এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > তৃণমূল পরিচালিত পুরসভায় টেন্ডারে প্রায় ৫০ কোটি টাকার দুর্নীতির আশঙ্কা, মুখ্যমন্ত্রীর দপ্তরের নির্দেশে তদন্ত শুরু

তৃণমূল পরিচালিত পুরসভায় টেন্ডারে প্রায় ৫০ কোটি টাকার দুর্নীতির আশঙ্কা, মুখ্যমন্ত্রীর দপ্তরের নির্দেশে তদন্ত শুরু

এবার ৪৭ কোটি টাকার চারটি প্রকল্পের বরাত অবাধে একটি ঠিকাদার সংস্থাকে পাঠয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠল তৃণমূল পরিচালিত বহরমপুর পুরসভার এক ইঞ্জিনিয়ারের বিরুদ্ধে। এই দুর্নীতিমূলক কর্মকান্ডে এক প্রভাবশালী প্রাক্তন কাউন্সিলরের যোগসূত্র রয়েছে বলেও অভিযোগ রয়েছে। এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই ব্যাপক শোরগোল পড়ে গিয়েছে এলাকায়।

প্রসঙ্গত,এ ব্যাপারে গত ১ অক্টোবর এই ইস্যু সংক্রান্ত অভিযোগটি দাখিল হয়েছিল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে। তাতে সাফ উল্লেখ করা হয়েছে,একটি ঠিকাদার সংস্থা একচেটিয়াভাবে চারটি বড়সড় প্রকল্পের কাজের দায়িত্ব পেয়েছে। এর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ একটি হল-২৫ কোটি টাকা বরাদ্দে ‘অম্রুত’ প্রকল্পের ড্রেন তৈরি৷

এছাড়াও শহরের বাইরে বিভিন্ন এলাকায় ১০কোটি টাকায় জলের পাইপ পাতা, গ্রিন সিটি মিশনের বরাদ্দ ৫কোটি টাকায় ওয়াটার এটিএম কাউন্টার তৈরি এবং কর্মতীর্থ প্রকল্পে ৭কোটি টাকায় মার্কেট কমপ্লেক্স নির্মাণ সেই তালিকায় রয়েছে। ই-টেন্ডারের আমলে শুধুমাত্র একটি ঠিকাদার সংস্থা কীভাবে এতোগুলি কাজের বরাত পেল?

তা নিয়ে স্বাভাবিক প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। নজরে দেওয়ার মতো বিষয় হল,সংস্থা আসলে কোথাকার সে ব্যাপারে কেউ স্পষ্ট ধারণা দিতে পারছেন না। কারো মতে ওই সংস্থা বারাসাত চত্বরের আবার কেউ বলছেন ওগুলো আশেপাশের জেলার। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দপ্তরের নির্দেশে এবার মুর্শিদাবাদ জেলা প্রশাসন এ ব্যাপারে তদন্তে নেমেছে বলে জানা গিয়েছে।

প্রশাসনিক সূত্রের খবর,গত ডিসেম্বর মাস থেকেই রাজ্যসরকারের নির্দেশে বহরমপুর পুরসভায় প্রশাসক নিয়োগ করা হয়েছে। উক্ত অভিযোগে এবার তদন্তের খাতিরে সক্রিয় হয়ে উঠেছে প্রশাসন। সিংহভাগ প্রকল্পের দরপত্র বা টেন্ডার নিয়ে এরকম অনিয়ম হয়েছে বলে অভিযোগ। এরং এর নেপথ্যে পুরসভারই এক ইঞ্জিনিয়ার রয়েছে বলে খবর রয়েছে।

তিনি বহুদিন ধরেই বিভিন্ন সংস্থার দক্ষতা এবং অভিজ্ঞতার জাল শংসাপত্র তৈরি করে দেন। এবং তাকে এই কাজে সহায়তা করেন পুরসভারই এক প্রাক্তন প্রভাবশালী কাউন্সিলর। এঁদের পছন্দের তালিকাবহির্ভূত অন্যকোনো ঠিকাদার সংস্থা দরপত্রে অংশ নিলেই তাকে বাতিল করে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ রয়েছে। এবং এই সম্পূর্ণ কর্মকান্ড পুরসভা নিয়মভঙ্গ করেই হয়েছে বলে জানায় অভিযোগকারী।

 

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

এছাড়া সরকারি নিয়ম মেনে পুরসভার টেন্ডার কমিটি গঠন করা হয়নি বলেও অভিযোগ রয়েছে। এই অভিযোগপত্র মুখ্যমন্ত্রীর দপ্তরে পৌছাতেই নড়েচড়ে বসে প্রশাসন। তিনি কালবিলম্ব না করে এই দুর্নীতি রুখতে তদন্ত কমিটি গড়ার এবং অভিযুক্তদের চিহ্নিত করার প্রক্রিয়া শুরু করতে নির্দেশ দেন পুরসভার প্রশাসককে।

মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ পেয়েই তদন্তকার্য শুরু করেছেন বহরমপুর পুরসভার প্রশাসক তথা বহরমপুরের মহকুমা শাসক দীপাঞ্জন মুখোপাধ্যায়। এবং এব্যাপারে দুর্নীতিবাজদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়ার আশ্বাসও দিয়েছেন তিনি।

উল্লেখ্য, পুরসভায় এধরণে অপ্রত্যাশিত অভিযোগের খবর সামনে আসতেই রীতিমতো গুঞ্জন শুরু হয় বিগত পুরবোর্ডের কয়েকজন সদস্য, ইঞ্জিনিয়ার ও অফিসারদের মধ্যে। তবেপুরসভায় অনিয়মের অভিযোগ মানতে চাইলেন না প্রাক্তন পুরচেয়ারম্যান নীলরতন আঢ্য।

তাঁর বক্তব্য,”রাজ্য সরকারের নিয়ম মেনে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজ নিয়ে ই-টেন্ডার করা হয়েছে। তাতে অনেক ঠিকাদার সংস্থা অংশ নিয়েছে। যোগ্যতা ও দক্ষতা থাকায় একই সংস্থা একাধিক কাজ পেয়েছে। তাছাড়া, পুরসভায় টেন্ডার কমিটিও গড়া হয়েছিল। কাজেই ওই অভিযোগ ঠিক নয়।”

অন্যদিকে,যার বিরুদ্ধে এতো অভিযোগ সেই ইঞ্জিনিয়ারও এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়ায় নিজের বিরুদ্ধে যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করলেন। তিনি বললেন,পশ্চিমবঙ্গ সরকারের নিয়ম মেনেই পুরসভা ই-টেন্ডার করেছে। তারপর সেটি স্টেট লেভেল টেকনিক্যাল কমিটির কাছে পাঠানো হয়েছে।

তাঁদের সবুজ সংকেত পাওয়ার পরই কাজগুলোর বরাত ওই ঠিকাদার সংস্থাকে দেওয়া হয়েছে। তাছাড়া,তিনি যেহেতু পুরসভার টেন্ডার কমিটির সদস্য নন,তাই তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলা ঠিক নয় বলেও জানালেন তিনি। যাইহোক,লোকসভা ভোটের আগে তৃণমূল পরিচালিত পুরসভায় দুর্নীতিমূলক কর্মকান্ডের অভিযোগ ওঠায় রীতিমতো উদ্বেগে রয়েছে জেলা তৃণমূল কংগ্রেস। এর জেরে শাসকদলের ভাবমূর্তি নষ্ট হওয়ার আশঙ্কায় কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে তাঁদের,এমনটাই মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!