এবার কি তৃণমূল-মুখী সব্যসাচী? তীব্র জল্পনা শুরু শাসকদলের অন্দরে, ভাইরাল পোস্টে সরগরম রাজ্য কলকাতা তৃণমূল নদীয়া-২৪ পরগনা বিজেপি বিশেষ খবর রাজনীতি রাজ্য July 11, 2020 প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – 2019 সালের লোকসভা নির্বাচনের পরবর্তী পরিস্থিতিতে বাংলার রাজনৈতিক সমীকরণ এমন দাঁড়িয়েছিল যে, বলা সম্ভব ছিল না হাতে গোনা দুই চার জন তৃণমূল নেতা বাদ দিয়ে জোড়াফুল শিবিরের কারো অবস্থান চিরস্থায়ী কিনা! প্রতিদিন সকালবেলা খবরের কাগজ খুললেই চোখে পড়ত, আজ এই পৌরসভা তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে চলে গেল, পরশু ওই পঞ্চায়েত সমিতি দিল্লিতে গিয়ে দলবদল করলেন। পরিস্থিতি এতটাই ঘোরালো হয়ে পড়ে যে, কলকাতা সংলগ্ন ব্যারাকপুর লোকসভা কেন্দ্রে সফরে বেরিয়ে কার্যত হেনস্থা হতে হয় স্বয়ং রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এবং তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। এমনকি “মোদি, মোদি” শব্দ তুলে মমতা বন্দোপাধ্যায়ের কনভয় ঘিরে রীতিমতো রাজনৈতিক নৃত্য করতে দেখা যায় একাধিক বিজেপি সমর্থকদের। যার পরবর্তী পরিস্থিতিতে বেজায় ক্ষুব্ধ হয়েছিলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কার্যত 1998 সালে তৃণমূল কংগ্রেস দল গঠন করার পরে দীর্ঘ 13 বছরের বিরোধী রাজনীতিতেও এইরকম অভিজ্ঞতায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কোনোদিন পড়তে হয়নি। বিশেষজ্ঞরা বলতে শুরু করেছিলেন, পশ্চিমবঙ্গে অকাল ভোট এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা। কিন্তু এটাকে প্রশান্ত কিশোরের ম্যাজিক বলুন অথবা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পোড়খাওয়া রাজনীতির অভিজ্ঞতার আস্ফালন, কয়েকদিনের মধ্যেই চিত্রটার পরিবর্তন হতে শুরু করে। আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - এমনিতেও দুই চারটে পৌরসভা এবং দক্ষিণ দিনাজপুর জেলায় প্রাক্তন তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি বিপ্লব মিত্রের হাত ধরে একটা আস্ত জেলা পরিষদ বাদ দিয়ে খুব একটা বেশি বিধায়কের সমাগম ঘটেনি ভারতীয় জনতা পার্টিতে। কিন্তু হঠাৎ করেই সকলকে চমকে দিয়ে বিধাননগরের মেয়র তথা রাজারহাট-নিউটাউনের তৃণমূল বিধায়ক সব্যসাচী দত্তের বাড়িতে আচমকাই লুচি-তরকারি খেতে উপস্থিত হয়ে পড়েন একদা তৃণমূলের সেকেন্ড-ইন-কমান্ড তথা বর্তমান বিজেপি নেতা মুকুল রায়। আর এরপরেই রীতিমত ঝড় শুরু হয় ঘাসফুল শিবিরের অন্দরে। প্রথমার্ধে ববি হাকিম সহ একাধিক নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠক করে সব্যসাচীবাবু জানিয়েছিলেন, তার বাড়িতে হঠাৎ করে মুকুল আগমন শুধুমাত্র রাজনৈতিক সৌজন্যতার বহিঃপ্রকাশ। কিন্তু অচিরেই ধরা পড়ে যায়, মুকুলবাবুর তীব্র রাজনৈতিক পরিকল্পনার কথা। কলকাতার নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে বিজেপির মেগা সভায় ঘাড়ে গেরুয়া উত্তরীয় নিয়ে এবং মুখে জয় শ্রীরাম স্লোগান দিয়ে অমিত শাহের হাত ধরে দল পরিবর্তন করেন সব্যসাচী দত্ত। এর পরের সময়টা রীতিমত ইতিহাস। একাধিকবার তৃণমূল কংগ্রেসের নামে একাধিক অভিযোগ তুলে সরব হতে দেখা গেছে সব্যসাচীবাবুকে। কিন্তু 2020 সালের বর্তমান প্রেক্ষাপটে দাঁড়িয়ে পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতে পুরনো অবস্থান থেকে অনেকটাই ঘুরে দাঁড়িয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। অনেক তৃণমূলত্যাগী কাউন্সিলর, পঞ্চায়েত সমিতির সদস্যরা, এমনকি একমাত্র জেলা পরিষদও পুনরায় ফেরত এসেছে শাসকদলের শিবিরে। শুধু তাই নয়, সকলকে অবাক করা আরেকটি তথ্য রীতিমত কপালে ভাঁজ ফেলাচ্ছে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের। একদিকে তৃণমূল কংগ্রেসের তরফে যেমন দলত্যাগীদের দলে ফেরানোর সবরকম চেষ্টা করা হচ্ছে, অন্যদিকে তেমনই ভারতীয় জনতা পার্টির পক্ষ থেকে দলত্যাগী তৃণমূল নেতাদেরকে দলে রাখার ব্যাপারে রীতিমত অনীহা প্রকাশ পাচ্ছে। বলাই বাহুল্য, তৃণমূল ছেড়ে আসা নেতাকর্মীদের তেমন জায়গা হয়ে ওঠেনি ভারতীয় জনতা পার্টিতে। এর মাঝেই হঠাৎ করে রাজারহাট নিউটাউনের বিধায়ক সব্যসাচী দত্তকে কেন্দ্র করে তৃণমূলের গ্রুপে একটি ফেসবুক পোস্ট দেখতে পাওয়া যায়। এই সেই ভাইরাল পোস্ট – যা ঘিরে তীব্র চর্চা শুরু হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস সমর্থকদের মধ্যে! যদিও ঘটনার সত্যতা যাচাই করে নি প্রিয়বন্ধু মিডিয়া। সেই পোস্টে দেখতে পাওয়া যায়, “আদি সব্যসাচী – যার দুটি হাত সমান চলে, নব্য সব্যসাচী – যে দুটি পার্টি একসাথে করে।” আর এই পোস্টকে ঘিরেই তৈরি হচ্ছে জল্পনা। মনে করা হচ্ছে, আর পাঁচটা পৌরসভার কাউন্সিলর এমনকি জেলা পরিষদের সদস্যদের মত সব্যসাচীবাবুও কি পুনরায় তৃণমূলে ফেরত আসতে চলেছেন? প্রবাদবাক্যে হয়েছে, ক্রিকেট আর রাজনীতিতে শেষ অর্ধ অব্দি কিছুই বলা যায় না। তাই দলত্যাগী সব্যসাচী বাবু যদি তৃণমূলে ফেরত আসেন, আজকের রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে সেই ঘটনায় কেউই খুব একটা আশ্চর্য হবে বলে মনে করছেন না বিশেষজ্ঞরা। মূলত একসঙ্গে দুটি পার্টি করা অর্থে তৃণমূলের ওই পোস্টে ঠিক কী বোঝানো হয়েছে, সেই নিয়েও বাড়ছে জল্পনা। বিজেপি করতে করতে কি তাহলে গোপনে তৃণমূলের সঙ্গে সম্পর্ক রাখছেন সব্যসাচীবাবু? নাকি তৃণমূলের বিধায়ক হয়েও তিনি বিজেপিতে নাম লিখিয়েছেন – সেই কথাই বলা হয়েছে! যদিও এই ধরনের উদাহরণ তৃণমূল কংগ্রেসে কার্যত ভুরি-ভুরি! অন্যদিকে, এই নিয়ে সরকারিভাবে এখনও মুখ খোলেননি সাব্যসাচীবাবু নিজে। বিজেপিও তাঁকে নতুন রাজ্য কমিটিতে পদ দিয়েছে। ফলে, বাকি তৃণমূল-ত্যাগীদের থেকে অনেকটাই বেশি মর্যাদা তিনি ইতিমধ্যেই বিজেপিতে পেতে শুরু করেছেন। তাহলে, তাঁর তৃণমূলে ফেরত যাওয়া নিয়ে জল্পনা চলছে কেন? তা কি নেহাতই রাজনৈতিক হাওয়া গরম করতে নাকি এর পিছনে অন্য কোনো কারণ আছে। আগামী বিধানসভা নির্বাচনের আগে আর এক বছরও বাকি নেই – ফলে রাজ্য-রাজনীতিতে অনেক নতুন সমীকরণ দেখতে পাওয়া যাবে, সেটাই স্বাভাবিক। কিন্তু তার মাঝেই সাব্যসাচীবাবুকে নিয়ে তৃণমূলের সোশ্যাল মিডিয়ায় চর্চা নিয়ে রীতিমত উত্তর খোঁজার চেষ্টায় রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। আপনার মতামত জানান -