মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বার বার অভিযোগ করেছেন যে বিজেপি নাকি টাকা দিয়ে ভোট কেনার চেষ্টা করছে আর তাই বার বার জনসাধারণকে সাবধান করে দিয়ে বলেছেন যে বিজেপির পাতা ফাঁদে পা না দিতে। কিন্তু, এবার সেই তৃণমূলের বিরুদ্ধেই টাকা দিয়ে ভোট কেনার অভিযোগ উঠলো। এদিন সোশ্যাল মিডিয়ায় বিজেপি কর্মী সমর্থকদের দ্বারা কলকাতার জনপ্রিয় সংবাদমাধ্যমের একটি ভিডিও পোস্ট করে দাবি করা হচ্ছে যে তৃণমূল ৩০ টাকায় ভোট কিনছে আর এটা তার প্রমান।

এবার জেনে নেওয়া যাক কি রয়েছে সেই ভিডিওতে। সেখান দেখা যাচ্ছে যে, একটি জনপ্রিয় সংবাদমাধ্যমের উপস্থাপক দাবি করছেন যে – তৃণমূল কংগ্রেস পরিবার পিছু মাত্র ৩০ টাকা দিয়ে সরাসরি তৃণমূলকে ভোট দেওয়ার জন্য ভোটারদের প্রভাবিত করছে। গ্রামবাসীরা জানাচ্ছেন যে তাঁদেরকে ভোটের আগের দিন রাত্রে পরিবার পিছু মাত্র ৩০ টাকা করে দিয়ে তৃণমূলের বুথ সভাপতি কবিরুল ইসলাম নির্দেশ দেন যে, তাঁরা যেন তৃণমূল কংগ্রেসের প্রতীকে ভোটের দিন নিজেদের ভোট দেন। আর ভোটের দিন গ্রামবাসীরা ভোট দিয়ে ওই ৩০ টাকা দিয়ে মুড়ি-চানাচুর কিনে বাড়ি ফেরেন।

গ্রামবাসীদের দাবি, সংশ্লিষ্ট বুথের তৃণমূলের বুথ সভাপতিও সেই অভিযোগ স্বীকার করেছেন। ঘটনাটি ঘটেছে মালিতলা বুথে। আর এর পরেই ওই সংবাদমাধ্যমের সাংবাদিক ভোট কেন্দ্রে আসা ভোটারদের জিজ্ঞাসা করলে, তাঁরা জানান যে তাঁদেরকে তৃণমূল নেতা রাত্রে ৩০ টাকা করে দিয়ে এসেছে আর তৃণমূলে ভোট দিতে বলছে। স্বাভাবিকভাবেই এই ভিডিও প্রকাশ্যে আসার পর রীতিমত ঝড় উঠে গেছে রাজ্য রাজনীতিতে। তবে, এখানেই বিস্ময়ের শেষ নয়!

এরপর সংশ্লিষ্ট সাংবাদিকের প্রশ্নের উত্তরে ওই তৃণমূল নেতা জানান যে, বাড়ির বাচাদের জন্য খাবার নিতে কাউকে ১০ বা ২০ ও ৩০ টাকা দেওয়া হয়েছে। তবে তিনি দাবি করেছেন যে তিনি চকোলেট বা চা খেতে টাকা দিয়েছেন নিজের পকেট থেকে, কেননা এঁরা তাঁর গ্রামের মানুষ – এই টাকা তৃণমূল দেয় নি। এই নিয়েই সরব হয়েছে বিরোধীরা – তাঁদের দাবি শাক দিয়ে কি মাছ ঢাকা যায়?

যেখানে মমতা ব্যানার্জি বিজেপির দিকে আঙুল তুলছেন – টাকা দিয়ে ভোট কেনার অভিযোগে, সেখানে তাঁর নিজের দলের বিরুদ্ধেই এবার টাকা দিয়ে নির্বাচনকে প্রভাবিত করার বিস্ফোরক অভিযোগ উঠল। স্বাভাবিকভাবেই, আগামী দিনে এই নিয়ে ঝড় তুলতে চলেছেন বিরোধীরা বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। এর পাশাপাশিই, রাজ্যের শাসকদলের বিরুদ্ধে টাকা দিয়ে নির্বাচনকে প্রভাবিত করার অভিযোগ সামনে এল মাত্র দ্বিতীয় দফার নির্বাচনের পরেই – ফলে আগামী বাকি পাঁচ দফার নির্বাচনে এর পরিপ্রেক্ষিতে রাজ্য-রাজনীতিতে কি প্রভাব পরে সেদিকেই সবার।