দলের “মাতব্বরদের কাটমানি” খাওয়া নিয়ে সরব “দিদি”, খুশির হাওয়া তৃণমূলের নিচুতলায় রাজ্য হাওড়া-হুগলি June 9, 2019 মানুষ কোনো জিনিসের উপর ভর করে সাফল্য পেলে পরবর্তীতে সাফল্যের মত্ত নেশায় তারা অতীতের সমস্ত স্মৃতিকে ভুলে যায়। কঠোর ও কঠিন এই বাস্তব সত্য কথাটি এবার রাজনীতির রণাঙ্গনে সত্য বলে প্রতিষ্ঠিত হওয়ায় হারের মুখ দেখতে হলেও বর্তমান শাসক দল তৃণমূলকে। বিগত বাম সরকারের আমলে সিঙ্গুরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনশন ও আন্দোলনের কথা প্রায় সকলেরই জানা। বাম সরকারের ওপর ভরসা করে টাটারা সিঙ্গুরের অনিচ্ছুক কৃষকদের জমি কব্জা করতে চাইলে তা নিয়ে প্রবল আন্দোলন গড়ে তোলে তৎকালীন বিরোধী দল তৃণমূল কংগ্রেস। জমি রক্ষা কমিটি গড়ে রাজ্য তথা জাতীয় রাজনীতিতে আলাদা জায়গা করে নেন সেদিনকার বিরোধী নেত্রী তথা আজকের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াই করার সময় তিনি বুঝতে পারেননি যে, তারই তৈরি দলের কর্মীরা এক সময় সেই অন্যায়কেই প্রশ্রয় দেবেন। 2011 সালে রাজ্যে পালাবদলের পর কথা দিয়ে কথা রাখতে সিঙ্গুরের অনিচ্ছুক কৃষকদের জমি ফেরত দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে সেই সিঙ্গুরে শাসক দলের নেতাদের দলীয় কোন্দল, মানুষের সাথে দুর্ব্যবহার এবং সাধারণ মানুষের কাছ থেকে কাঠমানি খাওয়ার কুফসলও এবারের লোকসভা নির্বাচনে পোয়াতে হল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। আর তাইতো অবস্থা বুঝেই সম্প্রতি তৃণমূল ভবনে হুগলি জেলা নেতৃত্বদের নিয়ে বৈঠকে কাটমানি যাতে আর কোনো নেতা না খান, তার জন্য সকলকে সতর্ক করে দিলেন তিনি। আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - পাশাপাশি অন্যায় করলে প্রত্যেককে গ্রেপ্তার করা হবে বলেও সাফ জানিয়ে দিতে দেখা গেল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। আর তৃনমূল নেত্রীর জেলা নেতাদের উদ্দেশ্যে এই বার্তা এখন নিচুতলার কর্মীদের মনে সাহস ও ভরসা যোগালেও এই “কঠোর ও কঠিন বার্তা দিতে অনেক দেরি হয়ে গেছে” বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের একাংশ। শুধু তাই নয়, যে সিঙ্গুর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রাজনৈতিক উত্থানের অন্যতম কেন্দ্র বলে পরিচিত, সেখানে নেতাদের গোষ্ঠী কোন্দল এবং দুর্নীতিই যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে অত্যন্ত ভাবাতে শুরু করেছে এবং তার ফলেই যে বাধ্য হয়ে তৃণমূল নেত্রীর দলীয় নেতাদের উদ্দেশ্যে এই কঠোর বার্তা – সেই ব্যাপারে একপ্রকার নিশ্চিত পর্যবেক্ষকেরা। বিরোধীদের দাবি, মাতব্বর ও সিন্ডিকেটরাজের উত্থান এবং দলের পুরোনো কর্মীদের পিছনে ফেলে দেওয়াতেই এবারের লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূলের এই ভরাডুবি। তবে বিরোধীরা যাই বলুক না কেন, তৃণমূলের পুরনো কর্মীরা যে এখনও তাদের সেই দিদিকে চান, তা এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কঠোর বার্তার পর সেই পুরনো কর্মীদের উজ্জীবিত হওয়া দেখেই পরিষ্কার হয়ে গেল। শাসক দলের একাংশের দাবি, ক্ষমতার অলিন্দে দল আসতে না আসতেই বাম, কংগ্রেস তথা অন্যান্য বিরোধী দল থেকে তৃণমূলে আসা নানা কর্মী সমর্থকদের ভিড় হওয়ায় পুরাতন কর্মীরা কোণঠাসা হয়ে পড়েছিল। কিন্তু তাদের মন থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আদর্শ এবং ভালোবাসা কখনও বিচ্যুত হয়নি। তবে দল সেই পুরনো কর্মীদের কিছুটা ভুলে গিয়েছিলেন। তবে বিপদে পড়তেই লোকসভা নির্বাচনের ফল খারাপ হওয়ায় এখন সেই পুরনো কর্মীদের ফিরিয়ে আনার জন্যই দলের অন্দরে দুর্নীতি নিয়ে সরব হলেন একসময়ের “সততার প্রতীক” মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলে মত ওয়াকিবহাল মহলের। আপনার মতামত জানান -