এখন পড়ছেন
হোম > রাজনীতি > তৃণমূল > তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব ক্রমশ চরমে উঠছে! এবার বোমার আঘাতে প্রাণ গেল প্রভাবশালী নেতার

তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব ক্রমশ চরমে উঠছে! এবার বোমার আঘাতে প্রাণ গেল প্রভাবশালী নেতার


প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – আগামী ২০২১ এর বিধানসভা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে মুখ্যমন্ত্রী বারবার তৃণমূল দলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে চলার নির্দেশ দিচ্ছেন। ভোটকুশলী পিকেও বারবার শাসক দলকে নিজেদের অন্তর্দ্বন্দ্ব তথা গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের বিষয়ে সাবধান করে দিচ্ছেন। কিন্তু গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব যেন তৃণমূল দোলে সম্প্রতি একটি দুরারোগ্য ব্যাধিতে পরিণত হয়েছে। যা থেকে কিছুতেই আরোগ্য লাভ করা সম্ভবপর হয়ে উঠছে না শাসকদলের পক্ষে। রাজ্যজুড়ে বারবার ঘটে যাওয়া একধিক অন্তর্দ্বন্দ্বের ঘটনা শাসকদলের অন্দরের তীব্র অনৈক্য, মতভেদকেই বারবার সামনে এনে দিচ্ছে।

গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে হুগলি জেলার আরামবাগের হরিণখোলা অঞ্চলে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে ইসরাইল খান নাম জনৈক তৃণমূল কর্মীর হত্যার খবর এসেছে। স্থানীয় সংবাদসূত্র অনুযায়ী, বোমার আঘাতে মৃত্যু হয়ে ৩৮ বছর বয়স্ক তৃণমূল কর্মী ইসরাইল খানের। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে হরিণখোলা অঞ্চলে গতকাল ব্যাপক বিক্ষোভ, উত্তেজনা ও অবরোধ সৃষ্টি হয়, ৬ ঘন্টা স্থানীয় জনতার সঙ্গে প্রায় প্রায় খন্ডযুদ্ধের পর শেষপর্যন্ত পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে মৃতদেহ উদ্ধারে সক্ষম হয়। এই ঘটনা প্রসঙ্গে আরামবাগ থানার এসডিপিও নির্মল কুমার দাস জানিয়েছেন, বোমা নিক্ষেপ ও খুনের অপরাধে পুলিশ চারজন সন্দেহভাজনকে গ্রেফতার করেছে। বোমার আঘাতেই ইসরাইল খানের মৃত্যু বলে অনুমান পুলিশের।

গতকাল বিকেলে তাঁর মৃতদেহ ময়নাতদন্তে পাঠিয়েছে পুলিশ। পুলিশের দাবি, হরিণখোলার পরিস্থিতি এখন পুলিশের নিয়ন্ত্রণে এসেছে। গুগলি জেলা তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি দিলীপ যাদব এই ঘটনার প্রসঙ্গে বলেছেন, “মৃত যুবক আমাদের দলের কর্মী ছিলেন। যে কোনও মৃত্যুই বেদনাদায়ক। দলীয়ভাবে ঘটনাটি আমরা খোঁজ নিয়ে দেখছি। পুলিস তদন্ত করছে। আইন আইনের পথে চলবে। এই ঘটনার যে দলের লোকই যুক্ত থাকুক না কেন, কাউকে বরদাস্ত করা হবে না।”

মৃত ইসরাইল খানের বাড়িতে এদিন সমবেদনা জানাতে এসেছিলেন তৃণমূলের রাজ্য যুব সহ-সভাপতি শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়। এই ঘটনা সম্পর্কে তাঁর মতামত, “বিজেপির লোকজন তৃণমূলের জামা পরে খুনের ঘটনা ঘটিয়েছে। ওই সকল লোকেকে চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অভিযুক্তরা ছাড় পাবে না।”

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

জেলা বিজেপির দিকে তোলা শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায় এর এই অভিযোগকে সম্পূর্ণ রূপে খণ্ডন করেছেন বিজেপির আড়ম্বর সংগঠনের জেলা সভাপতি বিমান ঘোষ। এপ্রসঙ্গে বিমান ঘোষ জানিয়েছেন, ” তৃণমূলের মাদার ও যুব গোষ্ঠীর সংঘর্ষে এই মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। এলাকার মানুষ ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে রয়েছে। এই ঘটনার সঙ্গে কোনওভাবেই বিজেপি যুক্ত নয়।”

প্রসঙ্গত, আরামবাগের হরিণখোলায় শাসকদলের মধ্যে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব ইতিপূর্বেও ঘটে গেছে। কিছুদিন আগেই এলাকা দখলের ঘটনাকে কেন্দ্র করে হরিণখোলা-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান আব্দুল আজিজ খান বা লাল্টূুর গোষ্ঠীর সঙ্গে তাইবুল আলি গোষ্ঠীর ব্যপক সংঘর্ষ ঘটেছিল । আর এই ঘটনায় ব্যাপক মারধর খেতে দেখা গিয়েছিল তাইবুল গোষ্ঠীর তৃণমূল কর্মীদের।এর প্রতিশোধেই গতকাল সকাল থেকে শুরু হয় বোমাবাজি, তারপর চলে গুলি। ফলে ক্রমশই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে হরিণখোলা-২ পঞ্চায়েতের অন্তর্গত ঘোলতাজপুর এলাকা।

গতকাল সকাল ১০ টাতে নিজের বাড়ি থেকে কিছুদূরে একগাছতলায় বসে থাকা অবস্থায় বোমা নিক্ষেপ করা হয় ইসরাইলের উপরে। ঘটনা স্থলেই মৃত্যু হয় লাল্টূু গোষ্ঠীর সদস্য বলে পরিচিত ইসরাইল খানের। এরপর দুপক্ষের বোমা বিনিময়ে আহত হন দুপক্ষের ৫ জন সদস্য। তারপর থেকে এলাকায় সুরু হয় ব্যাপক বিক্ষভ ও চাঞ্চল্য। গতকাল দুপুর দেড়টায় লাল্টূু গোষ্ঠীর সদস্যদের গ্রেফপ্তারের দাবিতে আরামবাগ-তারকেশ্বর পথ অবরোধ করে  তাইবুল আলি গোষ্ঠীর সদস্যরা।

এই অবরোধ ফলে আটকে পড়েন হুগলি জেলার অতিরিক্ত পুলিস সুপার (গ্রামীণ) সুরেন্দর সিং। দেড়ঘন্টা ধরে অবরোধের পর ঘটনায় অভিযুক্তদের গ্রেফতারের প্রতিশ্রুতি দেবার পর অবরোধ উঠে যায়। কিন্তু, এরপরেও পুলিশকে ইসরাইল খানের মৃতদেহ উদ্ধারে বাধা দেওয়া হয়। শেষপর্যন্ত বিরাট পুলিশ বাহিনী ও কমব্যাট ফোর্স নিযুক্ত করে ঘটনাকে শেষপর্যন্ত নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয় পুলিশ। তারপর পুলিশ সংশ্লিষ্ট এলাকায় ব্যাপক তল্লাশি চালিয়ে প্রচুর তাজা বোমা উদ্ধার করে।

মৃত ইসরাইল খানের দাদা ইসমাইল খান এই ঘটনা প্রসঙ্গে বলেছে, ” আমরা দলের জন্মলগ্ন থেকেই তৃণমূল করছি। তবে আমার ভাই প্রত্যক্ষভাবে কখনও রাজনীতি করেনি। ভাই অন্য রাজ্যে কাজ করত। লকডাউনের জন্য বাড়ি ফিরেছিল। আমার ভাইকে যারা খুন করেছে, তারা বাইরে তৃণমূল করে। কিন্তু, তলে তলে বিজেপির সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলে। মৃতের স্ত্রী নুরাজশমিনা বেগম বলেন, স্বামীর সঙ্গে এলাকার কারও কোনওরকম শত্রূুতা ছিল না। তবুও তাকে খুন করা হল। আমার স্বামীর খুনের বিচার চাই।”

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!