উপনির্বাচনের সাফল্য ধরে রেখেই বিধানসভায় বাজিমাতের ভাবনা! রাজ্যজুড়ে বেরিয়ে পড়ল পিকের টীম কলকাতা রাজ্য December 5, 2019 2019 এর লোকসভা ভোটে তৃণমূল প্রায় কোণঠাসা অবস্থায় পৌঁছে যায়। কোন রকমে জিতে মুখরক্ষা করে তাঁরা। অবস্থা সঙ্গীন বুঝেই তৃণমূল সুপ্রিমো তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তৎক্ষণাৎ শরণাপন্ন হন ভোট বিশেষজ্ঞ প্রশান্ত কিশোরের। এবং তারপর থেকেই প্রশান্ত কিশোরের পরিকল্পনামাফিক কাজ করে চলেছেন তৃণমূল দল। যার প্রথম পদক্ষেপ, সম্প্রতি হয়ে যাওয়া তিনটি রাজ্যের বিধানসভা উপনির্বাচনে অংশগ্রহণ করে তিনটিতেই ব্যাপকহারে জয় লাভ তৃণমূলের। পিকের টিম প্রথম পরীক্ষায় বসলো ছয় মাসের মধ্যেই আর তার পরেই দেখা যাচ্ছে ফার্স্ট ডিভিসনে পাস করেছে তাঁরা। প্রতিপক্ষকে 3-0 ব্যবধানে হারিয়ে উপ নির্বাচনে তৃণমূলের জেতার সাফল্যের পেছনে ভোট গুরু প্রশান্ত কিশোরের ম্যাজিক কাজ করার কথা মানছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের অনেকেই। আর এবার উপনির্বাচনের সাফল্যকে বজায় রাখতে বিধানসভা নির্বাচনের সাফল্য পরিকল্পনায় রাজ্যজুড়ে সমীক্ষা শুরু করেছে পিকের টিম। আত্মতুষ্টিতে না ভুগে এবার প্রশান্ত কিশোরের টিম ছড়িয়ে পড়লো পশ্চিমবঙ্গের দিকে দিকে। উপনির্বাচনের পর বিধানসভা নির্বাচনের দিকে লক্ষ্য রেখে তাঁরা বুথে বুথে ঘুরে সমীক্ষা চালাবে বলে জানা গেছে। পূর্বে তৃণমূলের দায়িত্ব নিয়ে প্রশান্ত কিশোর প্রথমেই শুরু করেছিল ‘দিদিকে বল’ জনসংযোগ কর্মসূচি। এবং ‘দিদিকে বল’র মাধ্যমে সমস্ত বিধায়ক জনসাধারণের ঘরে ঘরে পৌঁছে যায় জনসংযোগ করতে। তাঁদের সুযোগ-সুবিধা-অসুবিধার কথা টিম পিকে শোনেন তাঁদের মুখেই। আর জনসংযোগ যে হয়েছে তা উপনির্বাচনের সাফল্যই প্রমাণ করছে। এবার সেই সাফল্যকে ধরে রাখতে প্রশান্ত কিশোর আগামি পুরসভা ভোট 2020 এবং বিধানসভা ভোট 2021 এর দিকে নজর দিচ্ছেন। শুধুমাত্র পরামর্শ দিয়ে তিনি থেমে থাকছেন না। তাঁর টিম জনসংযোগে নেমে পড়েছেন ইতিমধ্যে। এলাকায় এলাকায় ঘুরে তাঁরা। সাধারণ মানুষের মনে বিধায়কদের প্রতি কি মনোভাব আছে তা জানার চেষ্টা করে যাচ্ছেন। রীতিমতো খাতা-কলম নিয়ে তাঁরা এলাকায় এলাকায় ঘুরছেন। ইতিমধ্যে কোচবিহারে তাঁদের কাজ শুরু হয়ে গেছে। এছাড়াও তাঁরা খুঁজে খুঁজে পুরনো তৃণমূল কর্মীদের বার করছেন এবং তাঁদের সংগঠনের কাজে লাগাচ্ছেন। একইভাবে তাঁরা কালিয়াগঞ্জ, করিমপুর এবং খড়গপুরেও কাজ করেছে এবং তার সুফল রাজ্যবাসী দেখেছে। আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - এবার প্রতিটি বিধানসভায় বুথে বুথে পৌঁছে যাবার পরিকল্পনা নিয়েছে পিকের টিম। তবে সামনেই পুরসভার নির্বাচন, তাই বসে না থেকে পুরসভা নির্বাচনের আগেই এই সমীক্ষা সম্পন্ন করতে চাইছে তাঁরা। এই সমীক্ষা পুরসভা এবং বিধানসভা নির্বাচন – দুই নির্বাচনেই কাজে লাগবে বলে মনে করা হচ্ছে। এছাড়া টিম পিকে কাজে নেমে প্রতি বুথে 10 জন তৃণমূল কর্মীকে বেছে নিয়েছেন। যাঁদের মধ্যে থাকছেন তৃণমূলের সক্রিয় নেতা-কর্মী, চাকরিজীবী, বেসরকারি সংস্থার কর্মী, সমাজের সংস্কৃতি সচেতন মানুষ এবং কৃষক-দিনমজুররাও। সুতরাং বলা যায়, প্রশান্ত কিশোরের নজর এখন বাংলার প্রতিটি বুথে, প্রতিটি ঘরে। এবারের উপ নির্বাচনে জেতা তিনটি আসনের মধ্যে খড়গপুর ও কালিয়াগঞ্জে তৃণমূল কখনো জিততে পারেনি এর আগে জন্মানো ইস্তক। তাই খড়্গপুরে এবারের নির্বাচন ছিল রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষের প্রেস্টিজ ফাইট। অন্যদিকে, কালিয়াগঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্রে লোকসভা ভোটে প্রায় 57 হাজারের বেশি ভোটে পিছিয়ে ছিল তৃণমূল। সেখানেও এবার শাসক দল জিতেছে প্রায় দুই হাজারের বেশি ভোটে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, সমস্ত ক্ষেত্রেই প্রার্থী নির্বাচন থেকে একেবারে তৃণমূল স্তরে নিজের সংস্থার কর্মীদের পাঠিয়ে হাল-হকিকত জানা থেকে এনআরসি সহ বিতর্কিত বিষয়ে বক্তব্য রাখা- সমস্ত কিছুই মুখ্যমন্ত্রী তথা দলনেত্রী নিজে যেমন সবকিছু দেখেছেন, তেমনি কোনো না কোনোভাবে প্রশান্ত কিশোরও এই পরিকল্পনায় তাঁর অবদান রেখেছেন। এবার সামনের পুরনির্বাচন এবং বিধানসভা নির্বাচনে প্রশান্ত কিশোর তাঁর ম্যাজিক আবার দেখাতে পারেন কিনা সে দিকে নজর রাখবে তামাম রাজনৈতিক মহল। আপনার মতামত জানান -