এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > মালদা-মুর্শিদাবাদ-বীরভূম > দলনেত্রীর ‘পছন্দের লোক’ দায়িত্ব নিতেই কি দলীয় ক্ষোভ ও বিদ্রোহ চূড়ান্ত পর্যায়ে? বাড়ছে জল্পনা

দলনেত্রীর ‘পছন্দের লোক’ দায়িত্ব নিতেই কি দলীয় ক্ষোভ ও বিদ্রোহ চূড়ান্ত পর্যায়ে? বাড়ছে জল্পনা

দীর্ঘদিন ধরেই মালদা জুড়ে তৃনমূলের গোষ্ঠী কোন্দলে বিপর্যস্ত ঘাসফুল শিবির। এবার সারা জেলা জুড়ে দলীয় স্তরে ‘বিদ্রোহ’ সামলাতে ব্যর্থতার অভিযোগ উঠল মালদহের তৃণমূল সভানেত্রী তথা দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘প্রিয়পাত্রী’ বলে পরিচিত মৌসম নুরের বিরুদ্ধে। বস্তুত, এর আগে ব্লক কমিটির পদাধিকারীদের নাম ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গেই ৫ ই আগস্ট থেকেই দলের অন্দরে তীব্র ক্ষোভের আঁচ টের পাওয়া গিয়েছিল।

আর, সম্প্রতি মালদহ জেলার শাসকদল পরিচালিত দু’টি পুরসভারই চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে তৃনমূলেরই সংখ্যাগরিষ্ঠ কাউন্সিলার অনাস্থা এনেছে। আর সেই ক্ষোভ বর্তমানে চূড়ান্ত আকার ধারণ করেছে বলে ধারণা দলের প্রবীণ নেতা-নেত্রীদের। একাংশের দাবি, জেলা তৃণমূল সভানেত্রী দক্ষ হাতে সেই বিদ্রোহ সামলাতে পারছে না।

তবে এই প্রসঙ্গে মৌসম নুর বলেন, “এই সমস্যা নতুন করে তৈরি হয়নি। আগে থেকেই ছিল।” প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, মালদহের ইংলিশবাজার ও পুরাতন মালদহ পুরসভার দুই চেয়ারম্যান নীহার ঘোষ এবং কার্তিক ঘোষের বিরুদ্ধে সম্প্রতি অনাস্থা জমা দিয়েছেন তৃণমূলের সংখ্যাগরিষ্ঠ কাউন্সিলাররা। আর এই সমস্ত বিদ্রোহী কাউন্সিলারদের সঙ্গে ইতিমধ্যেই ব্যক্তিগত স্তরে বৈঠক করেছেন মৌসম নূর ও জেলা তৃণমূলের অন্যতম পর্যবেক্ষক তথা রাষ্ট্রমন্ত্রী গোলাম রাব্বানি।

কিন্তু তাঁদের বৈঠকের পরেও সমস্যার জট বিন্দুমাত্র কাটেনি বলেই কান পাতলে শোনা যাচ্ছে গোটা মালদা জুড়েই। কিন্তু শুধু এই দুই পুরসভাই নয়, মালদহে তৃণমূলের অন্দরের ক্ষোভ আগস্টের প্রথম সপ্তাহ থেকেই প্রকাশ্যে আসতে শুরু করেছিল বলে জানা যাচ্ছে। জেলা সভানেত্রী মৌসম নূরের ঘোষিত ব্লক কমিটির কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে জেলার বিভিন্ন অঞ্চলের পাশাপাশি কোতোয়ালিতে তাঁর বাসভবনের সামনেও বিক্ষোভ হয়েছে।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

কিন্তু রাজ্য নেতৃত্বের হস্তক্ষেপে সেই বিক্ষোভ আপাতত ধামাচাপা পড়লেও, যে কোনও দিন তা দাবানলের আকার নিতে পারে বলে আশঙ্কা রয়েছে খোদ শাসকদলের অন্দরেই। এদিন এই প্রসঙ্গে তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠন আইএনটিটিইউসি’র জেলা সভাপতি মানব বন্দ্যোপাধ্যায় সাঙ্গাব্দমাধ্যমকে বলেন, “মালদহের তৃণমূল যেন হট্টমেলার দেশ। যে যাঁর বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে মন্তব্য করছেন। যে যখন পারছে অনাস্থা আনছে। সর্বত্র নেতৃত্বহীনতার ছাপ স্পষ্ট। জেলা সভানেত্রীই হোক কিংবা জেলা পর্যবেক্ষক, কাউকেই প্রয়োজনের সময় ফোনে পাচ্ছেন না কর্মীরা।”

জানা গেছে, রতুয়া-১ ব্লকের একটি ঘটনা নিয়ে তৃণমূল কর্মীদের তাড়া করে বেড়াচ্ছে পুলিস। অথচ সেই তৃনমূল কর্মীরা দলের সাহায্য পাচ্ছেন না। অনেকেই বলছেন, রাজ্য নেতৃত্ব দ্রুত এই ব্যাপারে হস্তক্ষেপ না করলে পরিস্থিতির আরও অবনতির আশঙ্কা রয়েছে। এদিন এই প্রসঙ্গে প্রাক্তন মন্ত্রী তথা প্রাক্তন জেলা সভানেত্রী সাবিত্রী মিত্র বলেন, “নিয়মিত দলের বৈঠক হচ্ছে না। সভানেত্রীকে ফোন করলে অন্য কেউ ফোন ধরছেন। পুরনো নেতাকর্মীরা গুরুত্ব পাচ্ছেন না। পরিস্থিতি সামলাতে প্রবীণ নেতানেত্রীদের পরামর্শও নেওয়া হচ্ছে না।”

সাবিত্রীদেবী আরও বিস্ফোরকভাবে দাবি করেন, “ব্লকগুলিতেও এক অবস্থা। এবার মালদহে রাজ্য নেতৃত্বের সরাসরি হস্তক্ষেপ দরকার।” অন্যদিকে এই ব্যাপারে তৃণমূলের এক প্রবীণ কাউন্সিলার বলেন, “সভানেত্রী’র এতদিনে আমাদের মনে পড়েছে। এর আগে কখনও আমাদের কথা শোনার প্রয়োজন মনে করেননি তিনি।” কিন্তু এই ব্যাপারে জেলা তৃণমূল সভানেত্রী মৌসম নূর বলেন, “এসব নিয়ে কোনও মন্তব্য করা সমীচীন নয়। আমি সম্প্রতি মালদহে দলের দায়িত্ব নিয়েছি। এসব সমস্যা অনেক আগে থেকেই রয়েছে। রাজ্য নেতৃত্বকে সব জানিয়েছি।” সব মিলিয়ে যত দিন যাচ্ছে, ততই যেন ঘোরালো হচ্ছে মালদহের পরিস্থিতি।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!