এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > পে কমিশনের মেয়াদ বাড়ল আরও ৬ মাস, কি বলছেন সরকারি কর্মচারী আন্দোলনের রথী-মহারথীরা?

পে কমিশনের মেয়াদ বাড়ল আরও ৬ মাস, কি বলছেন সরকারি কর্মচারী আন্দোলনের রথী-মহারথীরা?

আজই ছিল রাজ্যের ষষ্ঠ বেতন কমিশনের সাড়ে তিন বছর পূর্তি – এর আগে দফায়-দফায় পে কমিশনের মেয়াদ বাড়িয়ে নজিরবিহীনভাবে তা সাড়ে তিন বছরে নিয়ে গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর তাই, সদ্যসমাপ্ত লোকসভা নির্বাচনে রাজ্যের ৪২ টি আসনের মধ্যে ৪১ টি আসনেই তৃণমূল কংগ্রেসকে পোস্টাল ব্যালটে হারিয়ে দিয়ে, বর্তমান রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে চূড়ান্ত অনাস্থা দেখিয়েছেন এই রাজ্যের রাজ্য সরকারি কর্মচারীরা।

আর তারপরে কোথাও গিয়ে মনে হচ্ছিল – রাজ্য সরকার এবার বোধহয় সরকারি কর্মচারীদের ক্ষোভের আগুন নেভাতে কিছু একটা সদর্থক পদক্ষেপ নেবে। কিন্তু, রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের চূড়ান্ত হতাশ করে – আজ আবার ৬ মাসের জন্য ষষ্ঠ পে কমিশনের মেয়াদ বৃদ্ধি করে ২০১৯ সালের ৩১ শে ডিসেম্বর পর্যন্ত করল রাজ্য সরকার। স্বাভাবিকভাবেই রাজ্য সরকারের এই সিদ্ধান্তে চূড়ান্ত হতাশ সরকারি কর্মচারীরা। এই প্রসঙ্গে সরকারি কর্মচারী আন্দোলনের রথী-মহারথীরা কে কি বলছেন? আগামী দিনে এই নিয়ে কি পদক্ষেপ নিতে চলেছেন? দেখে নিন একনজরে –

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

পোস্টাল ব্যালটে প্রতিফলিত রাজ্য সরকারী কর্মচারীদের বিক্ষোভের আগুন থেকে এই সরকার কোন শিক্ষাই নিল না। পে কমিশনের মেয়াদ ৪ বছরের বেশি করে দেওয়া হল, যা ভূভারতে নজীরবিহীন। রাজ্য সরকারকে ধিক্কার জানানোর ভাষা খুজে পাচ্ছি না। যেহেতু রাজ্য সরকারী কর্মচারীদের রায় বিপুলভাবে বিজেপির পক্ষে গেছে এবং বিরাট সংখ্যক কর্মচারী, পরিষদের ছাতার তলায় আসতে চলেছেন, সেহেতু পরিষদকে সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনে অগ্রণী ভূমিকা নিতে হবে। আমরা অবিলম্বে বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তুলব।


– দেবাশীষ শীল, সরকারি কর্মচারী পরিষদ

ষষ্ঠ বেতন কমিশনের মেয়াদ ৭ মাস আরও বৃদ্ধি করার জন্য তীব্র বিরোধিতা করছি ও ধিক্কার জানাচ্ছি। সারা ভারতে সব রাজ্য সরকার পে কমিশন সহ ডিএ আপডেট করে দিয়েছে। আমাদের রাজ্যের রাজ্য সরকারি কর্মচারী ও শিক্ষক মহাশয়গণ আর্থিক ভাবে চরম বঞ্চনার শিকার হচ্ছেন, যা ভূ-ভারতে কোথাও হয় নি। ব্যাপক দুর্নীতি, উৎসব, কার্নিভ্যাল সহ ক্লাবকে টাকা দেওয়া – হরিলুটের মত দেদার খরচ করছে রাজ্য সরকার। তার পরিপ্রেক্ষিতে আমদের সংগঠন যখন আন্দোলন করছে তখন নেতাদের দূরদূরান্তে বদলি করছে। ক্ষমতা আছে করছে, বামফ্রন্টের আমলে শেষ পে কমিশন ৬ মাসের মধ্যে সুপারিশ ও ১৫ দিনে কার্যকরী হয়েছে। আগামীকাল সারা রাজ্য জুড়ে অফিসে অফিসে টিফিনের সময় বিক্ষোভ কর্মসূচি নেওয়া হবে। দলমত নির্বিশেষে সব কর্মচারীদের অধিকার রক্ষার লড়াইয়ে শামিল হওয়ার আহ্বান করছি। রাজ্য সরকারকে ধিক্কার জানাচ্ছি ও শ্বেতপত্র প্রকাশের দাবি জানাচ্ছি।


– বিজয়শঙ্কর সিনহা, কো-অর্ডিনেশন কমিটি

এটা একটা দেউলিয়া সরকার – এই দেউলিয়া সরকারের পক্ষে রাজ্য সরকারি কর্মচারী বা রাজ্যের শিক্ষকদের প্রাপ্য দেওয়ার ক্ষমতাই নেই। ফলে, আগামীদিনে এই সরকারের পরিবর্তন হয়ে যে সরকার আসবে এবং এই দেউলিয়াপনাকে দূর করতে পারবে – সেই সরকারই আমাদের প্রাপ্য দিতে পারবে। তবে, কবে এই সরকারের পরিবর্তন হবে বা তার পরিবর্তে কে আসবে – এসবের জন্য আমরা বসে থাকতে পারি না। তাই, আমরা পে কমিশনকে সামনে রেখে বাম বা বিজেপি মনোভাবাপন্ন সমস্ত সংগঠনকে সঙ্গে নিয়ে আমরা পথে নেমে লড়াই করব। সদ্যসমাপ্ত লোকসভা নির্বাচনে ৪২ টি লোকসভা আসনের মধ্যে ৪১ টি আসনেই রাজ্য সরকারি কর্মচারীরা বিদ্রোহ ঘোষণা করে দিয়েছে, এনে ফেলেছে এই সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা। আমাদের সংগঠনের তরফে গোপনে এই বিদ্রোহ যাঁরা করেছেন তাঁদের এবার রাস্তায় নামিয়ে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে পে কমিশন ও রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে যতদূর লড়াই করা যায় আমরা করব।


– সুবীর সাহা, কনফেডারেশন অফ স্টেট গভর্নমেন্ট এমপ্লয়ীজ

বাম মনোভাপন্ন সরকারি কর্মচারীদের কাছে রাজ্য সরকারের এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাশিতই ছিল। কেননা বৃহত্তর নির্বাচনের সাথে সরকারি কর্মচারীদের কোনো লেনা-দেনা নেই, ফলে মানসিকভাবে আমরা এর জন্য প্রস্তুত ছিলাম। আর সেই কারণেই আগামীকাল সকল বাম মনোভাবাপন্ন সংগঠনগুলি পে কমিশনের সামনে বিক্ষোভে শামিল হবে। এছাড়াও, আগামীদিনে দলমত নির্বিশেষে সকল সরকারি কর্মচারী সংগঠনকে আমরা আহ্বান জানাবো, যাতে একসাথে নিজেদের দাবি-দাওয়া আদায়ের দাবিতে ঝাঁপিয়ে পড়া যায়। সাধারণ কর্মচারীদের মধ্যে লোকসভা ভোটের পোস্টাল ব্যালট কাণ্ডের পর কোথাও গিয়ে একটা প্রত্যাশা তৈরী হয়েছিল, কিন্তু আমাদের রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা বলছিল – এই ঘটনার পর প্রতিহিংসা আরও বাড়বে, আর বাস্তবে সেটাই হল। আরও ৭ মাস বাড়ল পে কমিশনের মেয়াদ এবং এই সরকার ক্ষমতায় থাকলে, এরকম আরও কত সহস্র ৬ মাসের গল্প চলবে জানা নেই। এই সরকারের পরিবর্তন হয়ে নতুন সরকার না এলে, সরকারি কর্মচারী বা শিক্ষকরা তাঁদের ন্যায্য পাওনা পাবেন না – এই ব্যাপারে আমরা নিশ্চিত হয়ে গেছি।


– সঙ্কেত চক্রবর্তী, স্টিয়ারিং কমিটি

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!