বিজেপির কাছ থেকে বোর্ড ছিনিয়ে নিল তৃণমূল, জোর শোরগোল উত্তরবঙ্গে! রাজ্য January 2, 2020 লোকসভা নির্বাচনে উত্তরবঙ্গের মালদা জেলায় বিজেপি একটি আসন দখল করেছিল। তারপরে সেই জেলাতেই তৃণমূল দাগ কাটতে না পারলেও, বিজেপির উত্থান দেখে অনেকে মনে করেছিল, এবার কংগ্রেস গড়ে ফুটতে চলেছে পদ্মফুল। তবে বছরের শুরুতেই পুরাতন মালদহ ব্লকের মঙ্গলবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েত কংগ্রেস-বিজেপি যৌথ বোর্ডের হাতছাড়া হয়ে গেল। যেখানে সেই পঞ্চায়েতের ক্ষমতা দখল করল তৃণমূল কংগ্রেস। সূত্রের খবর, মঙ্গলবার ওই গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান কংগ্রেসের সুরাইয়া বিবি বিজেপি ও সিপিএমের সদস্যদের নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগদান করেন। জানা যায়, এদিন কানির মোড়ে অবস্থিত দলীয় কার্যালয়ে তাদের হাতে তৃণমূলের পতাকা তুলে দেন জেলা তৃণমূলের কার্যকরী সভাপতি দুলাল সরকার। আর বছরের একদম শুরুর দিনে মঙ্গলবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েত তৃণমূলের দখলে চলে আসায় রীতিমত উজ্জীবিত শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস। প্রসঙ্গত, 11 আসন বিশিষ্ট এই গ্রাম পঞ্চায়েতে গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে বিজেপি তিন, কংগ্রেস তিন, সিপিএম এক, নির্দল এক এবং তৃণমূল তিনটি আসন পায়। পরবর্তীতে নির্দলের এক সদস্য তৃণমূলে চলে গেলে কংগ্রেস, বিজেপি এবং সিপিএম মিলে এই পঞ্চায়েতে বোর্ড গঠন করে। কিন্তু বোর্ড গঠনের পর এই তিন দলের মধ্যে তীব্র মতানৈক্য তৈরি হয়। এদিকে এর কিছুদিনের মধ্যেই বিজেপির অস্বস্তি বাড়িয়ে তাদের পঞ্চায়েত সদস্য বিষাদমুনি মুর্মু নাম লেখান তৃণমূলের। যার ফলে তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্য সংখ্যা বেড়ে 5 হয়ে যায়। এদিকে এই ঘটনার পরই এই পঞ্চায়েতের সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেতে রীতিমতো কৌশল গ্রহণ করে তৃণমূল কংগ্রেস। প্রধানের সঙ্গে যোগাযোগ করে সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যদের যাতে নিজেদের দলে যোগদান করানো যায়, তার জন্য চেষ্টা শুরু করে তারা। অবশেষে সেই চেষ্টায় সাফল্য পেল তৃণমূল। এদিন প্রধান ছাড়াও পাঁচ পঞ্চায়েত সদস্য যোগ দিলেন শাসকদলে। যা নিঃসন্দেহে তৃণমূলের কাছে বড়সড় সাফল্য বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। কিন্তু কেন তারা হঠাৎ তৃণমূলে যোগ দিলেন! আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - এদিন এই প্রসঙ্গে মঙ্গলবাড়ি পঞ্চায়েতের প্রধান সুরাইয়া বিবি বলেন, “প্রধান হয়েও দলে থেকে কোনো কাজ করতে পারছিলাম না। তাই তৃণমূলের প্রতিষ্ঠা দিবসে তৃণমূলে এসেছি। আশা করছি, এবার থেকে আমরা এলাকার উন্নয়ন করতে পারব।” এদিকে মঙ্গলবাড়ি পঞ্চায়েতের সদস্যদের নিজেদের দলে যোগদান করিয়ে রীতিমতো উজ্জীবিত জেলা তৃণমূল কংগ্রেস। এদিন এই প্রসঙ্গে মালদহ জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের কার্যকরী সভাপতি দুলাল সরকার বলেন, “মঙ্গলবাড়ি পঞ্চায়েতের প্রধান সহ পাঁচ পঞ্চায়েত সদস্য কংগ্রেস, বিজেপি ও সিপিএম ছেড়ে তৃণমূলে যোগদান করেছেন। সমস্ত রকম নিয়ম মেনেই দলে নিয়েছি। এদিন তাদের হাতে দলের পতাকা তুলে দিয়ে স্বাগত জানানো হয়েছে। আগামী দিনে তৃণমূল পরিচালিত গ্রাম পঞ্চায়েত মঙ্গলবাড়ির মানুষের উন্নয়নের জন্য কাজ করবে।” তাহলে কি মালদহ জেলায় তৃণমূলের উত্থান ঘটতে চলেছে! ভেঙে পড়তে চলেছে বাম-কংগ্রেস এবং বিজেপির দাপট! কেন তারা এই পঞ্চায়েত নিজেদের দখলে রাখতে পারল না! এদিন এই প্রসঙ্গে মালদহ বিধানসভার কংগ্রেস বিধায়ক ভূপেন্দ্রনাথ হালদার বলেন, “যারা এসব করছেন, তারা স্বার্থের জন্য করছেন। মানুষের কথা ভাবছেন না।” অন্যদিকে এই ব্যাপারে পুরাতন মালদহ ব্লকের বিজেপির মন্ডল সভাপতি নিতাই মন্ডল বলেন, “মন থেকে কেউ যাচ্ছে না। ভয় ভীতি দেখিয়ে তৃণমূল এসব করাচ্ছে। তবে তাদের চলে যাওয়ায় বিজেপির কোনো ক্ষতি হবে না। মানুষ আমাদের সঙ্গে আছে।” কিন্তু বিরোধীরা যে কথাই বলুন না কেন, যেভাবে মঙ্গলবাড়ি পঞ্চায়েতে বিরোধী দলের সদস্যরা তৃণমূলে যোগদান করলেন, তাতে তৃণমূল যে মালদা জেলায় অনেকটাই শক্তিশালী হল, সেই ব্যাপারে নিশ্চিত বিশেষজ্ঞরা। এখন গোটা পরিস্থিতি ঠিক কোনদিকে মোড় নেয়! সেদিকেই নজর থাকবে সকলের। আপনার মতামত জানান -