এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > বাংলায় অপরাধমূলক সরকার চালনা হচ্ছে! টিভি সাক্ষাৎকারে বিস্ফোরক রাজ্যপাল জগদীপ ধনকর

বাংলায় অপরাধমূলক সরকার চালনা হচ্ছে! টিভি সাক্ষাৎকারে বিস্ফোরক রাজ্যপাল জগদীপ ধনকর

বাংলার মানুষকে যে এমন দিনও দেখতে হবে, তা সত্যিই কল্পনা করা যায়নি। যেদিন থেকে রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধানের আসনে বসেছেন জগদীপ ধনকার, সেদিন থেকে ছোট, বড়, মেজো সব ইস্যুতেই রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে সরব হতে দেখা গেছে তাঁকে। মুখ খুলেছেন তিনি, সরকারের প্রধান ব্যক্তি থেকে শুরু করে বিভিন্ন মন্ত্রী মহোদয়ের বিরুদ্ধে। পাল্টা সরকারের পক্ষ থেকেও সংযত আচরণ না দেখিয়ে রাজ্যে সাংবিধানিক প্রধানের বিরুদ্ধে আক্রমণ শানানো হয়েছে।

যা নিয়ে সাংবিধানিক প্রধান বনাম প্রশাসনিক প্রধানের গন্ডগোল রীতিমত তাক লাগিয়ে দিয়েছে বঙ্গবাসীকে। তবে অন্যান্য সময়ে রাজ্যের রাজ্যপাল এবং সরকারের মধ্যে বিবাদ তৈরি হলেও, করোনা মহামারীর সময় যে সেই বিবাদ অতীতের সমস্ত বিবাদকে টপকে যাবে, তা সত্যিই আঁচ করতে পারেননি কেউ। ইতিমধ্যেই বিরোধীদের পক্ষ থেকে করোনা মোকাবিলায় রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে নানা বিষয়ে সরব হতে দেখা গেছে।

তবে বিরোধীদের পাশাপাশি এবার সরকারের অস্বস্তি বাড়িয়ে দিয়ে রীতিমত বেনজির আক্রমণ করে চলেছেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকার। ইতিপূর্বে রাজ্যে লকডাউন না মানা থেকে শুরু করে রেশনে দুর্নীতি, বিভিন্ন বিষয়ে মুখ খুলে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন তিনি। কখনও রেশনের দুর্নীতি নিয়ে আলোচনা চেয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছেন রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধান। আর এবার পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে মুখ খুলে সাক্ষাৎকার দিতে গিয়ে রাজ্য সরকারের অস্বস্তিকে দ্বিগুণ পরিমাণে বাড়িয়ে দিলেন জাগদীপ ধনকার।

সূত্রের খবর, এদিন এক নিউজ চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, “আমাদের যত সম্ভব টেস্টিং করাতে হবে। শুধুমাত্র টেস্টিং থেকেই জানা সম্ভব, এখানে পরিস্থিতি কতটা গুরুতর। আমাদের রাজ্যে যে টেস্ট হচ্ছে, তা জাতীয় গড়ের এক-তৃতীয়াংশের কাছাকাছি। এটা চিন্তার বিষয়। যে সংখ্যা রাজ্য সরকারের তরফে দেওয়া হচ্ছে, তা সাধারণ মানুষ বা মিডিয়া কারো কাছে বিশ্বাসযোগ্য হচ্ছে না।”

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

এতদিন বিরোধীদের পক্ষ থেকে এই প্রশ্ন সরকারের বিরুদ্ধে তোলা হয়েছিল। আর এবার রাজ্যপাল সাক্ষাৎকার দিতে গিয়ে সেই একই প্রশ্ন তোলায় রীতিমত গুঞ্জন বৃদ্ধি পেল। এদিন নিজামউদ্দিন থেকে ফিরে আসা অনেক ব্যক্তিদের নিয়ে রাজ্য ঠিকমত পদক্ষেপ নিচ্ছে না বলে দাবি করেন জগদীপ ধনকার। তিনি বলেন, “আমি খুব বড় ধাক্কা খেয়েছি এটা দেখে যে, রাজনীতি মানুষকে কতটা বিপদে ফেলতে পারে। নিজামুদ্দিন মরকজ থেকে ফেরা লোকেদের নিয়ে দেশের সব প্রান্তে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।”

তাঁর অভিযোগ, “তাদের চিহ্নিত করা হচ্ছে, কোয়ারেন্টাইনে পাঠানো হচ্ছে। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গে কাউকে খুঁজে বের করা হয়নি। মুখ্যমন্ত্রীকে এই ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, সাম্প্রদায়িক প্রশ্ন করবেন না।” আর এরপরই রেশন ব্যবস্থা নিয়ে রাজ্য সরকারকে কটাক্ষ করেন রাজ্যপাল। তিনি বলেন, “পশ্চিমবঙ্গে রেশন নিয়ে দুর্নীতি চলছে। নাটকীয়তার আশ্রয় নিয়ে কখনও করোনার মোকাবিলা করা যাবে না।” তবে রাজ্য সরকারের বিভিন্ন বিষয় উল্লেখ করে তার বিরোধিতা করলেও, কেন্দ্রের পক্ষ থেকে রাজ্যকে সাহায্য দেওয়া হয়েছে বলেও উল্লেখ করেন রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধান।

তিনি বলেন, “এতদিনে পশ্চিমবঙ্গের 70 লক্ষ কৃষক কেন্দ্রের প্রধানমন্ত্রী কৃষক সম্মান নিধি প্রকল্পের আওতায় 10000 টাকা করে পেয়ে যেতেন। পুরো দেশের কৃষকরা এই প্রকল্পের সুবিধা পাচ্ছেন। পশ্চিমবঙ্গ সরকার কেন্দ্রকে তথ্য না দেওয়ায় রাজ্যের কৃষকরা এই সুবিধা পেলেন না। এটাকে আমি খারাপ সরকার চালনা বলছি, অপরাধমূলক সরকার চালনা বলছি।” আর স্বাভাবিকভাবেই করোনার মতো ভয়াবহ পরিস্থিতিতে রাজ্যপাল যেভাবে বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম না করে তাকে কড়া ভাষায় আক্রমণ করলেন, তা সত্যিই রাজভবন বনাম নবান্নের সঙ্ঘাতকে দ্বিগুণ করে দিল বলেই মত রাজনৈতিক মহলের।

এমনিতেই করোনা যখন প্রাথমিকস্তরে ছিল – তখন সকলের মধ্যেই একটা রাজনৈতিক সৌজন্য ছিল। সকলেই রাজনীতি ভুলে এক হয়ে কাজ করার অঙ্গীকার করেছিলেন। কিন্তু যত দিন যাচ্ছে ততই যেন শাসক-বিরোধী লড়াই চরমে উঠছে। এদিকে, বাংলার পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে কেন্দ্র থেকে বিশেষ দল এসেছে – যা নিয়েও চরমে উঠেছে বিতর্ক। আর এর মাঝেই প্রকাশ্যে রাজ্য সরকারকে বেনজির আক্রমন করলেন রাজ্যপাল। এখন গোটা পরিস্থিতি কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়, তার দিকেই নজর থাকবে সকলের। সরকারের পক্ষ থেকে এই ব্যাপারে কি বলা হয়, সেদিকেই তাকিয়ে রাজনৈতিক মহল।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!