বিধায়ক ডক্টর সুখবিলাস বর্মার বাড়িতে হঠাৎ করেই তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা দুলাল দেবনাথের আগমন বর্তমানে জল্পনার সৃষ্টি করেছে। রাজনৈতিক মহলের অন্দরে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, হঠাৎ করেই বিরোধী দলে থাকা বিধায়কের বাড়িতে কেন যেতে গেলেন শাসকদলের এই প্রভাবশালী নেতা! এবার কি আগত পৌরসভা নির্বাচনের প্রার্থী কংগ্রেস বিধায়ক সুখবিলাস বর্মাকে শাসক দলে সামিল করতে চাইছে ঘাসফুল শিবির!

যদিও একটি রাজনৈতিক দলের নেতার অন্য একটি রাজনৈতিক দলের নেতৃত্বের বাড়িতে যাওয়া নিয়ে এরকম জল্পনা ওঠানোর কোনোরকম নৈতিক যৌক্তিকতা নেই। তবুও রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে, পশ্চিমবঙ্গে ক্ষমতায় আসার পর থেকেই একাধিকবার কংগ্রেস থেকে শুরু করে বামফ্রন্ট বিভিন্ন শিবিরে থাবা বসিয়েছে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

এক্ষেত্রে অভিযোগ উঠেছে, কখনও ভয় দেখিয়ে, কখনও আবার অর্থনৈতিক প্রলোভন দেখিয়ে বিরোধী রাজনৈতিক দলের বিধায়ক থেকে শুরু করে কাউন্সিলর, পঞ্চায়েত সদস্য থেকে শুরু করে জেলা পরিষদ সদস্য সকলকে শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসে অন্তর্ভুক্ত করেছে তৃণমূল শিবিরের নেতারা। আর সেই কারণেই বর্তমানে তৃণমূল নেতারা বিরোধী দলের জনপ্রতিনিধিদের বাড়িতে গেলে উঠতে শুরু করে নানান রকমের প্রশ্ন। তবে রাজনৈতিক মহল যে প্রশ্নই তুলুক না কেন, কংগ্রেস বিধায়ক ডক্টর সুখবিলাস বর্মা কিন্তু এই সাক্ষাৎকারকে শুধুমাত্র সৌজন্য সাক্ষাতকার বলেই অভিহিত করেছেন।

স্থানীয় সূত্রে খবর, কংগ্রেস বিধায়কের জলপাইগুড়ি তেলিপাড়া শহর এলাকায় অবস্থিত ফ্ল্যাটে হাজির হয়েছিলেন তৃণমূল কংগ্রেস নেতা দুলাল দেবনাথ। শুধু তাই নয়, বাড়িতে উপস্থিত হয়ে কংগ্রেস বিধায়কের হাতে ফুলের তোড়া, স্মারকগ্রন্থ এবং দুইটি পুস্তক তুলে দিতে দেখা যায় দুলাল দেবনাথকে। তৃণমূল কংগ্রেসের হেভিওয়েট নেতা হওয়ার পাশাপাশি দুলাল দেবনাথ কিন্তু তৃণমূল কিসান ক্ষেতমজুর সংগঠনের জেলা সভাপতি এবং জেলা পরিষদের সহকারি সভাধিপতিও বটে।

আর সেই কারণেই এহেন শাসক দলের নেতার কংগ্রেস বিধায়কের বাড়িতে আগমন কিছুটা বাড়তি জল্পনা তৈরি করে দিয়েছে স্থানীয় এলাকায়। তবে এদিনের সাক্ষাতের পরে তৃণমূল নেতা দুলাল দেবনাথ অবশ্য সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বলেন, “আমি 2009 সাল থেকে বিধায়ক ডক্টর সুখবিলাস বর্মার সান্নিধ্যে রয়েছি।” সুখবিলাস বর্মা সম্পর্কে কিছুটা প্রশস্তি করেই দুলালবাবু বলেন, “উত্তরবঙ্গের রাজবংশী সম্প্রদায়ের মধ্যে তিনি দ্বিতীয় আইএস অফিসার হয়েছিলেন। বিগত দিনে পশ্চিমবঙ্গের প্রয়াত প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসুর আমলে একজন সৎ এবং নিষ্ঠাবান আইএস অফিসার হিসেবে নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করেছেন সুখবিলাসবাবু। এছাড়াও উত্তরবঙ্গের ভাওয়াইয়া গবেষক এবং গায়ক হিসেবে তার সুনাম রয়েছে। পরনিন্দা পরচর্চা থেকেও দূরেই থাকেন তিনি। সবকিছু মিলিয়ে উত্তরবঙ্গের একজন গর্বের মানুষ তার সান্নিধ্য আমার কাছে অনেক সৌভাগ্যের।”

দুলালবাবুর তরফ থেকে এদিন আরও বলা হয়, “ওনার কাছে আসার কারণ, তার কাছ থেকে কিছু প্রশাসনিক বিষয়ে পরামর্শ নেওয়া।” কিন্তু প্রশাসনিক বিষয়ে পরামর্শ নেওয়ার কথাটাই বিশেষ করে জল্পনার তৈরি করেছে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মধ্যে। যদিও দুলালবাবুর তরফ থেকে বলা হয়, ডক্টর সুখবিলাস বর্মার স্ত্রীকে আমি মা বলে সম্বোধন করি। অন্যদিকে সুখবিলাসবাবুর পক্ষ থেকেও এই সাক্ষাতকারকে পারিবারিক এবং সৌজন্যমূলক সাক্ষাৎকার বলা হয়। তিনি বলেন, “আমার সঙ্গে কারও খারাপ সম্পর্ক রয়েছে, তা আমি মনে করতে পারি না। তৃণমূল কংগ্রেসের অনেক নেতার সঙ্গে ভালো সম্পর্ক রয়েছে আমার। কিন্তু কারও কাছ থেকে কখনও কোনো সুযোগ-সুবিধা নিয়েছি, এমন দাবি কেউ করতে পারবে না।”

তিনি আরও বলেন, “দুলাল দেবনাথের সঙ্গে একটা হৃদয়ের সম্পর্ক রয়েছে। দুলাল অনেকটা পরিবারের সদস্যের মতনই। আমার স্ত্রীকে মা বলে সম্বোধন করে।” তিনি আরও জানিয়েছেন, দুলাল আমার জন্য ফুল-মিষ্টি ডায়রি এনেছে। জলপাইগুড়ির শতবর্ষের স্মারকগ্রন্থ নিয়ে এসেছে।” কিন্তু কংগ্রেস বিধায়ক এবং তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা যাই বলুন না কেন, রাজনৈতিক মহলে কিন্তু রীতিমতো সারা ফেলে দিয়েছে এই বৈঠক। কংগ্রেস বিধায়কের কাছে প্রশাসনিক বিষয়ে কি পরামর্শ নিতে এসেছেন তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা পরিষদের সহকারি সভাধিপতি! এই প্রশ্ন ঘুরপাক খেতে শুরু করেছে ওয়াকিবহাল মহল জুড়ে। এখন এই সাক্ষাৎকারের ভবিষ্যৎ শুধুমাত্র পারিবারিক সাক্ষাৎকার হয়ে থেকে যায় নাকি কোনো রাজনৈতিক ফলাফল বের হয়! সেদিকে অবশ্যই লক্ষ্য থাকবে সকলের।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!