এখন পড়ছেন
হোম > বিশেষ খবর > মুখ্যমন্ত্রীর বেতন বৃদ্ধির ঘোষণা নিয়ে কি বলছেন রাজ্য সরকারি কর্মচারীরা

মুখ্যমন্ত্রীর বেতন বৃদ্ধির ঘোষণা নিয়ে কি বলছেন রাজ্য সরকারি কর্মচারীরা

গতকাল নজরুল মঞ্চে বঙ্গবিভূষণ-বঙ্গভূষণ পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠান থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সিভিক ভলান্টিয়ার, আশা কর্মী ও আইসিডিসি কর্মীদের বেতন বৃদ্ধির কথা ঘোষণা করেন। কিন্তু তার সঙ্গেই তাৎপর্যপূর্ণভাবে বলেন, সরকারি কর্মীদের প্রতি আমাদের যে প্রতিশ্রুতি রয়েছে তা আমরা পালন করব।পুজোর আগে ওটা হয়ে যাবে। প্রসঙ্গত, ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বর মাসে রাজ্য সরকারি কর্মীদের ১৫% ডিএ বৃদ্ধির ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, ২০১৯ সালের মধ্যে যাবতীয় বকেয়া ডিএ তাঁর সরকার মিটিয়ে দেবে। আর তাই গতকাল মুখ্যমন্ত্রী রাজ্য সরকারি কর্মীদের বেতন না ডিএ নাকি দুটোই – কি হতে চলেছে তা বিস্তারিতভাবে না জানানোয়, তাঁর ঘোষণার পর কি ভাবছেন রাজ্য সরকারি কর্মচারীরা তা জানার জন্য আমরা যোগাযোগ করি সরকারি কর্মচারী পরিষদের আহ্বায়ক দেবাশিস শীলের সঙ্গে।

এই প্রসঙ্গে দেবাশিসবাবু নিজের প্রতিক্রিয়ায় বলেন, মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণা আসলে রাজ্য-রাজনীতি ও নির্বাচনের দিকে তাকিয়ে এক ‘চমক’ ছাড়া আর কিছুই নয়। পঞ্চায়েত নির্বাচনে ভোটকর্মী হিসাবে সরকারি কর্মচারীরা যে আতঙ্কিত তা জানিয়ে আমরা কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করেছিলাম। কিন্তু রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্ত জানিয়ে দেন, কারারক্ষী, বনরক্ষী, আবগারি দপ্তরের সশস্ত্র বাহিনী, রাজ্যের সশস্ত্র বাহিনী ও সিভিক ভলান্টিয়ার দিয়ে একদফায় নির্বাচন হবে। রাজ্য নির্বাচন কমিশনও সেই সুরক্ষা যথাযথ বলে মেনে নেন, কিন্তু তা যে যথাযথ ছিল না আমার ভাই রাজকুমার রায়ের করুন পরিণতিই তার সাক্ষ্য দিচ্ছে। রাজকুমার রায় হয়তো নিজের প্রাণ দিয়ে প্রমান করলেন পঞ্চায়েতের নিরাপত্তা কেমন ছিল, কিন্তু তার সঙ্গে সঙ্গেই এরকম অনেক রাজকুমার রায় হতে হতে অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচেছেন অগুনতি সরকারি কর্মী। ভোটগ্রহণ ও ভোটগণনার দিন শারীরিক ও মানসিক যে নিপীড়নের শিকার হতে হয়েছে সরকারি কর্মচারীদের, তারফলে তাঁরা এখন ক্ষোভে ফুঁসছেন, আর সেটা বুঝেই তাতে প্রলেপ দিতেই মুখ্যমন্ত্রীর এই ‘চমক’।

দেবাশিসবাবু আরো বলেন, পঞ্চায়েত মামলা নিয়ে ব্যস্ত থাকায় রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল ব্যস্ত থাকায় কলকাতা হাইকোর্টে ডিএ মামলার শুনানি হল না, নাহলে এতদিনে সেই মামলার রায় বেরিয়ে যেত। ভারতবর্ষের বেশিরভাগ রাজ্যেই কেন্দ্রীয়হারে বেতন দেওয়া হলেও, বাংলায় রাজ্য সরকার সরকারি কর্মীদের বঞ্চনা করে যাচ্ছেন। সেই ডিএ মামলায় নিশ্চিত হার বুঝেই আগেভাগে মুখরক্ষা করতে মুখ্যমন্ত্রী গতকাল ওই কথাগুলি হাওয়ায় ভাসিয়ে দিলেন। আমাদের বিশ্বাস আদালত মানবিক রায় দেবেন, আর তারফলে পুজোর অনেক আগেই মুখ্যমন্ত্রীকে রাজ্য সরকারি কর্মীদের পাওনা বকেয়া মিটিয়ে দিতে হবে। দেবাশিসবাবু এরপরে যোগ করেন, আগামী বছর লোকসভা নির্বাচন, ভোটের ঢাকে কাঠি পরে যাবে নভেম্বর-ডিসেম্বর মাসেই। তখন আর কোনো ঘোষণা করতে পারবেন না মুখ্যমন্ত্রী। এদিকে একে এতদিনের বেতন ও ডিএ নিয়ে সরকারি কর্মীদের বঞ্চনা, তার উপরে পঞ্চায়েতে ভোটকর্মীদের উপর যে মানসিক ও শারীরিক নিপীড়ন হল – তাতে হাওয়া উল্টো দিকে বইতে শুরু করেছে। আর সরকারি কর্মচারীদের ক্ষোভ যে কি বস্তু তা উনি পঞ্চায়েতেই ভালোই টের পেয়েছেন। এই পুঞ্জীভূত ক্ষোভের যে গণবিস্ফোরণ আগামী লোকসভা নির্বাচনে ওনাকে দেখতে হবে তা আগাম আন্দাজ করেই উনি তাতে ‘মলমের’ ব্যবস্থা করছেন। কিন্তু এতো কোনো দয়ার দান না – রীতিমত সরকারি কর্মীদের হকের পাওনা, আর তাই সরকারি কর্মচারীদের বকেয়া কেন্দ্রীয়হারে বেতন ও ডিএ না মেটানো পর্যন্ত আমরা আন্দোলন চালিয়েই যাবো।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!