এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > উত্তরবঙ্গ > রাজনৈতিক বিরোধ উধাও! করোনা আবহে হাতে হাত মিলিয়ে আর্তের সেবায় তৃণমূল-সিপিএম

রাজনৈতিক বিরোধ উধাও! করোনা আবহে হাতে হাত মিলিয়ে আর্তের সেবায় তৃণমূল-সিপিএম


সেবাই পরম ধর্ম! কথাটা অনেকবার শোনা গেলেও এর মর্ম অনুধাবন করতে পারেনা অনেকেই। বর্তমানে দেশের যা পরিস্থিতি সে ক্ষেত্রে যদি মানুষের সেবায় নিয়োজিত হয় সবাই, তাহলে হয়তো ছবিটা অন্যরকম হতো। তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে এরকম টুকরো অনেক ছবি আমাদের কাছে উঠে এসেছে। অন্যদিকে রাজনৈতিক দলাদলি, বাকবিতণ্ডাও আমরা বহু দেখেছি। কিন্তু এবার সম্পূর্ণ অন্য ছবি দেখল সারা রাজ্য। সম্প্রতি উত্তরবঙ্গের প্রত্যন্ত এলাকার জলপাইগুড়ি জেলার রাজগঞ্জ পঞ্চায়েত সমিতিতে দেখা গেছে দুই বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতা একযোগে মানুষের সেবায় নিজেদের নিয়োজিত করেছেন।

এ ছবি সত্যিই অনন্য। রবিবার জলপাইগুড়ি জেলার রাজগঞ্জ পঞ্চায়েত সমিতির তৃণমূল কৃষি কর্মাধ্যক্ষ রৌশন হাবিব এবং সন্ন্যাসীকাটা গ্রাম পঞ্চায়েতের বিরোধী দলনেতা সিপিএমের সৌকত আলী একযোগে শিলিগুড়ি জলপাইগুড়ি সড়কের রাধাবাড়ি এলাকায় পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য খাবারের ব্যবস্থা করলেন রীতিমত লঙ্গরখানা করে। দীর্ঘদিন ধরেই পরিযায়ী শ্রমিকরা বিভিন্ন রাজ্য থেকে পশ্চিমবঙ্গের ফিরছেন। যদিও শ্রমিক স্পেশাল ট্রেন কিংবা বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা স্পেশালভাবে বাসে করে পরিযায়ী শ্রমিকদের আনার ব্যবস্থা করলেও এখনো বহু শ্রমিক পায়ে হেঁটে বাড়ির রাস্তা ধরেছেন।

তাঁদের জন্যই রবিবার খাবারের আয়োজন হয়েছিল রাধাবাড়ি এলাকায়। এই পরিপ্রেক্ষিতে পঞ্চায়েত সমিতির কৃষি কর্মাধ্যক্ষ এদিন জানান, দীর্ঘদিন ধরেই রাস্তা দিয়ে শয়ে শয়ে শ্রমিক যাচ্ছে ক্ষুধার্থ, নিদ্রাহীন অবস্থায় তাঁরা হেঁটে চলেছে। অবশেষে সিপিএমের পঞ্চায়েত সদস্যের সাথে হাত মিলিয়ে এই ব্যবস্থা করা হয়েছে। অন্যদিকে সিপিএমের গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য জানিয়েছেন, রাজনীতির অনেক ঊর্ধ্বে মানুষ। তাই মানুষ যখন বিপদে পড়েছে, তখন তার পাশে থাকাটাই আশু কর্তব্য। তাই তৃণমূলের পক্ষ থেকে এ ধরনের প্রস্তাব এলেও তিনি রাজি হয়েছেন।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

অন্যদিকে রাজগঞ্জ থানার পুলিশ কর্মীরাও দুই বিরোধী দলের নেতার এই সাধু উদ্যোগ দেখে চুপ করে বসে থাকেননি। তাঁরাও জেলা প্রশাসনের নির্দেশ অনুযায়ী রাজগঞ্জ থানার উদ্যোগে রাধাবাড়িতে স্ক্রীনিং ক্যাম্প চালাতে শুরু করেছেন। এর ফলে শ্রমিকদের পরীক্ষার জন্য সেখানে দাঁড়াতেই হচ্ছে। অনেকেই পরিশ্রান্ত হয়ে বসে পড়ছেন। এদিকে দলে দলে শ্রমিকরাও ভিড় করছেন। এই অবস্থায় যখন সেখানে খাবারের আয়োজন হয়েছে তা দেখে শ্রমিকরাও যথেষ্ট আনন্দিত বলে জানা গেছে। যদিও দুই বিরোধীদলের কাণ্ডকারখানা দেখে তারা যথেষ্টই অবাক হয়েছে বলে জানা গেছে।

অন্যদিকে বিশেষজ্ঞদের মতে, এ ধরণের কাজ সম্পূর্ণ অনন্য নজির সৃষ্টি করলো বাংলার রাজনৈতিক ইতিহাসে। যখন মানবতাকে মূল লক্ষ্য করে রাজনীতির কারিগররা একযোগে পরিস্থিতি সামাল দিতে কাজ শুরু করেন, তা যথেষ্ট প্রশংসার দাবি রাখে। তবে রাজনৈতিক মহলে চর্চা শুরু হয়েছে সব থেকে বেশি দুই বিরোধীদলের একযোগে কাজে নামা নিয়ে। আপাতত পরিশ্রান্ত মানুষের মুখে খাবার তুলে দেওয়া ছাড়া অবশ্য অন্য কোন দিকে মনোযোগ দিতে রাজি নন রৌশন হাবিব এবং সৌকত আলী।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!