সাধনকে দল থেকে তাড়ানোর দাবিতে 15 হাজার লোক নিয়ে আন্দোলনের হুমকি হেভিওয়েট তৃণমূল বিধায়কের কলকাতা রাজ্য May 29, 2020 সম্প্রতি ভয়াবহ দুর্যোগের সাক্ষী থেকেছে কলকাতা। আমপানের মত ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড় সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ পরিষেবাকে কার্যত বিপর্যস্ত করে দিয়েছে। রাস্তায় বড় বড় গাছ পড়ায় বিদ্যুৎ থেকে শুরু করে পানীয় জল পরিষেবা সম্পূর্ণরূপে বিচ্ছিন্ন। আর এই অবস্থায় সম্প্রতি কলকাতার বিভিন্ন ওয়ার্ডে পরিষেবা স্বাভাবিক না হওয়ায় নিজের মন্ত্রিসভায় গুরুত্বপূর্ণ সদস্য তথা কলকাতা পৌরসভার প্রশাসক ফিরহাদ হাকিমের বিরুদ্ধে সরব রাজ্যের মন্ত্রী তথা হেভিওয়েট তৃণমূল নেতা সাধন পান্ডে। যেখানে আগে থেকে বার্তা দেওয়া সত্ত্বেও কেন কলকাতা পৌরসভা ঠিকমতো কাজ করতে পারছে না, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তিনি। আর এরপরই ফিরহাদ হাকিমের পক্ষ থেকে পাল্টা সেই সাধন পান্ডেকে কটাক্ষ করা হয়। অবশেষে সম্প্রতি সাধনবাবুকে ফিরহাদ হাকিমের বিরুদ্ধে মন্তব্য করবার জন্য দলের তরফে শোকজ করা হয়েছে। যার জন্য কিছুটা হলেও চাপে রয়েছেন সাধনবাবু। আর এই পরিস্থিতিতে এবার সাধন পান্ডের দীর্ঘদিনের প্রতিদ্বন্দ্বী তৃণমূলের আরেক হেভিওয়েট বিধায়ক পরেশ পাল এবার সাধন পান্ডের বিরুদ্ধে সরব হলেন। যেখানে সাধন পান্ডেকে দল থেকে তাড়ানোর দাবি তুলে আন্দোলনে নামার হুঁশিয়ারি দিলেন বেলেঘাটা তৃণমূল বিধায়ক পরেশ পাল। সূত্রের খবর, এদিন একটি সাংবাদিক বৈঠক করে পরেশবাবু বলেন, “লকডাউন চলছে বলে পারছি না। লকডাউন উঠলেই 15 হাজার লোক নিয়ে রাস্তায় নামব। ওকে দল থেকে তাড়াতে হবে।” আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - এদিকে সাধনবাবুর বিরুদ্ধে পরেশবাবু এই মন্তব্য করার পাশাপাশি আরও বেশ কিছু মন্তব্য করে বসেন। এদিন তিনি আরও বলেন, “ওতো রাস্তায় ছবি তুলতে নেমেছিল। যাকে ধরতে চারটে লোক লাগে, সে আবার করাত দিয়ে গাছ কাটছে।” এদিন সাধন পান্ডেকে টাটার দালাল বলেও অভিহিত করেন পরেশ পাল। পাশাপাশি সাধনবাবুর রাজনৈতিক ক্যারিয়ার নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি। বেলেঘাটার তৃণমূল বিধায়ক বলেন, “শশী পাঁজা, অতীন ঘোষ, শান্তনু সেন সহ সবার সঙ্গে ওর গন্ডগোল। কাঠি ছাড়া ও কিছু জানে না। পেছনে লেগে লেগে অজিত পাঁজাকে মেরে ফেলেছে। ও যখন কংগ্রেস করত, তখনও সবার পেছনে লাগত। কখনও বরকতদা, কখনও প্রনব মুখোপাধ্যায়, কখনও সোমেন মিত্র, এমনকি কাজের মানুষ সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের পেছনেও লাগতে ছাড়েনি।” অর্থাৎ সাধনবাবুর প্রবল বিরোধী হিসেবে পরিচিত তৃণমূল বিধায়ক পরেশ পাল এদিন সেই সাধন পান্ডের বিরুদ্ধে একগুচ্ছ অভিযোগ তুলে সরব হলেন। আর এখানেই রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সাধন পান্ডে ফিরহাদ হাকিমের বিরুদ্ধে মন্তব্য করে শৃঙ্খলা ভঙ্গ করেছেন, এই অভিযোগ তুলে তৃণমূলের তরফে তাকে শোকজ করা হয়েছে। কিন্তু এবার সেই একই দোষে দুষ্ট হয়ে যেভাবে পরেশ পাল সাধন পান্ডেকে আক্রমণ করলেন, তাতে তৃণমূলের ভেতরকার অনৈক্য কি প্রকাশ্যে চলে এল না! এবার কি তাহলে সাধন পান্ডের মত পরেশ পালের ক্ষেত্রেও কড়া মনোভাব পোষণ করতে দেখা যাবে তৃনমূল কংগ্রেসকে? নাকি গোটা ঘটনাকে হালকাভাবেই নেবে শাসক দল! রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, লোকসভা নির্বাচনের পরেই প্রমাণিত শাসকদলের ঐক্যে অনেক বড় চিড় ধরে গেছে। যে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বকে এতদিন চেপে রাখা হয়েছিল, তাই কার্যত তৃণমূলের আধিপত্যে বড়সড় থাবা বসিয়েছে। আর বর্তমানে যত দিন যাচ্ছে – এবার তৃণমূলের প্রথম সারির নেতাদের সেই মতানৈক্য আরও প্রবলভাবে সামনে এসে যাচ্ছে। পরিস্থিতি কোনদিকে গড়ায়, তার দিকেই নজর থাকবে রাজনৈতিক মহলের। আপনার মতামত জানান -