এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > শহীদ মিনারে আজ ঐতিহাসিক সম্মেলন, পিআরটি স্কেলের আশায় বুক বাঁধছেন লক্ষ লক্ষ প্রাথমিক শিক্ষক

শহীদ মিনারে আজ ঐতিহাসিক সম্মেলন, পিআরটি স্কেলের আশায় বুক বাঁধছেন লক্ষ লক্ষ প্রাথমিক শিক্ষক


আজ কলকাতার শহীদ মিনারের পাদদেশে দুদিন ব্যাপী এক বৃহত্তর ও ঐতিহাসিক ধর্ণা ও আন্দোলন কর্মসূচি শুরু করছেন রাজ্যের প্রাথমিক শিক্ষকরা। পিআরটি স্কেলের দাবিতে প্রাথমিক শিক্ষকদের সংগঠন উস্থি ইউনাইটেড প্রাইমারি টিচার্স অ্যান্ড ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন বা ইউইউপিটিডব্লুএ এই কর্মসূচি নিয়েছে। এই আন্দোলনে কত শিক্ষক অংশগ্রহণ করবেন তার সঠিক তথ্য পাওয়া না গেলেও – বিভিন্ন সূত্র থেকে যে খবর পাওয়া যাচ্ছে, তাতে মনে করা হচ্ছে সংখ্যাটা ২০ হাজার ছাড়িয়ে যেতে পারে অনায়াসেই।

কি এই পিআরটি স্কেলের জন্য আন্দোলন? সংগঠনের তরফে জানানো হয়েছে – এনসিটিই নর্ম অনুযায়ী সারা দেশের মত এই রাজ্যের প্রাথমিক শিক্ষকদেরও যোগ্যতা এখন উচ্চ-মাধ্যমিকে ৫০% ও সাথে দুই বছরের ডিএলএড প্রশিক্ষন – যেটা আগে ছিল মাধ্যমিক। রোপা ২০০৯-এ শিক্ষকদের বেতন কাঠামোর ক্ষেত্রে সেন্ট্রাল পে কমিশন-৬ মেনে চলার কথা বলা হয়েছে। এতে প্রাথমিক শিক্ষিকদের জন্য ৯,৩০০ – ৩৪,৮০০ স্কেল এবং গ্রেড পে ৪,২০০ দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু, দুর্ভাগ্যবশত রাজ্যের হাই স্কুলের শিক্ষকদের বেলায় রোপা ২০০৯ মেনে বেতন দেওয়া চালু হলেও প্রাথমিকে সেটা দেওয়া হয়না!

সংগঠনের তরফে আরও জানানো হয়েছে, বর্তমানে, পশ্চিমবঙ্গের প্রাথমিক শিক্ষকদের বেতন কাঠামো ৫,৪০০ – ২৫,২০০ এবং সাথে গ্রেড পে ২,৬০০ – যেটা আদতে মাধ্যামিক যোগ্যতার বেতন কাঠামো! অথচ, ২০১০ সালে রাজ্য সরকার শিক্ষকদের যোগ্যতা নির্ধারণের ক্ষেত্রে এনসিটিই নর্ম মেনে নেয় এবং শিক্ষকরা সেই মত নিজেদের যোগ্যতা বাড়াতে বাধ্য হন। অথচ যোগ্যতা বাড়ালেও বেতন কাঠামর পুনর্বিন্যাস করা হয়নি। ফলস্বরূপ – অন্যান্য রাজ্যের প্রাথমিক শিক্ষকদের সাথে এই রাজ্যের প্রাথমিক শিক্ষকদের বেতনের বৈষম্য অনেকটাই! এমনকি বৈষম্য – এই রাজ্যেরই অনান্য শিক্ষকদের সাথেও।

ফেসবুকের কিছু টেকনিকাল প্রবলেমের জন্য সব খবর আপনাদের কাছে পৌঁছেছে না – তাই আরো খবর পেতে চোখ রাখুন প্রিয়বন্ধু মিডিয়া-তে

এবার থেকে প্রিয় বন্ধুর খবর পড়া আরো সহজ, আমাদের সব খবর সারাদিন হাতের মুঠোয় পেতে যোগ দিন আমাদের হোয়াটস্যাপ গ্রূপে – ক্লিক করুন এই লিঙ্কে

সংগঠনের তরফে আরও দাবি, ফলে সবমিলিয়ে তাঁদের সামাজিক সম্মান ক্ষুণ্ণ হচ্ছে – তাঁরা বঞ্চিত হচ্ছেন ও বর্তমান দুর্মূল্যের বাজারে জীবনধারণ করার পক্ষেও তা রীতিমত কষ্টকর হয়ে পড়েছে। তাই, সংগঠনের মূল দাবি – তাঁরা যে সময় থেকে এনসিটিই নর্ম অনুযায়ী যোগ্যতা বৃদ্ধি করতে বাধ্য হয়েছেন, সেই সময় থেকেই তাঁদের ন্যায্য যোগ্যতা অনুসারে বেতন দিতে হবে। অর্থাৎ, পে কমিশন এর আগেই পে-রিভিশন করে সেই রিভাইসড স্কেলের ওপর পে কমিশন এফেক্ট দিতে হবে। আর, এই দাবিকে সামনে রেখেই সংগঠনটি তার অরাজনৈতিকতার সত্ত্বা বজায় রেখে সমস্ত রাজনৈতিক দলের শিক্ষকদের, সমাজের সমস্ত সুশীল-ব্যক্তিত্ত্ব, বিশিষ্ট-মানুষ এবং সমস্ত জন-প্রতিনিধিদের আন্দোলনের মঞ্চে আমন্ত্রণ জানিয়েছে।

এই আন্দোলন ও ধর্ণা কর্মসূচির উদ্যোক্তাদের তরফে জানা গেছে কর্মসূচির উদ্বোধন করার কথা সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি ও পশ্চিমবঙ্গের মানবাধিকার কমিশনের প্রাক্তন চেয়ারম্যান অশোক কুমার গঙ্গোপাধ্যায়ের। তাঁর সঙ্গে উপস্থিত থাকার কথা ছিল প্রখ্যাত চিত্র-পরিচালক তরুণ মজুমদারের, কিন্তু শারীরিক অসুস্থতার জন্য তিনি আন্দোলনের মঞ্চে থাকতে পারছেন না – তবে তিনি এই আন্দোলনের প্রতি তাঁর অকুন্ঠ সমর্থন জানিয়েছেন। এছাড়াও, এই আন্দোলনে উপস্থিত থাকার জন্য যেসব হেভিওয়েটরা সম্মতি জানিয়েছেন, তা রীতিমত চোখ কপালে তুলে দেবার মত।

বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা গেছে, সংগঠনের তরফে আমন্ত্রণপত্র পৌঁছেছে রাজ্যের পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন পর্ষদের মন্ত্রী শান্তিরাম মাহাতো, রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী ও সিঙ্গুরের বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য ও বিধায়ক ও প্রাথমিক শিক্ষক উমাপদ বাউরির কাছে। এছাড়াও উপস্থিত থাকতে চলেছেন – সূর্যকান্ত মিশ্র, মুকুল রায়, সৌমেন মিত্র, আব্দুল মান্নান, সুজন চক্রবর্তী, দিলীপ ঘোষ, অধীররঞ্জন চৌধুরী, জয় ব্যানার্জি, নেপাল মাহাতো, আলি ইমরান রামজ্, নরেন চ্যাটার্জি, নরেন দে, বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্যর মত রাজ্য-রাজনীতিতে পরিচিত একঝাঁক হেভিওয়েট মুখ।

তবে, শুধু রাজনৈতিক মুখই নয় – রাজ্যের সুশীল সমাজের একঝাঁক বিশিষ্ট মুখও থাকতে চলেছেন এযাবৎকালের রাজ্যের বৃহত্তম শিক্ষকদের আন্দোলনে। কে নেই সেই তালিকায়? বিজ্ঞানী অশোকনাথ বসু, প্রাক্তন উপাচার্য আনন্দদেব মুখোপাধ্যায়, জয়েন্ট এন্ট্রাস বোর্ডের প্রাক্তন সভাপতি সিদ্ধার্থ বসু, চিত্রশিল্পী সমীর আইচ, জাতীয় পুরষ্কারপ্রাপ্ত কবি মন্দাক্রান্তা সেন, সাহিত্যিক আজিজুল হক, শিক্ষাবিদ অধ্যাপক অম্বিকেশ মহাপাত্র, চিত্র-পরিচালক অরুনাভ গাঙ্গুলি, শিক্ষাবিদ অধ্যাপক ভাস্করচন্দ্র দাস, মধ্য শিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি ডঃ হরপ্রসাদ সমাদ্দর, চিত্রাভিনেতা বাদশা মৈত্র – তালিকা শেষ হওয়ার নয়! আর তাই, রাজ্য রাজনীতির ও সুশীল সমাজের এই সকল হেভিওয়েটদের সমর্থনে এতদিনে পিআরটি স্কেলের আশায় বুক বাঁধছেন রাজ্যের লক্ষ লক্ষ প্রাথমিক শিক্ষক।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!