এখন পড়ছেন
হোম > রাজনীতি > তৃণমূল > তৃণমূল ত্যাগী হেভিওয়েটদের ক্রমশ কাটছে বিজেপির মায়া? আগামীদিনে বিজেপির ভবিষ্যৎ কি অন্ধকারে?

তৃণমূল ত্যাগী হেভিওয়েটদের ক্রমশ কাটছে বিজেপির মায়া? আগামীদিনে বিজেপির ভবিষ্যৎ কি অন্ধকারে?


প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – বিধানসভা নির্বাচনের আগে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগদানের রীতিমতো হিড়িক পড়ে গিয়েছিল। 2017 সালে প্রথম তৃণমূল কংগ্রেসকে ধাক্কা দিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ তৃণমূলের সেকেন্ড-ইন-কমান্ড মুকুল রায় বিজেপিতে যোগদান করেছিলেন। তারপর ধীরে ধীরে তার হাত ধরে একের পর এক তৃণমূলের জনপ্রতিনিধি যোগ দিতে শুরু করেছিলেন ভারতীয় জনতা পার্টিতে। তবে তৃণমূল সহ অন্যান্য রাজনৈতিক দল থেকে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার হিড়িক ক্রমশ বাড়তে শুরু করেছিল 2021 এর বিধানসভা নির্বাচনের দামামা বাজার আগে থেকে।

জিতেন্দ্র তিওয়ারি থেকে শুরু করে রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়, শুভেন্দু অধিকারী থেকে শুরু করে রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য্য, একের পর এক হেভিওয়েট তৃণমূল নেতা বিধায়ক তথা প্রাক্তন মন্ত্রীরা গেরুয়া শিবিরের ছাতার তলায় আসতে শুরু করেছিলেন। এদিকে দলবদল করে বিজেপিতে নাম লেখানো প্রায় সিংহভাগ নেতা-নেত্রীদের টিকিট দিয়ে রাজ্যে ক্ষমতা দখলের স্বপ্ন যাতে নিশ্চিত করা যায়, তার জন্য উদ্যোগ নিয়েছিল ভারতীয় জনতা পার্টি। কিন্তু স্বপ্নে পৌঁছনো তো দূরের কথা, দুই অঙ্কের সংখ্যা পর্যন্ত পার করতে পারেনি গেরুয়া শিবির।

এদিকে দলবদল করা নেতা-নেত্রীদের টিকিট দিয়ে ভালো জায়গায় পৌঁছে যাবে দল বলে আশা প্রকাশ করা হলেও, ভরাডুবির পর এখন সেই সমস্ত অন্য দল থেকে আসা নেতা-নেত্রীদের ঠিকমত দলীয় কাজে মাথা ঘামাতে দেখতে পাচ্ছে না ভারতীয় জনতা পার্টির রাজ্য এবং কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। যার ফলে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে, তাহলে কি অন্য দল থেকে আসা নেতা-কর্মীরা যারা পরাজিত হয়েছেন, তারা এবার বিজেপির সঙ্গে দূরত্ব তৈরি করতে শুরু করেছেন? ধীরে ধীরে গেরুয়া শিবিরের মায়া কাটিয়ে তারা আবার ফেরার প্রস্তুতি নিচ্ছেন তাদের প্রাক্তন দল তৃণমূল কংগ্রেসে?

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ভোটের ফলাফল প্রকাশের পর রাজ্যজুড়ে হিংসার আবহ তৈরি হয়েছে। আর এই পরিস্থিতিতে সকলে মিলে যাতে আন্দোলনে নামা যায়, তার জন্য আলোচনা এবং কোথায় কি পরিস্থিতি, তা ঠিক করতে বিজেপির পক্ষ থেকে রাজ্য দপ্তরে শুক্রবার একটি বৈঠক ডাকা হয়েছিল। কিন্তু সেই বৈঠকে অনুপস্থিত থাকতে দেখা যায় রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়, সব্যসাচী দত্ত, ভারতী ঘোষ এবং লকেট চট্টোপাধ্যায়ের মত প্রথম সারির বিজেপি নেতা নেত্রীদের।

বিধানসভা ভোটের আগে এই চার নেতা নেত্রী প্রার্থী হিসেবে প্রচার করে বুঝিয়ে দিয়েছিলেন, এবার রাজ্যে পরিবর্তন নিশ্চিত। তৃণমূলের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়ে তাদের জয় যে কেউ আটকাতে পারবে না, তা প্রচারের মধ্যে দিয়ে বার্তা দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন হেভিওয়েট নেতা নেত্রীরা। কিন্তু বাস্তবে এই চার নেতা নেত্রী তো পরাজিত হয়েইছেন। পাশাপাশি যারা তৃণমূল বিজেপিতে এসে টিকিট পেয়ে বিধায়ক হবেন বলে মনস্থির করেছিলেন, তাদের ‌সিংহভাগ নেতা-নেত্রীকেই হারতে হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসের কাছে।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

তবে ভোটে পরাজয় হলেও, সেভাবে দলের সৈনিক হিসেবে দলীয় কোনো আলোচনায় উপস্থিত থাকতে দেখা যাচ্ছে না অন্য দল থেকে আসা নেতা-নেত্রীদের। আর সেটাই বড় আশঙ্কার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে বিজেপির কাছে। তাহলে কি শুধুমাত্র টিকিট পাওয়ার লোভ এবং বিধায়ক হওয়ার লোভেই নির্বাচনের আগে তারা গেরুয়া শিবিরে এসেছিলেন? ভোটে পরাজিত হওয়ার পর লড়াই করার মানসিকতাকে দূরে ঠেলে দিয়ে কেন সেভাবে দলীয় বৈঠকে অংশগ্রহণ করতে দেখা যাচ্ছে না তৃণমূল থেকে আসা অনেক নেতা নেত্রীদের? প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে বিজেপির অন্দরে।

তাহলে কি বিধানসভা নির্বাচনের আগে গেরুয়া বাগানে যেভাবে পদ্মফুল ফুটতে শুরু করেছিল, এবার সেই পদ্মের বোটা আবার শুকিয়ে যাচ্ছে? এদিন এই প্রসঙ্গে বিজেপির রাজ্য সভাপতি তথা সাংসদ দিলীপ ঘোষ বলেন, “করোনা পরিস্থিতির জন্য অনেকে আসেননি। শারীরিক অসুস্থতার জন্য বেশ কয়েকজন আসেননি। তবে দলের সঙ্গে সবার সব সময় যোগাযোগ রয়েছে।” একাংশ বলছেন, ভোটে ভরাডুবির পর থেকেই অন্য দল থেকে আসা নেতাদের টিকিট দেওয়া যে খুব একটা ভালো হয়নি, তা বুঝিয়ে দিয়েছেন একাংশ।

এক্ষেত্রে দলের পুরোনো কর্মীরা বেশ কিছু জায়গায় গুরুত্ব না পাওয়ার কারণে নতুন দলে যোগ দেওয়া নেতাদের টিকিট দেওয়ার জন্য দল ভালো ফল করতে পারেনি বলে দলের অন্দরে দাবি উঠেছে। আর এই পরিস্থিতিতে ভরাডুবির পর যেভাবে টিকিট দেওয়া অনেক নেতাকে দেখতে পাওয়া যাচ্ছে না, তাতে গেরুয়া শিবির কার্যত হতাশ। যদি অন্য দল থেকে আসা নেতা-নেত্রীদের অনুপস্থিতির কারণ দলবদল হয়, তাহলে তা যে ভবিষ্যতে বিজেপিকে যথেষ্ট চাপে ফেলে দেবে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না।

তবে সংগঠনকে শক্তিশালী করতে এবং তৃণমূলের বিরুদ্ধে চাপ সৃষ্টি করতে গেলে সকল স্তরের নেতৃত্বদের এখন থেকেই কাজে লাগাতে হবে বলে মনে করছেন একাংশ। সব মিলিয়ে গোটা পরিস্থিতি কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়, দলীয় বৈঠকে পরাজিত নেতা-নেত্রী বা দলবদলকারী নেতা-নেত্রীদের একাংশের অনুপস্থিতি বিজেপির ভবিষ্যতে বিজেপিকে কোথায় নিয়ে গিয়ে দাঁড় করায়, সেদিকেই নজর থাকবে সকলের।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!