এখন পড়ছেন
হোম > জাতীয় > ভোট লুটেরাদের শায়েস্তা করতে লোকসভা ভোট নিয়ে নয়া সিদ্ধান্ত নির্বাচন কমিশনের

ভোট লুটেরাদের শায়েস্তা করতে লোকসভা ভোট নিয়ে নয়া সিদ্ধান্ত নির্বাচন কমিশনের

১৯’এর লোকসভা নির্বাচনে ভোটের কারচুপি এড়াতে অভিনব পদক্ষেপ নিল নির্বাচন কমিশন। এবার থেকে মিডিয়া বা সোশ্যাল মিডিয়ায় করা অভিযোগের ভিত্তিতেও ব্যবস্থা নিতে চাইছে কমিশন। এরজন্যে প্রিন্ট মিডিয়া, ইলেকট্রনিক্স মিডিয়া ও সোশ্যাল মিডিয়ায় ওঠা অভিযোগকেও গুরুত্ব দেওয়া হবে।

সম্প্রতি এই সংক্রান্ত নির্দেশিকা জেলায় জেলায় পাঠিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। আগে কেবল নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ জানালে তার ভিত্তিতে পদক্ষেপ নেওয়া হত। কিন্তু এবার সেই পদ্ধতির সংস্কার করল কমিশন। সংবাদ মাধ্যমে ওঠা প্রতিটি অভিযোগ রেজিস্টারে লিপিবদ্ধ করা এবং ওই অভিযোগের সময় ও তারিখ লিপিবদ্ধ করার পাশাপাশি দক্ষ ডাটা এন্ট্রি অপারেটরের মাধ্যমে ওই অভিযোগ ন্যাশনাল গ্রিভেন্স সার্ভিস পোর্টালে আপলোড করার নির্দেশিকা জারি হয়েছে

। এই অভিযোগ সংক্রান্ত সমস্যা সমাধাম আবার কমিশনের বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যেই নিষ্পত্তি করতে হবে বলে জানিয়েছে কমিশন। এর জন্যে প্রত্যেক জেলায় প্রয়োজনীয় সংখ্যক টিভি এবং প্রশিক্ষিত কর্মীদের তৈরিও রাখতে বলা হয়েছে। এ প্রসঙ্গে,নির্বাচন কমিশনের এক আধিকারিক বলেন, কমিশনের তৈরি সি ভিজিল,”টোল ফ্রি নম্বরে ফোন কিংবা ন্যাশনাল গ্রিভেন্স সার্ভিস পোর্টালে লিপিবদ্ধ অভিযোগের বাইরেও বহু অভিযোগ থাকে।

গ্রামাঞ্চলে নির্বাচনী মডেল কোড অব কন্ডাক্ট ভাঙার ঘটনা প্রায়শই ঘটে থাকে। ওই সব অভিযোগ কমিশনে না গেলেও সংবাদ মাধ্যম ও সোশ্যাল মিডিয়ায় উঠে আসে। সেই কারণে সংবাদ মাধ্যম বা সোশ্যাল মিডিয়ায় ওঠা অভিযোগকেও এবার গুরুত্ব দিতে চাইছে কমিশন।”

কমিশন সূত্রে আরো জানা গিয়েছে,এসবের পাশাপাশি এবারের লোকসভা ভোটো মডেল কোড অব কন্ডাক্ট লঙ্ঘন বা অন্য কোনো অভিযোগ জানানোর জন্যে জেলায় জেলায় ১৯৫০ টোল ফ্রি নম্বর চালু করার পাশাপাশি সাধারণ মানুষের জন্য সি ভিজিল অ্যাপস ও ন্যাশনাল গ্রিভেন্স সার্ভিস পোর্টালের মাধ্যমে অভিযোগ জানানোর ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে। এই বিষয়গুলোর জন্য উপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে গত ২২ ফেব্রুয়ারি রাজ্যের চিফ ইলেকটোরাল অফিসার সমস্ত জেলার ডিস্ট্রিক্ট ইলেকশন অফিসারদের(ডিইও) চিঠি পাঠিয়েছে নির্বাচন কমিশন।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

সেই চিঠিতে বলা হয়েছে,বহুক্ষেত্রে বেশিরভাগ অভিযোগ প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক্স মিডিয়ায় অনেক আগে চলে আসে। তার অনেক পরেই অভিযোগ দায়ের করা হয়। আর সেই কারণেই প্রিন্ট, ইলেকট্রনিক্স ও সোশ্যাল মিডিয়ায় ওঠা অভিযোগ দ্রুত নিষ্পত্তির করার প্রয়োজন রয়েছে। আর এই সমস্যা,সমাধানের জন্যেই জেলার নির্বাচন সংক্রান্ত কল সেন্টারগুলিতে প্রয়োজনীয় সামগ্রী রাখা জরুরি। প্রতিটি কল সেন্টারে ৬টি করে টিভি রাখতে হবে যেগুলিতে বাংলার ছ’টি মুখ্য খবরের চ্যানেল চালিয়ে রাখতেই হবে। খবর দেখার জন্য প্রয়োজনীয় কর্মীর ব্যবস্থা থাকবে সেখানে।

মডেল কোড অব কন্ডাক্ট ভাঙা কিংবা অন্য যেকোনও অভিযোগ চ্যানেলগুলিতে দেখানো হলে তা সময় ও তারিখ পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে লিপিবদ্ধ করে রাখতে হবে। এই সমস্ত অভিযোগ ন্যাশনাল গ্রিভেন্স সার্ভিস পোর্টালে আপলোড করার সঙ্গে সঙ্গেই কমিশনের বেঁধে দেওয়ার সময়ের মধ্যে অভিযোগের নিষ্পত্তি করতে হবে। এই কাজ সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার জন্য দক্ষ ডাটা এন্ট্রি অপারেটর নিয়োগ করতে হবে। এছাড়া প্রিন্ট মিডিয়ার ক্ষেত্রেও একইভাবে সমস্ত সংবাদপত্র খতিয়ে দেখে একই ব্যবস্থা নিতে হবে। এরজন্যে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণের পর মিডিয়া মনিটরিংয়ের জন্য কর্মী নিয়োগ করার কথা জানিয়েছে কমিশন।

চিঠিতে আরো উল্লেখ করা হয়েছে, ভোটের নির্ঘন্ট প্রকাশিত হওয়ার আগে কোনো অভিযোগ যদি কমিশনে দায়ের হয় তবে তা ২৪ ঘন্টার মধ্যে এবং সাধারণ মানুষের জানানো অভিযোগ ৭২ ঘন্টার মধ্যে নিষ্পত্তি করতে হবে। এবং ভোট ঘোষণা হয়ে যাওয়ার পর থেকে সি ভিজিল ছাড়া অন্য কোনোভাবে আসা অভিযোগ ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সমাধান করতে হবে।

ভোটের দিন যেকোনো অভিযোগ এলে তা এক ঘণ্টার মধ্যে নিষ্পত্তি করে তার রিপোর্ট জমা দেওয়ার কড়া নির্দেশ দিয়েছে কমিশন। এবং এর জন্যে রাজ্যের সমস্ত জায়গা থেকে আসা অভিযোগ নিষ্পত্তি করার জন্য জেলায় জেলায় দ্রুত পরিকাঠামো তৈরি করতে হবে। এর দায়িত্বে বসানো হবে অতিরিক্ত জেলাশাসক পদমর্যাদার কোনও আধিকারিককে অভিযোগ সেলের দায়িত্ব দিতে হবে।

এছাড়া তাকে সহযোগিতা করার জন্যে অভিযোগ সেলের নোডাল অফিসার হিসাবে জেলার একজন ডেপুটি কালেক্টর পদমর্যাদার অফিসার দায়িত্বে থাকবেন সবসময়। এই অফিসার অভিযোগ সেলের দায়িত্বপ্রাপ্ত অতিরিক্ত জেলাশাসকের পরামর্শদাতা হিসাবে কাজে বহাল থাকবেন। অভিযোগ সেলের দায়িত্বপ্রাপ্ত অতিরিক্ত জেলাশাসক ও ডেপুটি কালেক্টরের মোবাইল নম্বর ও ই মেল আইডি চিফ ইলেকটোরাল অফিসারের পোর্টালে আপলোড করার নির্দেশ দিয়েছে কমিশন।

উল্লেখ্য,গত কয়েকটি নির্বাচনে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে যেভাব ভোট কারচুপির খবর এসেছে তাই এবারের লোকসভা ভোটে আগেই এ ব্যাপারে সতর্ক হতে চাইছে কমিশন। আর সেজন্যেই আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে ভোট লুটেরাদের বাগে আনতে মিডিয়া এবং সোশ্যাল মিডিয়ার অভিযোগকে মান্যতা দিয়ে নয়া পদক্ষেপ নিল নির্বাচন কমিশন,এমনটাই মনে করা হচ্ছে। কমিশনের এই নির্দেশিকা প্রকাশ্যে আসতেই শোরগোল পড়ে গিয়েছে রাজনৈতিক মহলে।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!