এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > উন্নয়নকে হাতিয়ার করে মুর্শিদাবাদকে বিরোধী শূন্য করতে বড়সড় পদক্ষেপ শুভেন্দু অধিকারীর

উন্নয়নকে হাতিয়ার করে মুর্শিদাবাদকে বিরোধী শূন্য করতে বড়সড় পদক্ষেপ শুভেন্দু অধিকারীর

লোকসভা ভোটে দলের ভরাডুবির পর যে সমস্ত জেলায় তৃণমূলের পরাজয় হয়েছে সেই সমস্ত জেলার সাংগঠনিক দায়িত্বে বেশিরভাগটাই বর্তেছে, তৃণমূলের তরুণ তুর্কি হিসেবে পরিচিত রাজ্যের পরিবহনমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীর ওপর। অতীতে দলনেত্রীর নির্দেশমতো কংগ্রেস অধ্যুষিত মালদা, মুর্শিদাবাদের দায়িত্ব নেওয়ার পরই সেখানে সেই শুভেন্দু অধিকারীর হাত ধরেই ঘাসফুল ফুটেছে।

আর বিরোধীদের দমন করে সেই সমস্ত জেলায় ঘাসফুল ফোটাতে শুভেন্দুবাবুর মূল অস্ত্র ছিল রাজ্যের উন্নয়ন। আর এবার ফের সেই উন্নয়নকে ঢাল করেই মুর্শিদাবাদ জেলায় বিরোধীদের ‘প্রাক্তন’ করার কৌশল নিয়েছেন পরিবহণ মন্ত্রী তথা জেলা তৃণমূলের পর্যবেক্ষক শুভেন্দু অধিকারী।

সূত্রের খবর, আগামী 21 সেপ্টেম্বর মুর্শিদাবাদে আসবেন শুভেন্দুবাবু। আর এই জেলার জঙ্গিপুরে এসে প্রায় ৫০টি প্রকল্পের উদ্বোধন এবং শিলান্যাস করবেন তিনি। পাশাপাশি জেলায় উন্নয়নের গতি আরও ত্বরান্বিত করে পরিবহণ এবং সেচমন্ত্রী হিসেবে ওইদিনই প্রশাসনিক বৈঠকও করার কথা রয়েছে তার।

এদিন এই প্রসঙ্গে শুভেন্দু অধিকারী বলেন, “ওইদিন দুপুরে উন্নয়মূলক সভাও হবে। জেলার উন্নয়ন যজ্ঞ শুরু হয়েছে। সেই ধারাকে আরও বেশি এগিয়ে নিয়ে যাওয়াই আমাদের লক্ষ্য।” প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, সেদিন পরিবহন মন্ত্রী হিসেবে শুভেন্দু অধিকারী জঙ্গিপুর থেকে জেলা পরিষদের বেশ কিছু সংস্কার হওয়া রাস্তার উদ্বোধন করবেন।

এছাড়াও কিছু কালভার্ট উদ্বোধন করবেন তিনি। এদিন এই ব্যাপারে জেলা পরিষদের সভাধিপতি মোশারফ হোসেন মণ্ডল বলেন, “শুভেন্দুবাবু প্রায় ৩০টি রাস্তার উদ্বোধন এবং শিলান্যাস করবেন। এছাড়া বাংলা আবাস যোজনা প্রকল্পে বেশ কিছু উপভোক্তার হাতে চেক তুলে দেবেন। পরিবহণ এবং সেচ দপ্তরের একাধিক প্রকল্পের উদ্বোধন এবং শিলান্যাস করবেন। তালিকা তৈরির কাজ এখনও চলছে।”

রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, আগামীদিনে বিধানসভা নির্বাচনে এই মুর্শিদাবাদ থেকেই সব থেকে বেশি আসনে জয়ী হওয়ার টার্গেট নিয়েছে তৃণমূল। তবে লোকসভা নির্বাচনের নিরিখে এমনিই রাজ্যের শাসকদল এখানকার 16 টি বিধানসভা কেন্দ্রে এগিয়ে রয়েছে। আর সেদিক থেকে সামনের বিধানসভা নির্বাচনে যাতে এই জেলা থেকে সেই আসন পাওয়ার সংখ্যা আরও বাড়ানো যায়, সেই দিকেই টার্গেট রেখেছে তৃণমূল।

সূত্রের খবর, শনিবার মুর্শিদাবাদের ভরতপুরের একটি সভা থেকে কংগ্রেসকে কড়া ভাষায় আক্রমণ করেন মুর্শিদাবাদ জেলা তৃণমূলের পর্যবেক্ষক। তিনি বলেন, “এই জেলায় কংগ্রেস প্রাক্তন হয়ে গিয়েছে। সেকথা বিধানসভায় বলেছিলাম বলে এক কংগ্রেস নেতার খুব রাগ হয়েছিল। লোকসভা নির্বাচনের ফলের নিরিখে ওরা তো হেরে বসেই আছে। নির্বাচনে বহরমপুর লোকসভা কেন্দ্র থেকে কংগ্রেস, বিজেপি এবং সিপিএম একসঙ্গে জোটবদ্ধ হয়ে লড়েছিল।”

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

তৃণমূলের অনেকে বলছেন, এই মুর্শিদাবাদ পিছিয়ে পড়া জেলা। ফলে এখানে যদি তৃণমূলকে ভালো ফল করতে হয় তাহলে উন্নয়নকে তাস করেই সকলের মন জয় করতে হবে। পুজোর পর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়েরও জেলায় আসার কথা রয়েছে। স্থানীয়দের অনেকে বলছেন, “জেলায় আগের থেকে পরিবহণ ব্যবস্থার অনেক উন্নতি হয়েছে। উত্তরবঙ্গ পরিবহণ সংস্থা দূরপাল্লা ছাড়াও জেলাতেও একাধিক রুটে বাস চালাচ্ছে। তাতে ডোমকল এবং জলঙ্গির মতো প্রত্যন্ত এলাকার বাসিন্দারাও উপকৃত হচ্ছেন।”

তবে উন্নয়ন হয়েছে একথা সকলে একবাক্যে মেনে নিলেও এই জেলায় ঘাসফুল ফোটানোর মূল কারিগর হিসেবে শুভেন্দু অধিকারী মুর্শিদাবাদের জঙ্গিপুরে আসলে সেই জঙ্গিপুরের সভা থেকে তিনি উদ্বোধন এবং শিলান্যাস ছাড়া নতুন কী ঘোষণা করেন! এখন সেদিকেই তাকিয়ে রয়েছেন অনেকে।

এদিন এই প্রসঙ্গে তৃণমূল সাংসদ সদস্য খলিলুর রহমান বলেন, “ওইদিনের সভা নিয়ে রবিবার আমরা প্রস্তুতি বৈঠক করব। উন্নয়নী সভার পর কী কী প্রকল্পের উদ্বোধন বা শিলান্যাস হবে সেটা পরে জানাতে পারব।” অন্যদিকে এই ব্যাপারে তৃণমূলের জঙ্গিপুর ব্লকের সভাপতি বিকাশ নন্দ বলেন, “রবীন্দ্রভবনের সভায় জনপ্রতিনিধিরা হাজির থাকবেন।”

তবে শুধু এই সভাই নয়, পরবর্তীতে মুর্শিদাবাদ জেলা তৃণমূলের পর্যবেক্ষক তথা মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী ডোমকল মহকুমাতেও বৈঠক করবেন। আর সেখানেও তিনি বেশ কিছু প্রকল্পের উদ্বোধন এবং শিলান্যাস করতে পারেন বলে মনে করা হচ্ছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, শুভেন্দু অধিকারী এই মুর্শিদাবাদ জেলার দায়িত্ব নেওয়ার পর সেখানে তৃণমূল ব্যাপক সাফল্য পেয়েছে।

তবে শুধু সাংগঠনিক দিক দিয়েই নয়, এবার উন্নয়নের বাতাবরণের মধ্যে দিয়েও এই জেলায় সাধারণ মানুষকে আরও তৃণমূলের দিকে টানতে চান জেলা তৃণমূলের পর্যবেক্ষক। আর তাইতো এবার এক এক করে লাগাতার উন্নয়নমূলক সভার মধ্যে দিয়ে সাধারণ মানুষের সঙ্গে একদিকে জনসংযোগ, আরেকদিকে নিজেদের সংগঠন বাড়ানো এই দুইয়ের মধ্যে দিয়ে আগামী বিধানসভা নির্বাচনের আগে নিজের কাজ হাসিল করে নিতে চাইছেন শুভেন্দু অধিকারী বলে মত বিশ্লেষকদের।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!