এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > প্রাথমিক শিক্ষকদের ডিও/বিএলও নিয়ে ‘মুক্তির শেষ প্রহর’ – শুক্রবারেই কি বড় ঘোষণা?

প্রাথমিক শিক্ষকদের ডিও/বিএলও নিয়ে ‘মুক্তির শেষ প্রহর’ – শুক্রবারেই কি বড় ঘোষণা?


রাজ্য-রাজনীতিতে ইতিমধ্যেই ঝড় তুলে দিয়েছে প্রতিবাদী শিক্ষক মইদুল ইসলামের নেতৃত্ত্বে শিক্ষক ঐক্য মুক্ত মঞ্চের, রাজ্যের প্রাথমিক শিক্ষকদের শিক্ষার অঙ্গীকার রক্ষার্থে ডিও, বিএলও বা সুপারভাইজারের ডিউটি থেকে অব্যাহতি দেওয়ার তীব্র লড়াই। দীর্ঘদিন ধরেই রাজ্যের প্রাথমিক শিক্ষকদের দিয়ে যে কাজ করানো হচ্ছিলো তাতে ক্ষোভের পারদ আকাশ ছুঁয়েছিল। আর তাই, শিক্ষার অঙ্গীকার রক্ষার্থে বদ্ধপরিকর মইদুলবাবু এবং শাশ্বত ঘোষ, জয়ন্ত মুখার্জিদের মত তাঁর তরুণ-তুর্কি বাহিনী প্রখ্যাত আইনজীবী বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য্য ও ফিরদৌস শামিমের হাত ধরে সেই লড়াই টেনে নিয়ে গিয়েছিলেন মহামান্য আদালতের দরজায়।

কলকাতা হাইকোর্টের মহামান্য বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী সবদিক বিবেচনা করে মান্যতা দেন মইদুল ইসলামের নেতৃত্ত্বাধীন শিক্ষক ঐক্য মুক্ত মঞ্চের দাবিকেই। এক ঐতিহাসিক রায়ে বিচারপতি চক্রবর্তী জানিয়ে দেন, রাজ্যের প্রাথমিক শিক্ষকদের দিয়ে যে ডিও, বিএলও বা সুপারভাইজারের ডিউটি করানো হচ্ছে তা আইনানুগ নয় এবং এই সংক্রান্ত নির্দেশিকা অবৈধ। কিন্তু মহামান্য আদালতের সেই রায়ের পরেও ‘রায়ের কপি’ হাতে পাওয়া যায় নি – এই অজুহাতে প্রাথমিক শিক্ষকদের দিয়ে সেই একই কাজ করানোর আপ্রাণ চেষ্টা চলছিল প্রশাসনিক কর্তাদের একাংশের তরফে।

গত ৪ ঠা অক্টোবর সেই রায়ের কপি হাতে আসার পরেও – প্রশাসনিক কর্তাদের একাংশ এক অদ্ভুত যুক্তি সামনে নিয়ে আসেন – তাঁরা জানান, এই রায় শুধু মূল মামলাকারী সুতন্ত্র হালদারের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। যেখানে আদালতের রায় বলছে – যে এই সংক্রান্ত নির্দেশিকায় ‘অবৈধ’, সেখানে প্রশাসনিক কর্তারা কি করে এই কথা বলেন? এই প্রশ্ন উঠে গিয়েছিল রাজ্যের শিক্ষক মহলে। আর তাই, অসুস্থ শরীরেও এই নিয়ে কাল ‘অন্তিম মহাযুদ্ধের’ ডাক দিয়েছিলেন শিক্ষক ঐক্য মুক্ত মঞ্চের মূল স্থপতি মইদুল ইসলাম। রাজ্যের শিক্ষকদের এই সংক্রান্ত নিজ নিজ ফাইল নিয়ে তিনি অনুরোধ করেছিলেন রাজ্য নির্বাচন কমিশনের অফিসে পৌঁছে যেতে। সেখানেই সরাসরি রাজ্য নির্বাচন কমিশনের সিইওর সাথে দেখা করে ডেপুটেশনন দেওয়ার পরিকল্পনা করেন তাঁরা।

ফেসবুকের কিছু টেকনিকাল প্রবলেমের জন্য সব খবর আপনাদের কাছে পৌঁছেছে না – তাই আরো খবর পেতে চোখ রাখুন প্রিয়বন্ধু মিডিয়া-তে

এবার থেকে প্রিয় বন্ধুর খবর পড়া আরো সহজ, আমাদের সব খবর সারাদিন হাতের মুঠোয় পেতে যোগ দিন আমাদের হোয়াটস্যাপ গ্রূপে – ক্লিক করুন এই লিঙ্কে

দুপুর ২ টোয় সেই ডেপুটেশন দিতে রাজ্য নির্বাচন কমিশনের সামনে শিক্ষক ঐক্য মুক্ত মঞ্চের প্রতিনিধিরা পৌঁছালে জানা যায় রাজ্য নির্বাচন কমিশনের সিইও নেই। আর তা জেনেই হ্যান্ডমাইকে রীতিমত ঝড় তুললেন মইদুল ইসলাম – হাতে তখনো স্যালাইনের চ্যানেল করা, অসুস্থ শরীরে দাঁড়িয়ে থাকতে রীতিমত কষ্ট হচ্ছে স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে। প্রসঙ্গত, শিক্ষার অঙ্গীকার রক্ষার্থে মরিয়া মইদুলবাবু ইসলামপুর থেকে নামখানা যেখানেই শিক্ষক বা শিক্ষার উপর প্রশাসনিক বা রাজনৈতিক আঘাত নেমে এসেছে, ছুটে গেছেন – আর তারফলে প্রচন্ড অসুস্থ হয়ে পড়েন। বেশ কয়েকদিন তাঁকে হাসপাতালেও থাকতে হয়, আর তারই জেরে এইভাবে হাতে স্যালাইনের চ্যানেল নিয়ে এখনো ঘুরতে হচ্ছে তাঁকে।

শরীর অসুস্থ হলেও তাঁর মনের জোর যে কতটা তা তাঁর পরিশীলিত অথচ তীক্ষ্ন বাক্যবানে ঝড় তুলে বুঝিয়ে দিলেন তিনি। তাঁর বক্তব্যের রেশ ধরেই তাঁর তরুণ-তুর্কিরাও রাজ্যের প্রাথমিক শিক্ষকদের কিভাবে এই ডিও, বিএলও বা সুপারভাইজারের ডিউটি নিয়ে অসুবিধায় পড়তে হচ্ছে বা হেনস্থা হতে হচ্ছে তা একে একে তুলে ধরলেন। আর তারপরেই চূড়ান্ত চমক – শিক্ষক ঐক্য মুক্ত মঞ্চের ডেপুটেশন হলেও সেখানে নিজের সমর্থন নিয়ে উপস্থিত হন সরকারি কর্মচারী পরিষদের আহ্বায়ক দেবাশিস শীল। তিনি রাজ্যজুড়ে শিক্ষকদের হেনস্থার কথা তুলে ধরার পাশাপাশি ডিএ নিয়েও কিভাবে প্রতিপদে রাজ্য সরকারের কাছে রাজ্য সরকারি কর্মীদের বঞ্চিত হতে হচ্ছে তা তুলে ধরেন। তুলে ধরেন রাজ্য সরকারের ‘বদলি-সন্ত্রাসের’ কথাও।

আর এরপরেই মইদুল ইসলাম, দেবাশিস শীল সহ এক তিন সদস্যের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে আলোচনায় বসেন রাজ্য নির্বাচন কমিশনের সহকারী-সিইও। তিনি মইদুলবাবুদের ডেপুটেশন গ্রহণ করে জানিয়ে দেন, সিইও আপাতত শহরের বাইরে। তিনি ফিরলেই এই নিয়ে আপৎকালীন এক বৈঠকে বসবেন তাঁরা এবং আদালতের রায়ের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে এই নিয়ে নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে দেবেন। ফলে, চূড়ান্তরূপে সফল হয়েছে শিক্ষক ঐক্য মুক্ত মঞ্চের এই ডেপুটেশন কর্মসূচি বলেই মনে করছেন সংশ্লিষ্ট মহল। সবথেকে বড়কথা, এই আলোচনার ভিত্তিতে মনে করা হচ্ছে এই সংক্রান্ত সঠিক নির্দেশিকা আগামী শুক্রবারেই সামনে আসতে পারে – যার পরে রাজ্যের শিক্ষকরা নিজ নিজ শিক্ষাঙ্গনে শুধুমাত্র শিক্ষা সংক্রান্ত বিষয়েই মনোনিবেশ করতে পারবেন।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!