এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > তাপসী মালিককে ভুলেই গেছে তৃণমূল? মৃত্যুবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে তীব্র অস্বস্তি

তাপসী মালিককে ভুলেই গেছে তৃণমূল? মৃত্যুবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে তীব্র অস্বস্তি

 

বিগত বাম সরকারের আমলে সিঙ্গুর আন্দোলন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ক্ষমতার কাছাকাছি এনে দিয়েছিল। তবেই সিঙ্গুর আন্দোলন করতে গিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ক্ষেত্রে অনেক ঘাত-প্রতিঘাত এসেছে। যেখানে তাপসী মালিক নামে এক কিশোরীকে ধর্ষণ করে আগুনে পুড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল তৎকালীন বাম সরকারের ক্যাডারদের বিরুদ্ধে।

আর তারপরই সেই আন্দোলনকে আরও তীব্র থেকে তীব্রতর হিসেবে গড়ে তুলে 2011 সালে মুখ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তৃণমূল কংগ্রেসের সরকার প্রতিষ্ঠিত হওয়া এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে মুখ্যমন্ত্রী করার পেছনে তাপসী মালিক এবং তৃনমূলের যথেচ্ছ অবদান রয়েছে বলে দাবি করে রাজনৈতিক মহল। তবে এবার সেই তাপসী মালিকের মৃত্যুবার্ষিকীতে তাকে শ্রদ্ধা জানানো দূরস্ত, উল্টে নিজেদের গোষ্ঠী কোন্দলেই বেশি ডুবে থাকল তৃণমূল কংগ্রেস।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

জানা যায়, সিঙ্গুরের বারো হাত কালীতলায় যুবসংঘের মাঠে এই অনুষ্ঠানের দায়িত্বে ছিলেন সিঙ্গুরের তৃণমূল বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য। তবে তার সঙ্গে তৃণমূলের বিধায়ক তথা প্রাক্তন মন্ত্রী বেচারাম মান্নার দূর সম্পর্কের কথা কারোরই অজানা নয়। অভিযোগ, বেচারাম মান্না সেইভাবেই অনুষ্ঠানের দায়িত্বে না থাকায় তিনি এখানে জনসমাগম করেননি যার ফলে এ অনুষ্ঠানে অতটা ভিড় হতে দেখা যায়নি আর যা নিয়ে রীতিমতো হতাশার সৃষ্টি হয়েছে সিঙ্গুরে। যে সিঙ্গুর এবং তাপসী মালিকের উপর ভর করে ক্ষমতায় এল তৃণমূল, সেখানে নিজেদের গোষ্ঠী কোন্দলে কে বড় নেতা হবে! তা দেখাতে গিয়ে সেই তাপসী মালিককেই অশ্রদ্ধা করছে তারা বলে দাবি একাংশের।

বস্তুত, বিভিন্ন সময় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সিঙ্গুরের দুই নেতার দ্বন্দ্ব কমাতে কড়া বার্তা দিয়েছিলেন। কিন্তু তার পরেও সেই দ্বন্দ্ব যে কমেনি, তা তাপসী মালিকের মৃত্যু বার্ষিকীতেই প্রমাণ হয়ে গেল বলে মত বিশেষজ্ঞদের। এদিন এই প্রসঙ্গে অনুষ্ঠানের উদ্যোক্তা রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্যের ঘনিষ্ঠ নেতা মহাদেব দাস বলেন, “প্রাক্তন মন্ত্রী অনুষ্ঠানে লোক আনার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করেছিলেন বলে আমরা শুনেছি। এই বিষয়ে দলীয় সূত্রে খোঁজ নেওয়া হবে। যা ঘটেছে সবই জেলার শীর্ষ নেতৃত্বের সামনেই হয়েছে। ফলে আলাদা করে আর কিছু বলছি না। তবে বিকালের দিকে ভালো জমায়েত হয়েছিল।”

কিন্তু সত্যিই কি তাহলে তিনি অনুষ্ঠানের দায়িত্বে না থাকায় সেইভাবে এখানে লোক আনলেন না! এই প্রসঙ্গে সেই প্রাক্তন মন্ত্রী বেচারাম মান্নাকে ফোন করলেও তার সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। তবে এই ব্যাপারে হুগলি জেলা তৃণমূল সভাপতি দিলীপ যাদব বলেন, “সবারই মনে রাখতে হবে, এই দলে একজন নেতা আর তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সিঙ্গুর আমাদের নেত্রীর একটি স্পর্শকাতর জায়গা। সেখানে ব্যক্তিগত ইচ্ছা, অনিচ্ছা গুরুত্ব না পাওয়াই বাঞ্ছনীয়। কোথাও সমস্যা থাকলে দলে আলোচনার সুযোগ আছে। এটুকুই বলতে পারি।”

 

এদিকে তৃণমূল নেতাদের গোষ্ঠী কোন্দলে তার মেয়ের মৃত্যু বার্ষিকী ঠিকমতো পালন না হওয়ায় হতাশার সৃষ্টি হয়েছে সেই তাপসী মালিকের পরিবারে। এদিন এই প্রসঙ্গে রুটিন মেনে মেয়ের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করে তার মূর্তিতে মালা দিয়ে মনোরঞ্জন মালিক বলেন, “মেয়েকে তো আর ফেরত পাব না। কিন্তু তার খুনিরা সাজা পেল না। হতাশ লাগে। দিদিকে বলেছিলাম ওদের সাজা দেবেন। একদিন হয়ত ওরা সাজা পাবে। কিন্তু প্রতি বছর এই দিনে মনে হয়, মালা দেওয়া ছাড়া আর কিছু করতে পারলাম না।”

সত্যিই তো তাই! যে লড়াই, আন্দোলনের মধ্য দিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ক্ষমতায় এসেছিলেন, সেই সিঙ্গুর তার কাছে আজ নগন্য বলে মাঝেমধ্যেই দাবি করতে দেখা যায় বিরোধীদের। আর সেসময় মমতা বন্দোপাধ্যায়ের আন্দোলনে বাম বিরোধিতায় লড়াই করা তাপসী মালিকের মৃত্যুবার্ষিকী পালনে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নানা প্রশ্ন তৈরি করল। যা প্রখরভাবে বিদ্ধ করল শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসকে।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!