জঙ্গলমহল থেকে জনসভা – আড়াআড়ি বিভক্ত গেরুয়া শিবিরকে মিলিয়ে দিল শাসকদল! কলকাতা পুরুলিয়া-ঝাড়গ্রাম-বাঁকুড়া বিশেষ খবর মেদিনীপুর রাজ্য July 17, 2018 গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে জঙ্গলমহলে বিজেপির ভালো ফল করার পর থেকেই কার্যত দ্বিধাবিভক্ত গেরুয়া শিবির। মুকুল রায় আর দিলীপ ঘোষের অনুগামীদের মধ্যে কার্যত ঠান্ডা লড়াই শুরু হয়ে গিয়েছিল। জঙ্গলমহলের ‘হাসির’ মূল ‘হকদার’ কে – মুকুল রায় নাকি দিলীপ ঘোষ? মুকুল রায়ের অনুগামীদের যুক্তি ছিল, তিনি বিজেপিতে আসার পর একদা তাঁর হাতে গড়া তৃণমূলের সংগঠনের অনেকটাই আজ বিজেপিতে এসেছে, আর তাই পঞ্চায়েতে তার সুফল মিলেছে। এবার থেকে প্রিয় বন্ধুর খবর পড়া আরো সহজ, আমাদের সব খবর সারাদিন হাতের মুঠোয় পেতে যোগ দিন আমাদের হোয়াটস্যাপ গ্রূপে – ক্লিক করুন এই লিঙ্কে অন্যদিকে দিলীপ ঘোষের অনুগামীদের পাল্টা যুক্তি ছিল যে মুকুল রায় বিজেপিতে যোগদানের অনেক আগে থেকেই, যখন থেকে রাজ্যে সভাপতির দায়িত্ত্বভার নিয়েছেন দিলীপ ঘোষ, রাজ্যে ভালো ফল করতে শুরু করেছে বিজেপি। তাছাড়া তিনি নিজে জঙ্গলমহলের ‘ভূমিপুত্র’, ফলে জঙ্গলমহলের ভালো ফলের রসায়ন আসলে দিলীপবাবুর হাতে করে গড়ে তোলা সংগঠন। কিন্তু পঞ্চায়েত নির্বাচনে গেরুয়া শিবিরের তরফে মূল দায়িত্ত্বে ছিলেন মুকুল রায় আর সেখানে ‘সসম্মানে’ উত্তীর্ন হওয়ায় তাঁর অনুগামীরা ভেবেছিলেন তাঁকে এবার বড় কোনো পদ দেওয়া হবে, এমনকি সেটা রাজ্য-সভাপতির পদও হতে পারে। কিন্তু বাস্তবে এখনও পর্যন্ত মুকুল রায় বিজেপির একজন ‘সাধারণ কর্মী’ হিসাবেই থেকে গেছেন এবং দিলীপ ঘোষ সদর্পে এখনো সভাপতি পদে অধিষ্ঠিত। শুধু পঞ্চায়েতের সাফল্য নিয়েই নয়, সূত্রের খবর, দুই শিবিরের অনুগামীদের লড়াই গড়িয়েছে রাজ্যে হয়ে চলা একের পর এক বিজেপি শীর্ষনেতার জনসভায় উপচে পড়া ভিড়ের কৃতিত্ত্ব নিয়েও। কিছুদিন আগেই পুরুলিয়ায় জনসভা করে যান বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ আর গতকাল মেদিনীপুরে জনসভা করলেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। দুই জনসভাতেই ছিল চোখে পড়ার মত জনসমাগম। আর তাই এবার, এই ভিড় কার সাংগঠনিক সাফল্যে বেড়েছে দিলীপ ঘোষের নাকি মুকুল রায়ের তা নিয়েও শুরু হয়ে গিয়েছে শীতল লড়াই। প্রধানমন্ত্রীর গতকালের সভার কিছুদিন আগে থেকেই দিলীপ ঘোষ অনুগামীদের দাবি ছিল মেদিনীপুরের সভার সমস্ত দায়িত্ব নাকি নিজে হাতে নিয়েছিলেন দিলীপ ঘোষ। আর তাই সভাস্থলে দুর্ঘটনার সমস্ত দায় তাঁদের ঘরেই যায় বলে দাবি উঠেছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। এদিকে যাঁরা এই দাবি তুলছেন তাঁরা নাকি মুকুল রায়ের অনুগামী বলে পাল্টা দাবি উঠেছে। আর তাই সব মিলিয়ে সোশ্যাল সাইটে এখন মুকুল রায় ও দিলীপ ঘোষের অনুগামীদের লড়াই বেশ জমে উঠেছে। আর এসবের মাঝেই মুচকি হাসছেন শাসকদলের নেতা-কর্মীরা। একে তো ‘বহিরাগত’ এনে সভাস্থল ভরানোর অভিযোগে কোনঠাসা করতে চাইছেন গেরুয়া সমর্থকদের। তার উপরে আবার বড় দাবি, পঞ্চায়েতে গোটা রাজ্যেই তো ঘাসফুল ঝড়, তার মাঝে দু-একটা জেলায় একটু মাথা তুলে দাঁড়িয়ে সেখানেও ‘কৃতিত্ত্ব তুমি কার’ বলে এই লড়াই আসলে প্রমান করে দিচ্ছে বঙ্গ-বিজেপির হাল! কিন্তু ঘাসফুল সমর্থকদের সেই দাবিকে নস্যাৎ করে পাল্টা দিচ্ছেন গেরুয়া সমর্থকেরা। তাঁদের দাবি, দিলীপ ঘোষ বা মুকুল রায় নন, আসলে বিজেপিকে মানুষ আপন করে নিচ্ছেন আর তাই জঙ্গলমহলে পদ্ম ফুটছে, জনসভায় ভিড় উপচে পড়ছে। আপনার মতামত জানান -