অমিত শাহকে টেক্কা, মাহালী পরিবার এখন তুপের তাস তৃণমূলে? উপহার ঘিরে জল্পনা উত্তরবঙ্গ তৃণমূল বিজেপি রাজনীতি রাজ্য November 6, 2020 প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – গতকালই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ পশ্চিমবঙ্গ সফরে এসেছেন। আজ বৃহস্পতিবার তিনি বাঁকুড়ার এক আদিবাসী পরিবারে তাঁর মধ্যাহ্নভোজন সেরেছেন। আগামীকাল তিনি মতুয়া পরিবারে মধ্যাহ্নভোজন করবেন বলে জানা গিয়েছে। তবে এই পুরোটাই রাজনৈতিক চমক বলে দাবি করেছে শাসক দল। অন্যদিকে গেরুয়া শিবিরের অনেকেই এটি বিজেপির প্রথা বলে মন্তব্য করেছেন। বছর তিনেক আগেও উত্তরবঙ্গে বিজেপির সাংগঠনিক শক্তি বৃদ্ধিতে অমিত শাহ গিয়েছিলেন নকশালবাড়িতে এবং তখন তিনি সেখানকার গরীব আদিবাসী মাহালি দম্পতির বাড়িতে মধ্যাহ্নভোজন সারেন। কিন্তু তারপর থেকে এতদিন পর্যন্ত মহালি দম্পতির কোন খোঁজ নেয়নি গেরুয়া শিবির বলে দাবি শাসকদলের। উল্লেখযোগ্যভাবে যখন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলায় সফরে এসে বাঁকুড়ায় এক আদিবাসী দম্পতির বাড়িতে মধ্যাহ্নভোজন সারছেন, ঠিক সে সময় তিন বছর আগে যে বাড়িতে তৎকালীন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ মধ্যাহ্নভোজন করেছিলেন, সেই মাহালি গৃহকর্তী আজ রাজ্য সরকারি কাজে যোগ দিলেন। এই ঘটনাকে বিশেষজ্ঞ মহল অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলে ব্যাখ্যা করেছেন। মূলত কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ একুশের বিধানসভা নির্বাচনের আগে যখন বাংলা সফরে এসে দলীয় সংগঠনকে শক্তিশালী করার চেষ্টায়, সে সময়ে রাজ্য সরকার কার্যত পাল্টা চাল দিল বলে মনে করা হচ্ছে। নকশালবাড়ির মাহালী পরিবারের গৃহকর্ত্রী গীতা মাহালি আজ সরকারি চাকরির নিয়োগপত্র পেয়ে যোগ দিলেন কাজে। নকশালবাড়ির হতদরিদ্র মাহালী পরিবার এই কাজ পেয়ে যথেষ্ট খুশি বলে জানা গিয়েছে। প্রসঙ্গত, 2017 সালের 25 এপ্রিল অমিত শাহ নকশালবাড়ি গিয়ে মাহালি দম্পতির বাড়িতে অতিথি হিসেবে মধ্যাহ্নভোজন সারেন। সেই সময় এই ঘটনাকে ঘিরে রাজ্য রাজনীতিতে যথেষ্ট জলঘোলা হয়েছিল কেন্দ্র এবং রাজ্যের শাসক দলের মধ্যে। আদিবাসী গরিব মাহালী পরিবারকে রাজ্যের বিজেপি শিবির সবরকম সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছিল বলে জানা গিয়েছে। কিন্তু অমিত শাহ দিল্লি ফিরে যাওয়ার পর বাংলার কোন নেতা আর তাঁদের খোঁজ নেয়নি। যথারীতি ওই পরিবারের পাশে গিয়ে দাঁড়ায় রাজ্য সরকার। আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - ইতিমধ্যে রাজ্য সরকারের আবাস যোজনা থেকে শুরু করে বেশ কয়েকটি সামাজিক সুরক্ষার আওতায় সুযোগ সুবিধা পেয়েছে ওই পরিবার বলে জানা গিয়েছে। আর এবার রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে হোম গার্ডের চাকরি পেলেন মাহালি পরিবারের গৃহকর্ত্রী গীতা মাহালি। তিনি নকশালবাড়ি থানায় গিয়ে এদিন কাজে যোগ দিয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। প্রতিশ্রুতি পূরণের জন্য মুখ্যমন্ত্রী এবং রাজ্য সরকারকে মাহালি দম্পতি একরাশ ধন্যবাদ জানিয়েছে। অন্যদিকে পর্যটন মন্ত্রী গৌতম দেব এই ঘটনার উল্লেখ করে এদিন বলেন, গরীব আদিবাসী দম্পতিকে নিয়ে গেরুয়া শিবির রাজনীতি করেছে, যা যথেষ্ট নিন্দনীয়। পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়ে বাংলায় বিজেপি শিবির কোন খোঁজ নেয়নি। অন্যদিকে এই বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে রাজনৈতিক টানাপোড়েন। জেলা তৃণমূল সভাপতি রঞ্জন সরকার ইতিমধ্যেই জানিয়েছেন, বিজেপির পক্ষ থেকে যা করা হয়, তার পুরোটাই লোক দেখানো এবং সংবাদ শিরোনামে থাকার অন্যতম প্রচেষ্টা। এই দাবি উড়িয়ে পাল্টা শিলিগুড়ি সাংগঠনিক জেলা বিজেপির সম্পাদক আনন্দময় বর্মন জানিয়েছেন, নকশালবাড়ির মাহালী দম্পতিকে নিয়ে বিজেপি কোন রাজনীতি করেনি। বরং অমিত শাহ ফিরে যেতে সেই সময় তৃণমূল জোর করে ওই দম্পতিকে তৃণমূলে যোগদান করায়। অতএব রাজনীতি যা করার তা তৃণমূল করেছে। তবে বিশেষজ্ঞরা এই ঘটনাকে যথেষ্ট গুরুত্ব সহকারে বিচার করছেন। তাঁদের মতে, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ একুশের বিধানসভা নির্বাচনের আগে বাংলায় এসেছেন দলের সাংগঠনিক কাজকর্ম বুঝে নিতে সে ব্যাপারে কোন সন্দেহ নেই। সে সময় রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে আদিবাসী দম্পতি মাহালী পরিবারের গৃহকর্ত্রীকে সরকারি চাকরি দিয়ে কিন্তু এক প্রকার গেরুয়া শিবিরকে কোণঠাসা করার প্রচেষ্টা। অন্যদিকে গেরুয়া শিবির থেকে অবশ্য মাহালী দম্পতিকে নিয়ে বিশেষ কোনো মন্তব্য করা হয়নি। তবে পুরোটাই যে রাজনীতির অংশ সে ব্যাপারে একমত রাজনৈতিক মহল। আপনার মতামত জানান -