এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > কিছু কাজ করতে হয় দেশের স্বার্থে – শিক্ষকদের করা মামলায় হাইকোর্টের পর্যবেক্ষনের পিছনে সত্যিটা কি?

কিছু কাজ করতে হয় দেশের স্বার্থে – শিক্ষকদের করা মামলায় হাইকোর্টের পর্যবেক্ষনের পিছনে সত্যিটা কি?


ডিও বা বিএলও ডিউটি নিয়ে রাজ্যের প্রাথমিক শিক্ষকদের ক্ষোভ দীর্ঘদিনের – আর সেই ক্ষোভ ধীরে ধীরে আকাশ ছোঁয়ায় কতকটা অনন্যপায় হয়েই রাজ্যের প্রাথমিক শিক্ষকদের একাংশ শিক্ষক ঐক্য মুক্ত মঞ্চের নেতৃত্ত্বে কলকাতা হাইকোর্টের স্মরণাপন্ন হয়েছেন। বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তীর এজলাসে সেই মামলায় শিক্ষক ঐক্য মুক্ত মঞ্চের তরফে সওয়াল করেন শিক্ষা সমন্ধীয় প্রখ্যাত আইনজীবী ফিরদৌস শামিম।

দীর্ঘ ৪৫ মিনিটের সওয়াল-পাল্টা সওয়ালে গত ১৪ তারিখের আদালত কক্ষ রীতিমত জমে উঠেছিল। ফিরদৌস সাহেব যথারীতি সুপ্রিম কোর্টের আইন ও বিভিন্ন রায়ের কথা তুলে ধরে তাঁর সওয়ালে জানান, ১ লা সেপ্টেম্বর থেকে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত রাজ্যের প্রাথমিক শিক্ষকদের যে ডিও, বিএলও বা সুপারভাইসরের ডিউটি করতে হচ্ছে তা রীতিমত ‘বেআইনি’, তাই এর উপর আডল্ট স্থগিতাদেশ দিক। পাল্টা সওয়ালে রাজ্য সরকার বা নির্বাচন কমিশনের তরফে জানানো হয় যে – নির্বাচনী প্রক্রিয়ার একটি গুরুত্ত্বপূর্ন অংশ এই ভোটার তালিকার কাজ, যা ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গেছে। যদি এর উপর স্থগিতাদেশ আনা হয় তবে তা নির্বাচনী প্রক্রিয়ার উপর বড়সড় প্রভাব ফেলবে।

আরো খবর পেতে চোখ রাখুন প্রিয়বন্ধু মিডিয়া-তে

এবার থেকে প্রিয় বন্ধুর খবর পড়া আরো সহজ, আমাদের সব খবর সারাদিন হাতের মুঠোয় পেতে যোগ দিন আমাদের হোয়াটস্যাপ গ্রূপে – ক্লিক করুন এই লিঙ্কে

রাজ্য সরকার বা নির্বাচনী কমিশনের সেই অনুরোধ মেনে নিয়ে বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী আপাতত, প্রাথমিক শিক্ষকদের ডিও বা বিএলও ডিউটির কোনো স্থগিতাদেশ দেন নি। তিনি রাজ্য সরকার ও নির্বাচন কমিশনের কাছে বেশ কিছু প্রশ্নের উত্তর চেয়েছেন ও জানিয়েছেন আগামী বুধবার সেই প্রশ্নের উত্তর পাওয়ার পর তিনি এই মামলার রায়দান করবেন। এর মধ্যেই গতকাল, বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়, এই মামলায় বিচারপতি চক্রবর্তী তাঁর পর্যবেক্ষনে বলেছেন – কিছু কাজ করতে হয় দেশের স্বার্থে। আর এই খবর সামনে আসার পরেই চূড়ান্ত জল্পনা শুরু হয়ে যায় রাজ্য জুড়ে। বহু মানুষেরই প্রশ্ন আসতে থাকে – তাহলে কি এই সংবেদনশীল মামলায় বিচারপতি বলতে চেয়েছেন যে ডিও বা বিএলও ডিউটি নিয়ম মেনে না হলেও ‘দেশের স্বার্থে’ তা করতে হবে?

এই জল্পনার অবসানে আমরা যোগাযোগ করি শিক্ষক ঐক্য মুক্ত মঞ্চের অন্যতম শীর্ষনেতা তথা প্রতিবাদী শিক্ষক মইদুল ইসলামের। মইদুলবাবু সেদিন নিজে আদালতে উপস্থিত ছিলেন, তাই আমরা তাঁর কাছে জানতে চাই বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী সত্যিই এমন কিছু বলেছেন কিনা? জবাবে মইদুলবাবু স্পষ্ট জানিয়ে দেন, সেদিন বিচারপতি চক্রবর্তী তাঁর পর্যবেক্ষনে অনেক কিছুই জানিয়েছিলেন। সেখান থেকে একটিমাত্র লাইন তুলে ধরে তার ভিত্তিতে খবর পরিবেশিত হলে ভুল বার্তা যাবে মানুষের কাছে। আর এই কথা বিচারপতি মোটেও বলেন নি, একথা বলেছিলেন বিপক্ষের আইনজীবীরা। উল্টে বিচারপতি চক্রবর্তী সেদিন জানতে চেয়েছিলেন, এক্সেলেন্স আগে নাকি ইলেকশন আগে? ফলে পুরো ব্যাপারটিই উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে বিচারপতির মুখে বসিয়ে মানুষকে অহেতুক বিভ্রান্ত করার একটা অপচেষ্টা চলছে।

মইদুলবাবু আরো বলেন, আসলে এই মামলাটি অত্যন্ত সংবেদনশীল। সেদিনের যে সওয়াল হয়েছে তাতে আমরা সন্তুষ্ট। এমনকি বিচারপতি রাজ্য সরকার বা রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে বেশ কিছু প্রশ্নের উত্তর দিতে বলেছেন, যার পরিপ্রেক্ষিতে এটা স্পষ্ট যে উনিও কোথাও গিয়ে অনুধাবন করছেন যে এক্ষেত্রে আইন মোতাবেক কাজ হয় নি। আর তাই, আগামী বুধবার রাজ্য সেইসব প্রশ্নের কি উত্তর দেয় সেগুলি খুবই গুরুত্ত্বপূর্ন। কেননা তার উপর ভিত্তি করেই এই মামলার রায়দান হবে। তবে আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি, কিছু নির্দিষ্ট মহল থেকে তার আগে সুপরিকল্পিতভাবে এইসমস্ত বিভ্রান্তিকর খবর ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। তবে আমাদের আশা, এইসব বিভ্রান্তিকর খবর এই মামলায় কোনো প্রভাব ফেলবে না। বিচারপতি সবদিক বিবেচনা করে মানবিক রায়ই দেবেন।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!