এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > উত্তরবঙ্গ > প্রয়াত বাবার কথা বলে ভোটভিক্ষা ধীতশ্রীর, পথে শুধুই ঘাস-পদ্ম, শেষ হাসি হাসবে কে! জল্পনা তুঙ্গে

প্রয়াত বাবার কথা বলে ভোটভিক্ষা ধীতশ্রীর, পথে শুধুই ঘাস-পদ্ম, শেষ হাসি হাসবে কে! জল্পনা তুঙ্গে


 

আগামী 25 শে নভেম্বর কালিয়াগঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচন। 2016 সালে এই কেন্দ্র থেকে জয়লাভ করেছিলেন কংগ্রেসের প্রমথনাথ রায়। তবে তিনি পরলোকগমন করায় এবার তার ছেড়ে যাওয়া এই কেন্দ্রে উপ-নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। যেখানে কংগ্রেসের তরফে প্রার্থী করা হয়েছে সেই প্রয়াত বিধায়কের মেয়ে ধীতশ্রী রায়কে। আর বাবার দখলে থাকা আসন নিজের দখলে আনতে মেয়ে এখন জোর প্রচার করতে শুরু করেছেন।

এদিন একেবারে রান্না বান্না সেরে পড়ন্ত বিকেলে প্রচারে বেরিয়ে মানুষের কাছে কাছে পৌছলেন ধীতশ্রী রায়। সকলের কাছে গিয়ে তিনি শুধু একটা কথাই বলছেন, “আপনারাই আমার বাবা প্রমথনাথ রায়কে চারবার জিতিয়েছেন। বাবার কাজ এগিয়ে নিয়ে যাব আমি। সাম্প্রদায়িকতা আর তৃণমূলের অত্যাচারের বিরুদ্ধে গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠায় আপনাদের পাশে থাকব। আমাকে হাত চিহ্নে ভোট দেবেন।”

কিন্তু পথ দিয়ে চলতে চলতে সেই ভাবে হাত চিহ্নের দেওয়াল লিখন দেখতে পাওয়া গেল না। সব জায়গাতেই ঘাসফুল এবং পদ্মফুলের আঁকা চিহ্নতে দেওয়াল ভর্তি রয়েছে। অনেকে বলছেন, কংগ্রেসের শক্ত ঘাঁটি অপেক্ষা প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সির শক্ত ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত ছিল রায়গঞ্জ, কালিয়াগঞ্জ সহ গোটা উত্তর দিনাজপুর জেলা। কিন্তু প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সি প্রয়াত হওয়ার পর থেকেই ধীরে ধীরে এখানে কংগ্রেসের সংগঠন নুইয়ে পড়তে শুরু করেছে।

সদ্যসমাপ্ত লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি রায়গঞ্জ লোকসভা কেন্দ্র দখল করে কংগ্রেসকে কার্যত চাপে ফেলে দিয়েছে। আর এই পরিস্থিতিতে কালিয়াগঞ্জে একদিকে শাসক দল তৃণমূল আর অন্যদিকে লোকসভায় সাফল্য পাওয়া বিজেপির সাথে তাদের লড়াই যে খুব একটা সহজ হবে না, তা ভালোই বুঝতে পেরেছে হাত শিবির। তবে বাবা এতদিন বিধায়ক থাকায় তার মেয়ে কংগ্রেসের প্রার্থী হওয়ায় অত সহজে তিনি লড়াইয়ের ময়দানে থেকে সরবেন না, তা এদিন বারবার শোনা গেছে সেই ধীতশ্রী রায়ের গলায়।

অন্যদিকে কালিয়াগঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্র এতদিন কংগ্রেসের দখলে থাকায় এবার সেখানে ঘাসফুল ফোটাতে মরিয়া হয়ে উঠেছে তৃণমূল। তৃণমূলের তরফে এখানে প্রার্থী করা হয়েছে তপন দেব সিংহকে। তবে সদ্যসমাপ্ত লোকসভা নির্বাচনে যেভাবে বিজেপির উত্থান ঘটেছে, তাতে বিজেপির বিরুদ্ধে সেই এনআরসিকেই হাতিয়ার করছে শাসক দল।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

রাজবংশী প্রবণ এলাকাগুলিতে গিয়ে ছোট ছোট সভা করে সাধারণ মানুষের সমর্থন নিজেদের দিকে আনার চেষ্টা করছেন তৃণমূল প্রার্থী তপন দেব সিংহ এবং কোচবিহারের প্রাক্তন তৃণমূল সাংসদ তথা এই কেন্দ্রের প্রচারের দায়িত্বে থাকা পার্থপ্রতিম রায়। রাজবংশী ভাষায় বক্তব্য রেখে এনআরসি হলে বিজেপি সবাইকে তাড়িয়ে দেবে, তা সাধারণ মানুষের কাছে তুলে ধরার চেষ্টা করছেন তারা। তবে বিজেপি লোকসভায় সাফল্য পাওয়ায় তারা কি চাপে নেই!

অত সহজেই কি কালিয়াগঞ্জে সাফল্য পাওয়া যাবে! এদিন হুডখোলা জিপে প্রচারের ফাঁকে এই কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী তপন দেব সিংহ বলেন, “এনআরসি আতঙ্কে অনেকেই আমাদের দিকে ফিরে আসবেন, বুঝতে পারছি। তবে লড়াই কঠিন। কিন্তু এবার ভোটের মার্জিন অনেকটাই মেরামত করতে পারব।” তবে তৃণমূল রাজবংশীদের কাছে গিয়ে বিজেপির বিরুদ্ধে এনআরসি ইস্যুকে সামনে রেখে সোচ্চার হলেও পাল্টা সেই রাজবংশীদের মন জয় করতে বিজেপির তরফে এখানে প্রার্থী করা হয়েছে সরল মানুষ বলে পরিচিত কমল সরকারকে। পায়ে হাওয়াই চপ্পল, খাটো ধুতি, পাঞ্জাবি, গলায় বিজেপির উত্তরীয় নিয়ে এপ্রান্ত থেকে ওপ্রান্ত ছুটে বেড়াচ্ছেন তিনি।

এদিন রাজবংশীদের ভোট কাছে টানতে কমলবাবু বলেন, “রাজবংশীদের কোনো উন্নতি হয়নি। রাজ্য সরকার অনেক বড় বড় প্রকল্পের কথা বলে। কিন্তু সেসব সুবিধা টাকা, কোথায়! কেউ কিছু পান না। গ্রামে রাস্তা হয়নি, জলের আকাল রয়েই গেল।” অন্যদিকে যে এনআরসিকে ইস্যু করে তৃণমূল বিজেপির বিরুদ্ধে সরব হচ্ছে, তার পরিপ্রেক্ষিতে পাল্টা বক্তব্য রাখতে দেখা যায় বিজেপি নেতাদের। তাদের দাবি, কোনো হিন্দু ভারত ছাড়া হবেন না।

তবে অনুপ্রবেশকারী সংখ্যালঘুদের এই দেশে কোনো ঠাঁই হবে না। আর তৃণমূল, বিজেপি এবং বাম-কংগ্রেস তিন রাজনৈতিক দল একে অপরের বিরুদ্ধে প্রচার করায় এখন জমে উঠেছে কালিয়াগঞ্জ বিধানসভা উপনির্বাচনের লড়াই। শেষ পর্যন্ত এখানেই খে শেষ হাসি হাসবে, তা দেখা যাবে ভোটবাক্স খোলার পরেই। কিন্তু যেভাবে নির্বাচনের আগে অব্দি সাধারণ মানুষের মধ্যে কোনো গুঞ্জন লক্ষ্য করা যাচ্ছে না, তাতে সেই সাধারণের সমর্থন ঠিক কোন দিকে যায়, সেদিকেই নজর সকলের।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!