এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > উপনির্বাচনে সদ্য জয়ী ৩ তৃণমূল বিধায়ককে নিয়ে রাজ্যপালের বিশেষ পদক্ষেপে বাড়ছে জল্পনা

উপনির্বাচনে সদ্য জয়ী ৩ তৃণমূল বিধায়ককে নিয়ে রাজ্যপালের বিশেষ পদক্ষেপে বাড়ছে জল্পনা

যত দিন যাচ্ছে, ততই যেন বাংলার রাজ্যপালকে নিয়ে বৈচিত্র্যপূর্ণ ঘটনা ঘটছে এরাজ্যে। কখনও তিনি সরকারের বিরোধিতা করেন, আবার কখনও বা সরকারের প্রশংসায় পঞ্চমুখ হন। তবে তিনি যে ঘটনাই ঘটান না কেন, সাংবিধানিক প্রধান হিসেবে যে তিনি নিরপেক্ষ কাজ করে চলেছেন, তা বারবার নিজের পদে বহাল থেকে প্রমাণ করার চেষ্টা করেন পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল জগদীপ ধনকার। সম্প্রতি বেশ কিছুদিন ধরে রাজ্য বনাম রাজ্যপালের সংঘাত চরম আকার ধারণ করেছিল।

সংবিধান দিবসে বিধানসভায় গিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে কার্যত এড়িয়ে যান পশ্চিমবঙ্গের সাংবিধানিক প্রধান। তারপরে টুইট করে এমন “অসৌজন্যতা নিদর্শন আমাকে দেখতে হয়নি” বলে সেই মুখ্যমন্ত্রীকে কটাক্ষ করেন রাজ্যপাল। পাল্টা বিবৃতি আসে সরকারের তরফে। “বিজেপির মাউথপিস” বলে রাজ্যপালকে কটাক্ষ করেন শাসক দলের হেভিওয়েট নেতা নেত্রীরা। মুখ খোলেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। আর এই পরিস্থিতিতে রাজ্যের প্রশাসনিক বনাম সাংবিধানিক ক্ষেত্রে প্রবল দূরত্ব তৈরি হয়।

অনেকেই মনে করেছিল, এই দূরত্ব আর মিটবে না। কিন্তু তিনি নিরপেক্ষ। নিজের পদের গরিমা সম্পর্কে অবহিত তিনি। আর তাই তো এবার রাজ্যের তিন বিধানসভা কেন্দ্রের উপ-নির্বাচনে জয়ী তৃণমূল প্রার্থীদের শুভেচ্ছা জানাতে দেখা গেল রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধান জগদীপ ধনকারকে। বস্তুত, সম্প্রতি রাজ্যের 3 বিধানসভা উপনির্বাচনের ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে। যেখানে করিমপুর, খড়গপুর এবং কালিয়াগঞ্জ 3 কেন্দ্রে জয়ী হয়েছেন তৃণমূলের বিমলেন্দু সিংহ রায়, প্রদীপ সরকার এবং তপন দেব সিংহ।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

আর এই নতুন বিধায়কদের এদিন কার্যত নজিরবিহীনভাবে শুভেচ্ছা জানান রাজ্যপাল জাগদীপ ধনকার। সূত্রের খবর, রীতিমতো বিবৃতি জারি করে রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধান বলেন, “আমি আশা করব উন্নয়ন এবং জনস্বার্থে তারা এই সুযোগকে পুরোমাত্রায় কাজে লাগাবেন। মানুষের চাহিদাকে প্রশাসনের সামনে তুলে ধরার জন্য বিধানসভা হল একটা কার্যকর মঞ্চ। সেই মঞ্চকে সঠিকভাবে ব্যবহার করলে আদতে জনগনেরই উপকার হবে।” আর রাজ্যপালের এহেন শুভেচ্ছাজ্ঞাপন দেখে রীতিমত চোখ কপালে উঠে যাচ্ছে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের।

একাংশ বলছেন, অতীতে রাজ্যে অনেক রাজ্যপাল এসেছেন। অনেক নির্বাচনও হয়েছে। কিন্তু সেই নির্বাচনে কোনো দল বা কোন প্রার্থী জয়লাভ করার সাথে সাথেই তাদের শুভেচ্ছাজ্ঞাপন করেননি রাজ্যে সাংবিধানিক প্রধানরা। এক্ষেত্রে পশ্চিমবঙ্গের নতুন রাজ্যপালের এই শুভেচ্ছা জ্ঞাপন সত্যিই তাৎপর্যপূর্ণ। অনেকের দাবি, তৃণমূলের তরফে এতদিন এই জগদীপ ধনকারকে বিজেপি ঘনিষ্ঠতার অভিযোগ তুলে কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হয়েছিল।

কিন্তু তিন উপনির্বাচনে তৃণমূল প্রার্থীরা জয়লাভ করায় তাদের শুভেচ্ছা দিয়ে সাংবিধানিক প্রধান প্রমাণ করে দিলেন তিনি পদ্মপাল নন, তিনি নিরপেক্ষ। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রাজ্য বনাম রাজ্যপালের সংঘাতের আবহে যেভাবে 3 বিধানসভা উপনির্বাচনে জয়ী তৃণমূল প্রার্থীদের শুভেচ্ছা জানালেন রাজ্যপাল, তাতে পরবর্তীতে যদি আবার শাসকের সঙ্গে রাজ্যপালের সংঘাত ভাবে তাহলে রাজ্যপালের সঙ্গে সেইভাবে বিজেপি ঘনিষ্ঠতার অভিযোগ তুলতে পারবে না তৃণমূল।

তবে রাজ্যপালের এহেন নজিরবিহীন পদক্ষেপের পিছনে অন্য কোন কারণ আছে কিনা তা নিয়ে মুখ খুলতে নারাজ প্রশাসনের একাংশ। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক প্রশাসনিক কর্তার কথায়, রাজ্যপাল একে আইনজ্ঞ, তার উপরে রাজনীতিবিদ। সংবিধানকে গুলি খেয়েছেন – সুতরাং, তিনি প্রতিটি পদক্ষেপ যখন ফেলেন, হিসেব করেই ফেলেন! সব মিলিয়ে প্রশাসনিক বনাম সাংবিধানিক সংস্থার সংঘাতের আবহে – তাঁর নতুন পদক্ষেপে রাজ্য-রাজনীতিতে নতুন করে জল্পনা বাড়ালেন পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল জগদীপ ধনকার।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!