তৃণমূল বিধায়কের ডাকা সালিশিসভায় মারামারিতে এক পক্ষের মাথা ফাটালো অন্যপক্ষ! কলকাতা নদীয়া-২৪ পরগনা রাজ্য September 9, 2019 সমস্যা সমাধানের জন্য সালিশি সভা ডাকা হয়েছিল। কিন্তু সমাধান তো দূর অস্ত, উল্টে বিবাদ এমন জায়গায় পৌঁছল যে তা হাতাহাতিতে রূপান্তরিত হল। বস্তুত, জমি সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে শাসকদলের অনুগত দু’টি পক্ষকে বসিয়ে মিটমাট করে দেওয়ার জন্য এদিন একটি সালিশি সভা ডেকেছিলেন বারুইপুর পূর্বের তৃণমূল বিধায়ক নির্মল মণ্ডল। জানা যায়, সেই বৈঠকে কার্যত পুলিসের সামনেই জমি দখলকারীদের একাংশ দলবল নিয়ে প্রকৃত জমির মালিক সুনীল নস্কর ও তাঁর আত্মীয় ইন্দ্রজিৎ কয়ালের উপর বাঁশ, লাঠি নিয়ে হামলা চালায়। বেশ কয়েকটি করা মোটরবাইকও ভাঙচুর করা হয়। আর এতেই প্রবলভাবে মারাত্মক জখম হন ইন্দ্রজিৎ কয়াল। হামলায় তার মাথা ফেটে গেছে।। পরে পুলিসের এক অফিসার ইন্দ্রজিতবাবুকে পালাতে সাহায্য করেন। আর শাসকদলের বিধায়ক এবং নেতাদের উপস্থিতিতে এমন হামলার ঘটনায় তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছে এলাকায়। অনেকেরই প্রশ্ন তৃণমূলের বিধায়ক এবং নেতাদের ডাকা হয়েছিল জমি সংক্রান্ত বিবাদে সমস্যার সমাধানের জন্য কিন্তু তারা উপস্থিত হওয়া সত্তেও এই সালিশি সভায় কীভাবে দলের অনুগত লোকজন হামলা করার সাহস পেল! এই ব্যাপারে যখন বিভিন্ন মহলে গুঞ্জন ছড়িয়েছে, ঠিক তখনই এই গোটা ঘটনাটি অস্বীকার করতে দেখা গেছে তৃণমূল বিধায়ক নির্মল মণ্ডলকে। এদিন তিনি বলেন, “ঘটনাটি দুর্ভাগ্যজনক। আসলে আচমকা বাইরে থেকে কয়েকজন এসে হামলা করায় তা ঠেকানো যায়নি। তবে ওই ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য পুলিসকে বলা হয়েছে।” অন্যদিকে শ্যামসুন্দরবাবু বলেন, “জমির মালিক ও সেখানে যারা দখল করেছে বলে অভিযোগ, উভয়ই তৃণমূলের অনুগত। যদিও এর সঙ্গে রাজনীতির কোনও সম্পর্ক নেই। পুরোটাই জমিগত বিবাদ। গোলমাল যাতে বড় আকার না নেয়, সেই কারণে বারুইপুর পশ্চিম কেন্দ্রের বিধায়ক ও স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে ওই সালিশি সভা ডাকা হয়েছিল। তবে এখনও চেষ্টা হচ্ছে, যাতে বিষয়টি মিটমাট করা যায়।” আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, বেশ কিছুদিন আগে বারুইপুরের শাঁখারিপুকুরে প্রায় আট বিঘা জমি কিনে রেখেছিলেন কেন্দ্রীয় সরকারের অবসরপ্রাপ্ত আধিকারিক সুনীল নস্কর। এদিন তিনি বলেন, “জমিটি ঘিরে বাগান করার জন্য গাছ লাগানো হয়েছিল। আচমকা সেই জমির গাছপালা কেটে তা মাঠ বলে ঘোষণা করে দেয় স্থানীয় একটি ক্লাবের ছেলেরা। ওই জমির সমস্ত নথিপত্র রয়েছে। আমার কেনা জমি। এখন সেখানকার লোকজন তা দখল করে নিয়েছে। এ নিয়ে পুলিস, প্রশাসন থেকে নবান্ন পর্যন্ত গিয়েছি। তার পরিপ্রেক্ষিতে নবান্ন থেকে বারুইপুর পুলিস কর্তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়।” অন্যদিকে এই গোটা বিষয়টি জানানো হয় বারুইপুর পশ্চিমের বিধায়ক বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়কেও। আর তার পরিপ্রেক্ষিতেই সব পক্ষের মতামত নিয়ে শনিবার বিষয়টি মিটমাট করার জন্য শাখারিপুকুরে সালিশি সভার আয়োজন করেন বিধায়ক নির্মল মণ্ডল। ডাকা হয়েছিল জমি দখলকারী ও মালিক উভয় পক্ষকে। শনিবার বিকেলে আলোচনা চলার সময় আচমকা সেখানে হামলা চলায় প্রবল প্রশ্ন উঠতে শুরু করল। এদিন এই সালিশী সভায় আহত ইন্দ্রজিৎ কয়াল বলেন, “বিধায়ক ও দলের নেতাদের সামনে একেবারে খুন করে দেওয়ার চেষ্টা করেছিল। মাথায় সেলাই হয়েছে। তাঁর কথায়, ঘটনার সময় পুলিসের এক অফিসার পালানোর ব্যবস্থা না করলে বেঁচে ফিরতাম না।” আপনার মতামত জানান -