এখন পড়ছেন
হোম > রাজনীতি > তৃণমূল > তৃণমূল কর্মীবৃন্দের নিজস্ব ভুবনের ফ্লেক্সে ছেয়ে যাচ্ছে শহর? নতুন রাজনৈতিক সমীকরণ নিয়ে জল্পনা

তৃণমূল কর্মীবৃন্দের নিজস্ব ভুবনের ফ্লেক্সে ছেয়ে যাচ্ছে শহর? নতুন রাজনৈতিক সমীকরণ নিয়ে জল্পনা


প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট –সাংগঠনিক রদবদল করেও স্বস্তি নেই তৃণমূল কংগ্রেসের। রাজ্য কমিটি থেকে শুরু করে জেলা কমিটি, একের পর এক পরিবর্তনের কথা ঘোষণা করে গত বৃহস্পতিবার কার্যত মাস্টারস্ট্রোক দিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আশা করা হয়েছিল, অপেক্ষাকৃত তরুণদের নিয়ে এসে আগামী বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূল ভালো ফল করার চেষ্টা করছে। কিন্তু পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় প্রদীপ সরকারের গুরুত্ব বৃদ্ধি পাওয়ার সাথে সাথেই যেভাবে নতুন মঞ্চ তৈরীর জল্পনা ফ্লেক্সের মধ্য দিয়ে ফুটে উঠল, তাতে নিঃসন্দেহে তৃণমূলের অস্বস্তি বাড়বে বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। বস্তুত, পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় জেলা সভাপতি এবং চেয়ারম্যানের পদের কোনো পরিবর্তন হয়নি।

কিন্তু কো-অর্ডিনেটরের জায়গায় তিন জনকে নিয়ে আসা হয়েছে। যার মধ্যে রয়েছেন মানস ভূঁইয়া, শিউলি শাহা এবং খড়্গপুরের বিধায়ক প্রদীপ সরকার। আর দলকে চাঙ্গা করার জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই সিদ্ধান্ত নিলেও, তাকে কেন্দ্র করে নানা ফ্লেক্স, ফেস্টুন এখন তৃণমূলের অস্বস্তি বাড়িয়ে দিচ্ছে। সূত্রের খবর, এদিন জেলা তৃণমূলের নেতা দেবাশিস চৌধুরীর কার্যালয়ের উল্টো দিকে একটি হোর্ডিং দেখতে পাওয়া যায়। যেখানে লেখা রয়েছে, “দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক সংগ্রামের মূল্য যেখানে নেই, সেখানে মূল্য পায় চালাকি। সেখানে বেদনা অবশ্যম্ভাবী। এই বেদনা থেকে জন্ম নিতে পারে নিজস্ব ভুবন।” কিন্তু কে বা কারা এই পোস্টার লাগালো?

জানা গেছে, পোস্টার এর নিচে লেখা রয়েছে তৃণমূল কর্মীবৃন্দ অর্থাৎ পথপানে তাদের যে তৃণমূলের একাংশের পছন্দ হচ্ছেনা আর তার কারণেই যে তারা এই পোস্টার লাগিয়েছে সেই ব্যাপারটি নিশ্চিত হয়ে যাচ্ছে বিশেষজ্ঞদের কাছে। অনেকে বলছেন, দেবাশিসবাবুর কার্যালয়ের উল্টো দিকে যেহেতু এই পোস্টার পড়েছে, সেহেতু যথেষ্টই বোঝা যাচ্ছে যে, দেবাশিসবাবু এই ঘটনায় খুশি নন। তাই তার অনুগামীরা এই ধরনের কাজ করলেও করতে পারে। এদিন এই প্রসঙ্গে নানা নেতার গলায় দলের রদবদল নিয়ে উঠে এসেছে ক্ষোভের সুর। এদিন এই প্রসঙ্গে 10 নম্বর ওয়ার্ড যুব তৃনমূলের সভাপতি শান্তনু দাস বলেন, “বছর পাঁচেক ধরেই শহরে পুরোনোরা বঞ্চিত হচ্ছেন। আর নতুনরা দলের সামনের সারিতে এসে তোলাবাজি করছে। আমরা এটা মানতে পারছি না। পরিস্থিতি না বদলালে আমাদের অন্য কিছু ভাবতে হবে।”

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

অন্যদিকে 19 নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল সভাপতি বিশু অধিকারী বলেন, “দীর্ঘদিন ধরে দেবাশিসদার সঙ্গে দল করে আমরা বঞ্চিত। আর কয়েকজন দলে এসেই একের পর এক পদ পেয়ে চলেছেন। এভাবে চললে কি বিজেপির সঙ্গে লড়াই করা যাবে?” একইভাবে দেবাশিসবাবুর গলাতেও কিছুটা অভিমানের সুর শোনা গেছে। এদিন তিনি বলেন, “এটা ঠিক যে পুরনো কর্মীরা অসম্মানিত হচ্ছেন। স্বাভাবিকভাবেই কর্মীদের আবেগের বহিঃপ্রকাশ হচ্ছে‌। আমি এই আবেগকে সমর্থন জানাচ্ছি।”

স্বভাবতই যেভাবে দেবাশিসবাবু এবং তার কিছু অনুগামীরা দলের এই পদ বন্টন নিয়ে প্রকাশ্যে সরব হচ্ছেন, তাতে এই বিষয়টা কার্যত নিশ্চিত হয়ে যাচ্ছে সকলের কাছে যে, বিকল্প মঞ্চের কথা তুলে ধরে তৃণমূল কর্মী সমর্থকরা যে পোস্টার দিয়েছেন, তা দলের একশ্রেণীর নেতাকর্মীদের ধাওয়া পোস্টার। যার ফলে তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দল কার্যত পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় আরও মাথাচাড়া দেবে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। কিভাবে ক্ষোভকে সামাল দেওয়া যাবে? এদিন এই প্রসঙ্গে জেলা তৃণমূলের সভাপতি অজিত মাইতি বলেন, “প্রকৃত তৃণমূলীরা কখনও দল বিরোধী কথা বলবে না। রাজ্য যে জেলা কমিটি করে দিয়েছে, তাতে জেলার সকলকে মান্যতা দিয়েছে বলেই জানি।”

এদিকে এই ব্যাপারে যাকে নিয়ে বেশকিছু তৃণমূল নেতাকর্মীর এত ক্ষোভ, সেই প্রদীপ সরকার বলেন, “যারা এটা করছে, তারা প্রকৃত তৃণমূলের কেউ নয়। আমার ধারণা বিজেপির কিছু লোক এটা করছে।” যদি বা বিজেপির পক্ষ থেকে পাল্টা কটাক্ষ্য করা হয়েছে যে, তৃণমূল এখন সব কিছুতেই বিজেপির ভূত দেখছে। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পরিস্থিতি যেদিকে যাচ্ছে, তাতে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় তৃণমূলের অন্দরে এবার বড়সড় বিদ্রোহ হতে পারে। প্রদীপ সরকারের পদ পাওয়া নিয়ে যেভাবে তৃণমূলের একশ্রেণীর নেতাকর্মীরা পোস্টার লাগিয়ে দিলেন এবং অনেকের গলায় শোনা গেল ক্ষোভের সুর, তাতে জেলা নেতৃত্ব এখন সেই সমস্ত নেতাদের ক্ষোভকে প্রশমন করে, নাকি তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়, সেদিকেই নজর থাকবে সকলের।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!