এবারের উপনির্বাচনে বাংলার জনগণ আবারও দেখল তৃণমূলের জয়জয়কার। লোকসভা ভোটে বিজেপির অত্যাশ্চর্য উত্থানের ঠিক ছমাসের মধ্যে তাঁদের আত্মবিশ্বাসে প্রবল ধাক্কা দিয়ে রাজ্যের তিনটি বিধানসভা উপনির্বাচনে ব্যাপক মাত্রায় আসন সংখ্যা বাড়িয়ে জয় ছিনিয়ে আনলো তৃণমূল। অর্থাৎ 2019 সালের লোকসভা ভোটে তৃণমূল যে কোণঠাসা অবস্থায় চলে গেছিল, সে জায়গা থেকে উপনির্বাচনে সম্পূর্ণ ঘুরে দাঁড়ালো তাঁরা। আর এবার উপনির্বাচনের জয়ের পর নতুন করে তৃণমূল ধাক্কা দিল আবার বিজেপিকে তাঁদের গড়ে।

2019 এর লোকসভা নির্বাচনে দেখা গিয়েছিল গোটা উত্তরবঙ্গ বিজেপির নিজস্ব শিবিরমহল হয়ে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু এবার বিজেপির বহুদিনের পুরনো ঘাঁটি আলিপুরদুয়ারে বিজেপিকে হারিয়ে তৃণমূল জয় ছিনিয়ে আনলো। তবে এই নির্বাচন ছিল আলিপুরদুয়ার অরবিন্দ নগর জুনিয়র হাই স্কুলের পরিচালন কমিটির। স্কুল পরিচালন কমিটির নির্বাচনে প্রায় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় শাসক দল জয়লাভ করলো। স্কুল পরিচালন কমিটির নির্বাচনের ঘোষণা আগেই হয়েছিল। আর তার জন্য গত মাসের কুড়ি তারিখ পর্যন্ত মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া চলছিল।

গত রবিবার ছিল আলিপুরদুয়ার অরবিন্দ নগর জুনিয়ার হাই স্কুলের পরিচালন কমিটির নির্বাচন। নির্বাচনে দেখা গেল তৃণমূল ছাড়া অন্য কোনো দল এই নির্বাচনে লড়ার জন্য মনোনয়নপত্র জমা দেয়নি। ফলস্বরূপ পরিচালন সমিতির অভিভাবক প্রতিনিধি তিনজনই তৃণমূলের হয়ে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়লাভ করলো। তৃণমূলের জয়ী প্রার্থীরা হলেন পম্পা দাস, রমেশ দাস ও রতন দাস। নির্বাচনের ফল বেরোনোর পর জয়ী প্রার্থীদের সংবর্ধনা জানানো হয়। সংবর্ধনা জানান তৃণমূলের জেলা সভাপতি মৃদুল গোস্বামী ও দলের যুব জেলা সভাপতি বাবলু কর। এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন তৃণমূলের আলিপুরদুয়ার পুরসভার বিদায়ী বোর্ডের প্রাক্তন চেয়ারম্যান আশীষ দত্ত।

রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, খড়গপুর, করিমগঞ্জ ও করিমপুরের উপ-নির্বাচনের ফল রীতিমতো নাড়িয়ে দিয়েছে বিজেপির অন্দরমহলকে। যার ফলস্বরূপ আলিপুরদুয়ারের পরিচালন কমিটির নির্বাচনে তাঁরা কোন প্রতিদ্বন্দিতায় নামেনি। অন্যদিকে, রাজ্যের বিধানসভা উপনির্বাচনের হারের পরে বিজেপি শিবিরে তদন্ত কমিটি বসেছে। চলছে হারের কারণ জানার জন্য দলীয় কাটাছেঁড়া। তবে সূত্রের খবর, বিজেপি উপনির্বাচনের ফলাফলে পিছিয়ে না পড়ে সামনে 2021 এর বিধানসভা নির্বাচনের দিকে লক্ষ্য রেখে তাদের দলীয় পদক্ষেপ ঠিক করতে চলেছে। আপাতত সম্পূর্ণ পরিস্থিতির ওপর নজর রাখছে রাজ্যের ওয়াকিবহাল মহল।