প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – সামনেই 2021 এর নির্বাচন। যত দিন যেতে শুরু করেছে, ততই তৃণমূলের চাপ বাড়ছে। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছে গেছে যে, প্রতিনিয়ত তৃণমূলের ঘর ভাঙতে শুরু করেছে। শুভেন্দু অধিকারী বিজেপিতে যোগদান করার পর কার্যত শাসকদলের অনেক সভা সমিতিতে ঠিকমত জনসমাগম হচ্ছে না বলে দাবি করছেন বিরোধীরা। আর এই পরিস্থিতিতে ভিড় বাড়াতে এবং নিজেদের দিকে মানুষের সমর্থন রাখতে অভিনেতাদের কি টার্গেট করতে শুরু করল তৃণমূল কংগ্রেস! বলা বাহুল্য, তৃণমূলের গুরুত্বপূর্ণ পদে রয়েছেন বিশিষ্ট অভিনেতা সোহম চক্রবর্তী।

তিনি তৃণমূল যুব কংগ্রেসের সহ-সভাপতি। তবে বর্তমানে যেভাবে তিনি বিভিন্ন জেলায় মিছিল মিটিংয়ে উপস্থিত হচ্ছেন, বক্তব্য রাখছেন, তাতে কিছুদিন আগে পর্যন্ত তাকে এই ভাবে তৃণমূলের সক্রিয় হতে দেখা যায়নি। স্বাভাবিকভাবেই বিধানসভা নির্বাচনের আগে সোহম চক্রবর্তীর তৃনমূল কংগ্রেসের হয়ে এভাবে অতি সক্রিয়তা নিয়ে নানা মহলে তৈরি হয়েছে গুঞ্জন।

অনেকে বলছেন, নির্বাচনের সঙ্গে মানুষের অত্যন্ত নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে। যে কোনো নির্বাচনেই আগেই মিটিং-মিছিলে ভিড় দেখে অন্তত বোঝা যায়, যে কোনো দলের দিকে এবার পাল্লা ভারী! সেদিক থেকে বিজেপি যখন বিভিন্ন হেভিওয়েট নেতা নেত্রীদের বাংলা দখলের কৌশল সাজাতে শুরু করেছে, তখন তৃণমূল কংগ্রেস চাপে থাকা সত্ত্বেও, বিশিষ্ট অভিনেতা অভিনেত্রীদের আসরে নামিয়ে বিজেপিকে পাল্টা চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিতে শুরু করেছেন।

এক্ষেত্রে সোহম চক্রবর্তীর মত বিশিষ্ট অভিনেতা যে তাদের প্রধান মুখ, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। আর এখানেই একাংশ প্রশ্ন করছেন, আসলে সোহম চক্রবর্তীর মত অভিজ্ঞ ব্যক্তিকে এখন সামনের সারিতে নিয়ে এসে বাংলার মানুষের মন জয় করার চেষ্টা করছেন তৃণমূল কংগ্রেস। কিন্তু এসব করে লাভের লাভ কিছুই হবে না। সোহম চক্রবর্তীকে অভিনয়ের মঞ্চে মানায়, কিন্তু রাজনীতিতে নয়।

ইতিমধ্যেই তৃণমূল যুব কংগ্রেসের সহ-সভাপতি তথা বিশিষ্ট অভিনেতা সোহম চক্রবর্তী বিভিন্ন জেলায় মিটিং মিছিলের মধ্য দিয়ে সদ্য তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগদানকারী শুভেন্দু অধিকারী সহ অন্যান্যদের কড়া ভাষায় আক্রমণ করতে শুরু করেছেন। কিন্তু সোহম চক্রবর্তীর মুখ থেকে শুভেন্দু অধিকারীর মত পরিপক্ক রাজনীতিবিদ সম্পর্কে এই ধরনের মন্তব্য আদতে শোভা পায় না বলে দাবি করছেন একাংশ।

বিরোধীদের বক্তব্য, আসলে তৃণমূলের এখন বলার মত লোক নেই। তাই সোহম চক্রবর্তীর মতো অভিনেতাকে দিয়ে তৃণমূল কংগ্রেস জনসমর্থন আদায় করতে চাইছে। মানুষ তৃণমূলের বুজরুকি ধরে ফেলেছে। তাই চিত্র অভিনেতাদের ময়দানে নামিয়ে তৃনমূল কংগ্রেস মানুষের জনসমর্থন আদায় করার চেষ্টা করছে। তবে সোহম চক্রবর্তীকে নিয়ে বিরোধীদের তরফ থেকে প্রশ্ন করা হলেও, তাকে গুরুত্ব দিতে নারাজ তৃণমূল কংগ্রেস এ দিনেই প্রসঙ্গে পূর্ব বর্ধমান জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি স্বপন দেবনাথ বলেন, “মানুষের ভিড় বলে দিচ্ছে তারা কার সঙ্গে আছে। এই জেলা থেকে এসব আসনে তৃণমূল কংগ্রেস বিপুল ভোটে জয়ী হবে।”

তবে তৃণমূলের পক্ষ থেকে যে কথাই বলা হোক না কেন, বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অভিনেতা এবং রাজনৈতিক নেতার মধ্যে যথেষ্ট পার্থক্য রয়েছে। বর্তমানে রাজনীতিতে চমকের জন্য বিভিন্ন রাজনৈতিক দল অভিনেতা-অভিনেত্রীদের নিজেদের প্রচারের কাজে লাগায়। কিন্তু মানুষ কিছুক্ষণের জন্য সেটাকে চমক হিসেবে নিলেও, আদতে ভোটবাক্সে অনেক ক্ষেত্রেই তার প্রতিফলন ঘটে না।

স্বাভাবিকভাবেই যখন গোটা রাজ্যে বিজেপির হাওয়া প্রবলভাবে বাড়তে শুরু করেছে এবং তৃণমূলের ঘর ভাঙতে শুরু করেছে, তখন তৃণমূল অভিনেতা সোহম চক্রবর্তীকে ময়দানে নামিয়ে আদৌ কতটা লাভবান হবে, তা এখন সংশয়ের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে বিশেষজ্ঞদের কাছে। সব মিলিয়ে গোটা পরিস্থিতি কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়, সোহম চক্রবর্তীকে সামনে রেখে তৃণমূল কংগ্রেস জনসমর্থন আদায় করতে যে প্রচার করছে, তা কতটা তাদের পালে হাওয়া দিতে পারে, সেদিকেই নজর থাকবে সকলের।