এখন পড়ছেন
হোম > রাজনীতি > তৃণমূল > তৃণমূল হুগলি জেলা কমিটি ঘিরেও গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের চাপ স্পষ্ট, রবীন্দ্রনাথ- বেচারামের দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে !

তৃণমূল হুগলি জেলা কমিটি ঘিরেও গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের চাপ স্পষ্ট, রবীন্দ্রনাথ- বেচারামের দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে !


প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – অনেক টালবাহানার পর ঘোষিত হল তৃণমূলের হুগলি জেলা কমিটি। গতকাল রবিবার চুঁচুড়ায় তৃণমূল কোর কমিটির চেয়ারম্যান কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় জেলা কমিটির আনুষ্ঠানিক ঘোষণা করলেন। তবে, তিন দিন আগে বৃহস্পতিবার এই কাজটি হয়ে যাবার কথা ছিল। সেদিন জেলা পার্টি অফিসে বসে জেলা কমিটির তালিকা নিয়ে পড়তেও শুরু করেছিলেন কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। তখন হটাৎ তাঁর একটি ফোন আসে। এই ফোন পেয়েই বৈঠক স্থগিত রেখে উঠে গিয়েছিলেন তিনি। এজন্য তালিকা ঘোষণা স্থগিত থেকে গিয়েছিলো। এদিকে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে জর্জরিত হুগলি জেলা তৃণমূল। অনেকে বলে থাকেন, হুগলী জেলাতে যত জন বিধায়ক আছেন, ততগুলো গোষ্ঠী আছে তৃণমূলে।

প্রসঙ্গত, গত ৫ ই নভেম্বর বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় জেলা কমিটির তালিকা নিয়ে জেলা পার্টি অফিসে সবে বসে পড়তে শুরু করেছিলেন তৃণমূল সাংসদ ও জেলা সংগঠনের চেয়ারম্যান কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। সেসময় হঠাৎ করেই তাঁর একটি ফোন আসে।এরপর ওই ফোন পেয়েই তালিকা ঘোষণা বন্ধ করে দেন তিনি। তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দেন যে, জেলা কমিটি ঘোষণা করা হবে না। নেতাকর্মীদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানান যে, এই তালিকা অসম্পূর্ণ আছে। তবে সেদিন রাতে তৃণমূল সূত্রে জানা যায় যে, জেলা কমিটির ওই তালিকা পিকের পক্ষ থেকে এসেছিল। তবে, সে তালিকা কেন অসম্পূর্ণ? সেই প্রশ্ন উঠেছিল।

দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছিল, পান্ডুয়া, চাঁপদানি, উত্তরপাড়া, খানাকুল সহ কয়েকটি এলাকায় ব্লক কমিটি ও সভাপতি নিয়ে দলের মধ্যে ক্ষোভ বিক্ষোভ তথা বিরোধ আছে। এ কারণে কমিটি ঘোষণা সেদিনের মতো স্থগিত রাখা হয়েছিল। এরপর তিন দিন কেটে গেল, অবশেষে গতকাল সন্ধ্যায় ১৭৬ জনের ব্লক, টাউন সভাপতি, সহ সভাপতি, সম্পাদক সদস্যের নাম ঘোষণা করা হলো। গতকাল ৮৯ জনের যুব তৃণমূল কমিটিও ঘোষণা করা হয়েছে।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

এদিকে হুগলি জেলায় তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব বারবার প্রকাশ্যে চলে আসছে। গত লোকসভা ভোটে হুগলিতে পরাজিত হয়েছিল তৃণমূল। আরামবাগে কোনরকমে জয়লাভ করতে পেরেছিল। এদিকে বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য ও বেচারাম মান্নার বিরোধ দীর্ঘ বর্ষিয়ান বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য বারবার দলের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন। একবার তিনি জানিয়েছিলেন যে, তিনি নিজে কোনো দুর্নীতি করেন না, তাই দুর্নীতিগ্রস্থদের সঙ্গে থাকতে পারবেন না তিনি। এদিকে বেচারাম মান্নাও দলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বেশ কয়েকবার। আবার হুগলি জেলার সিঙ্গুর, বলাগড়ের মত ব্লকগুলি যথেষ্ট চাপে রেখেছে শাসকদল তৃণমূলকে। এই সমস্ত এলাকায় একদিকে যেমন বিজেপি শক্তিশালী হচ্ছে, অন্যদিকে অন্তর্দ্বন্দ্বে জর্জরিত হয়ে পড়ছে তৃণমূল। তবে, বাম-কংগ্রেসকে নিয়ে তেমন ভাবনা নেই তৃণমূলের। তৃণমূলের অন্তর্দ্বন্দ্ব কিন্তু বারবার ভাবাচ্ছে দলকে।

গতকালের তালিকা অনুযায়ী, শ্রীরামপুর, হুগলি লোকসভা কেন্দ্রে পূর্বের দুই সভাপতি অরিন্দম গুঁই ও সুমনা সরকারকেই রাখা হয়েছে। আরামবাগের সভাপতি করা হয়েছে প্রাক্তন টিএমসিপি সভাপতি গোপাল রায়কে। হুগলি জেলা তৃণমূলের কিছু টাউন ব্লকে কিছুটা পরিবর্তন করা হলেও, অন্য জায়গায় তেমন একটা পরিবর্তন হয়নি। হুগলি জেলাতে চেয়ারম্যান রত্না দে নাগ, সভাপতি দিলীপ যাদব, কো-অর্ডিনেটর বেচারাম মান্না, অপরূপা পোদ্দার ও স্নেহাশিষ চক্রবর্তী, মুখপাত্র প্রবীর ঘোষাল ও স্নেহাশিষ চক্রবর্তী। সিঙ্গুর ব্লকে মহাদেব দাসকে সরিয়ে দিয়ে গোবিন্দ ধাড়াকে ব্লক সভাপতি করা হয়েছে।

এদিকে মহাদেব দাস হলেন বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্যের গোষ্ঠীভুক্ত। অন্যদিকে গোবিন্দ ধারা হলেন বেচারাম মান্নার গোষ্ঠীভুক্ত। এদিকে গোবিন্দ ধারার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ আছে। তাঁকে কিছুতেই মানতে রাজি ছিলেন না বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য। গতকাল, গোবিন্দ ধারার ৬০ লক্ষ টাকা সম্পত্তির দলিল দেখিয়ে রবীন্দ্রনাথ বাবু জানালেন, ” নেতাদের ‘ইয়েস ম্যান’ লাগবে। অন্য জায়গায় বিধায়কের কথা শোনা হলেও সিঙ্গুরে হচ্ছে না।” হুগলি জেলায় তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব এবার প্রকাশ্যে চলে এসেছে। যা বন্ধ করতে অনেক সময় শীর্ষ নেতৃত্বকে হাত লাগাতে হয়েছে। দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব দূর করে আগামী বিধানসভা নির্বাচনে শাসকদল তৃণমূল কতটা ইতিবাচক ফল লাভ করতে পারে সেদিকে দৃষ্টি সকলের।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!