প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – শুভেন্দু অধিকারীর পথ ধরেই বিজেপিতে নাম লিখিয়েছিলেন আলিপুরদুয়ার পৌরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান আশিস দত্ত। আর আশ্চর্য্যজনকভাবে তৃণমূলে থাকার সময় তারা তাদের দলের বিরুদ্ধে তেমন ভাবে দুর্নীতির অভিযোগ না করলেও, বিরোধী শিবিরে নাম লেখানোর সাথে সাথেই প্রাক্তন দল তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে দুর্নীতি সহ একাধিক অভিযোগ করতে শুরু করেছেন সদ্য বিজেপিতে যোগ দেওয়া নেতা-নেত্রীরা।

ইতিমধ্যেই নানা সভা থেকে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসকে দুর্নীতির অভিযোগে কড়া ভাষায় আক্রমণ করছেন শুভেন্দু অধিকারী। আর এবার শুভেন্দুবাবুর পথে হেঁটেই তৃণমূল কংগ্রেসের বিড়ম্বনা বাড়িয়ে দিলেন আলিপুরদুয়ার পৌরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান তথা সদ্য বিজেপিতে যোগ দেওয়া আশিস দত্ত। সূত্রের খবর, সোমবার তৃণমূল পরিচালিত পুরবোর্ডের সামনে বিক্ষোভ দেখাতে দেখা যায় আশিসবাবুকে।

যেখানে “শহরের সমস্ত জলাভূমি জবরদখল হচ্ছে কেন, পুর কতৃপক্ষ জবাব দাও!” এই প্ল্যাকার্ড বুকে ঝুলিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন বিজেপি নেতা। স্বাভাবিকভাবেই এতদিন তিনি পৌরসভার চেয়ারম্যান থাকলেও, তার মুখ থেকে এরকম কোনো কথা শোনা যায়নি। কিন্তু এবার বিজেপিতে নাম লেখাতেই যেভাবে তিনি তাঁর প্রাক্তন দলের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ করলেন, তাতে তার এই আচরন নিয়ে নানা মহলে তৈরি হয়েছে প্রশ্ন।

তবে এতদিনে কেন আশিসবাবুর বোধোদয় হল! এখন তা নিয়ে অনেকেই প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন। এদিন এই প্রসঙ্গে সিপিএমের অনিন্দ্য ভৌমিক বলেন, “আশিসবাবু নিজেই পৌরসভার বোর্ড চালিয়েছিলেন। তিনি তৃণমূল পরিচালিত সেই বোর্ডের চেয়ারম্যান ছিলেন। তাহলে ওই বোর্ডের অনিয়মের জন্য আশিসবাবুই তো দায়ী।” অন্যদিকে এই ব্যাপারে জেলা কংগ্রেসের কার্যকরী সভাপতি শান্তনু দেবনাথ বলেন, “এখন আশিসবাবু বিজেপিতে গিয়ে দায় ঝেড়ে ফেলতে চাইলে তো হবে না। ওনাকেই এর জবাব দিতে হবে।”

একই কথা শোনা গেছে তৃণমূল কংগ্রেসের গলায়। এতদিন তিনি চেয়ারম্যানের দায়িত্বে থাকলেও, কেন এখন বিজেপিতে যোগ দিয়ে তিনি সেই বোর্ডের বিরুদ্ধে সরব হচ্ছেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন আলিপুরদুয়ার পৌরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান দীপ্ত চট্টোপাধ্যায়। এখানেই একাংশের প্রশ্ন, সত্যিই তো তাই! এতদিন তিনি চেয়ারম্যান থাকলেও, কেন এখন শুধুমাত্র বিরোধী দলে যোগ দেওয়ার সাথে সাথেই নিজের প্রাক্তন দলের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলছেন! তাহলে কি এই দায় তার ঘাড়ে পড়ে না!

এদিকে এই প্রসঙ্গে আশিস দত্ত বলেন, “তৃণমূলের দুর্নীতির জন্যই তো ওই দল ছেড়ে বিজেপিতে এসেছি। তৃণমূল বোর্ডের সদস্যদের চাপ ছিল বলেই তো তখন কিছু করতে পারিনি। এখন বিজেপিতে এসে বিদায়ী বোর্ডের বিরুদ্ধে আন্দোলনে নেমেছি।” স্বাভাবিক ভাবেই এতকাল তৃণমূলে থাকার সময় যেভাবে তিনি কোনো মুখ খোলেননি, তাতে বিজেপিতে যোগদানের সময় আশিস দত্তের নিজের প্রাক্তন দলের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ নিঃসন্দেহে বিতর্কের সৃষ্টি করেছে জেলা রাজনীতিতে।

তাহলে কি এটা আশিস বাবুর বিলম্বিত বোধোদয়! যদি তিনি দুর্নীতির গন্ধ পেয়েই থাকবেন, তাহলে কেন আগে সেখান থেকে বেরিয়ে এসে সরব হলেন না! কেন এত দেরি হল! এখন তা নিয়ে অনেকেই প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন। সব মিলিয়ে নিজের প্রাক্তন দলের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ করা আশিস দত্তকে নিয়ে এখন ব্যাপক আলোড়ন পড়ে গিয়েছে আলিপুরদুয়ার জেলা জুড়ে।